চট্টগ্রামে গণপরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি, ক্যাবের ক্ষোভ

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘটের প্রথম দিনে তীব্র গরম ও পরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারিরা। এই ধর্মঘটকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তা প্রতাহারের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
ধর্মঘটের প্রতিবাদে এক বিবৃতিতে ক্যাব চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গণপরিবহন, শ্রমিক ও মালিকরা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বারংবার দেশের জনগনকে জিম্মি করে দাবি আদায় করার কারনে তারা বেপরোয়া হয়ে গণপরিবহনের লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়ী চালিয়ে মানুষ হত্যা করবে আর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার করতে চাইলেই মানুষকে জিম্মি করে ঘর্মঘট ডাকবে এটা নিছক বর্বরতা ছাড়া কিছুই নয়। তারা যদি আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাসী হয় তাহলে আইনগতভাবেই তাদের বিরুদ্ধে কোন অন্যায় হয়ে থাকলে তার প্রতিকার চাইতে পারতো। একই সাথে নিরাপদ গণপরিবহনের দাবিতে চুয়েট শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান এই পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘটকে অবৈধ ধর্মঘট আখ্যা দিয়ে রোববার (২৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, মো. সেলিম জাহাঙ্গীর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান এমন মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বা অন্য যারা এই ব্যবসার সাথে জড়িত সবাই সরকারি দলের নেতা বা কর্মী। আর তাঁরাই বিভিন্ন সময়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের জন্য জনগনকে বারবার জিম্মি করেন। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। সরকার দলীয় নেতা/কর্মী হিসাবে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় এধরনের কর্মকান্ড থেকে তাদের বিরত থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিনিয়তই সড়ক দূর্ঘটনার কারণে যে সমস্ত মূল্যবান জীবন হারিয়ে যাচ্ছে, তার ক্ষতিপূরণ কি কোনভাবেই সম্ভব? অথচ তারা অদক্ষ চালক, লাইনেসন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ী চালানো বন্ধ করলে এমন ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। আর এই চিহ্নিত স্বার্থান্বেষী মহল গণপরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টি, নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদবাজি অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে জিম্মিকরে বারবার এ ধরণের ষডযন্ত্রমুলক কাজে জড়িত হলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারনে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এই মহলটি জনগণের বহুল প্রত্যাশিত নতুন সড়ক পরিবহন আইন সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়িয়ে আইন বাস্তাবায়নে বাধা দিচ্ছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে প্রণোদনা দেবার কারনে তাঁরা বারবার জনগনকে জিম্মি করে এ ধরনের অবৈধ ধর্মঘট ও কর্মবিরতি আহবানসহ আইন প্রয়োগে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে বারবার বাঁধা দিলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুরস্কার হিসাবে তাদেরকে মন্ত্রী, এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা বানাচ্ছে আর এ খাতে অন্যতম অংশীজন ভোক্তারা কোন প্রণোদনাতো দূরের কথা আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্যও হতে পারছে না। ফলে সড়কে নৈরাজ্য থামছে না। সড়ক পরিবহন খাতে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের বেলায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই মিলে তাদের মতো করে যাবতীয় নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারন জনগনকে। বিএরআটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া কঠিন, কারন সবকিছুর ওপর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই রাজত্ব করছে। সড়ক পরিবহন খাতে নৈরাজ্য থামাতে হলে ভোক্তা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সম অংশগ্রহন নিশ্চিত জরুরি।
গণপরিবহন সেক্টরে যেকোন দাবি-দাওয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, একশ্রেণীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা আইন প্রয়োগের আগেই আইন সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও ভীতি সৃষ্টি করে পরিবহন সেক্টর উত্তপ্ত করছে। দাবি আদায়ের নামে জনগনকে জিম্মি করে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দেশকে অচল করার ষড়যন্ত্র থেকে বেড়িয়ে এসে জরুরী ভিত্তিতে কর্মবিরতির নামে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহবান জানান।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)এর বাস দুর্ঘটনায় ছাত্র নিহত হবার প্রতিবাদে ছাত্র/ছাত্রীদের আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বাসে আগুন দেওয়া, লাইনম্যান এবং পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, মুক্তিসহ চার দাবিতে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা মালিক সমিতি কার্যালয়ে গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের জরুরি সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।
এর আগে ২২ এপ্রিল কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে দুর্ঘটনায় চুয়েটের ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এতে আহত হন আরও এক শিক্ষার্থী। এই ঘটনার প্রতিবাদে টানা চারদিন সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীরা। এতে ৩টি বাস পুড়িয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন শ্রমিকেরা।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট নেতাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একইসঙ্গে মোটরসাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না- এসব বিষয় তদন্তে কমিটি গঠন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম

রৌমারী কিসমত উল্লাহ বালাজান কৃষি ও কারিগরি ইনস্টিটিউ কলেজটির অনিয়ম তদন্ত কমিটি গঠন

যশোরে ৮ কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ আটক-৩

কুড়িগ্রাম জেলা শহরের সড়ক খানাখন্দে ভরে থাকায় দুর্ভোগে পথচারী,যানবাহনের চালকরা

ত্রিশালে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

বাকেরগঞ্জে মাদ্রাসা ও কারিগরি অধিদপ্তরের সচিবের মতবিনিময় সভা

বার বার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ: বিএনপি নেতা বাচ্চু

তারাগঞ্জে গাঁজাসহ নারী আটক

দুমকীতে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বিতর্ক,ক্ষোভে সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ নেতার পদত্যাগ

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদা দাবীর অভিযোগ

জয়পুরহাট ০১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬, জামায়াতের ১জন

কিসমত উল্লাহ বালাজান কৃষি ও কারিগড়ি ইন্সটিটিউট এর সংবাদ সম্মেলন

বোদায় পুকুর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
