কথার কথা
ভাই আপনি এত কথা লিখেন কখন ?

আমার লেখার এক ভক্ত "কথার কথা" জিজ্ঞাসা করছিলেন, "কামাল ভাই" আপনি এত কথা লিখেন কখন? আপনার লেখা গ্রন্থের প্রায় নাম কথা, বাঁকা কথা, নারী কথা, টকটক কথা, সমকথা, তাহাদের কথা, কর্ণফুলি কথা, ঠাট্টা কথা, কথার কথা। শুধু সম্ভবত বাংলাদেশে নির্বাচন ও নির্বাচনী তথ্য-উপাত্ত এবং পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশ, নির্মম নিয়তি ও মেঘের বুকে জল গ্রন্থসমূহ কথা ব্যতীত। আমাদের ধারণা আপনি অবশিষ্ট গ্রন্থও কথা নাম দিয়ে শেষ করবেন। হয়তো আপনার শেষের গ্রন্থের নাম "শেষের কথা" হবে। সুপ্রিয় পাঠক আমার একান্ত ভক্ত তার "কথার কথা" প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য খুবই কঠিন হয়েছে। ঐ ভক্তের কথা খুবই সত্যি আমি লিখি কখন! আমার লিখার সময় কোথায়? সারাদিন প্রচণ্ড কাজের মধ্যে ব্যস্ত সময় কাটাই। পারিবারিক কাজ হতে শুরু করে সাংগঠনিক এবং সামাজিক কাজ নিয়ে থাকতে হয়। তবুও তার "কথার কথা" উত্তর আমার প্রিয় লেখক "শিবরাম চক্রবর্তী"র লেখার সাহায্য নিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মাত্র। শিবরামের এক অনুরাগী একবার জানতে চেয়েছিলেন সারাদিন তিনি কীভাবে কাটান, লেখেনই বা কখন। জবাবে এক শিবরামীয় বর্ণনা প্রশ্নকারী শুনতে পেয়েছিলেন। সারা দিন-রাতের রুটিন শিবরাম এভাবে জানিয়ে ছিলেন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে শুয়ে শুয়ে তিনি একটু বিশ্রাম করেন। তারপর হাতমুখ ধুয়ে চা-জলখাবার খেয়ে আবার শুয়ে পড়েন। দুপুরবেলা কষ্টে সৃষ্টে উঠে টানটান করে খাওয়া সারেন। দ্বিপ্রহরিক আহারের পর ভাতঘুম তো বাঙালির ন্যায্য পাওনা। দুপুরে তাই ভাতঘুমে থাকেন। বিকেলে চা-জলখাবারের পর ভাবেন কোথায়- বা যাবেন বরং শুয়েই থাকি। রাতের বেলার খাওয়া সেরে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। এভাবেই কাটে তাঁর দিনগুলো। বিস্মৃত প্রশ্নকারী তখন জানতে চান তা হলে তিনি লেখেন কখন! নির্বিকার শিবরাম জানালেন, 'কেন, পরের দিন!' 'কথার কথা' পরিপ্রেক্ষিতে মনে হয় শিবরামের রচনাবলি খুবই শীর্ণ এবং অত্যন্ত অনিচ্ছা নিয়ে লেখা। কিন্তু তাঁর রচিত গ্রন্থপঞ্জির দিকে তাকালে পাঠক দ্রুত বিপরীত সত্যে পৌছবেন (সঙ্গে শিবরামের লেখা বইয়ের তালিকা দেওয়া হল ঐ প্রশ্নকারীকে)। তাঁর রচনার বহুলতা সকলকে বিস্মিত করবে। পাঠক, দেখতে পাবেন আমাদের অনেক স্বনামধন্য লেখকের তুলনায় তিনি কিন্তু কম লেখেননি। তাহলে তিনি এরকম বললেন কেন? একি শুধু মজা? পুরো রচনাটি কি কেবল শিবরামীয় রসিকতা? মজা তিনি ভালোবাসতেন অবশ্যই। মজা করতেন নিজেকে নিয়ে, অপরকে নিয়েও। সেই মজার মধ্যে কখনো বা মিশে যেত ব্যঙ্গ তীব্র তিক্ততা। পাঠক, মাফ করবেন আমার মত ক্ষুদ্র লেখকের হিমালয় পাহাড় সমান জনপ্রিয় লেখক শিবরাম চক্রবর্তী মহোদয়ের সঙ্গে তুলনা হয় না। আমার 'কথার কথা' 'বাঁকাকথা'র পাঠকের সোজা কথার উত্তর দিতে গিয়ে আমি পথ হারিয়ে শিবরাম চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হয়েছি। পুলিশ কখন ঘুষ খায়, মাছ কখন পানি খায় যেমন বোঝা যায় না, তেমনি একজন লেখক কখন লিখে তা লেখক ব্যতীত অন্য কেউ জানে না এবং বোঝে না। প্রতিদিন সংবাদপত্রের বদৌলতে আমরা কতজন প্রিয় লেখকের লেখা পাচ্ছি। ঐ লেখাগুলো আমরা দেখে শুনে পাঠ করছি। কিন্তু ঐ লেখক লেখাসমূহ কখন লিখে তা সবাই দেখে না-এটাই চিরসত্য। আমারও এভাবে লেখা সৃষ্টি হয়। "কথার কথা" গ্রন্থে অনেক প্রবন্ধ আছে। কথার কথা বলতে বলতে লিখেছি। মাফ করবেন, আমি কিন্তু লেখক নই, আমি একজন পাঠক এবং লেখার তথ্য-উপাত্ত খাদক। অন্যদিকে নেশাগত ভিক্ষুক প্রতিনিয়ত ইতিহাস ভিক্ষা করে বেড়ায়। আমার বাসা ও অফিস ছোটখাটো গ্রন্থাগার। আমার ব্যক্তিগত অভিরুচি প্রতিনিয়ত ভালো লেখকের বই কেনা কিন্তু টাকা পয়সা অপচয় করা নয়। বইকেনা ও পাঠকরা হচ্ছে জ্ঞান বিনিয়োগ করা। "কথার কথা" আমি একটু বেশি কথা বলে ফেলছি। সম্ভবত, পাঠকসমাজ ক্ষমা করবেন। এবারের "কথার কথা" গ্রন্থে আমি পাঠকদের কাছে হয়তো ভালো কিছু কথা পৌছাতে পারব না। তবুও "কথার কথা" আমি বক্ বক্ করে সমকালীন যেসব কথাসমূহ আমার কলমের মুখ দিয়ে বলার চেষ্টা করেছি। সব কথাগুলো কেন "কথার কথা" হিসেবে কথা বলার চেষ্টা করেছি আমার মনের কথাসমূহ তা খুলে বলার চেষ্টা মাত্র। প্রতিটি কথার মাঝে "লতাজড়িত" কথা আর লতা এক না হলেও কিন্তু কথামালা গাঁথা যাবে না। অনেকে বলেন কথার অপর নাম লতা। প্রতিটি মানুষের চলমান জীবনের অনেক ঘটনার না বলা বহু কথা মনের ভিতর গেঁথে থাকে। সমস্যায় জর্জরিত হাজারও প্রশ্নের কথা প্রকাশ্য বলার চেষ্টা করেও কেউ কেউ বলতে পারে না। আমার মতো বেশি কথা বলার মানুষরা সম্ভবত সরাসরি বলতে পারে। তেমনি আমার জানামতে যা জেনেছি, যা দেখেছি, যা শুনেছি বিশেষ করে ইতিহাস বিষয় লেখার চেষ্টা করছি। আমার প্রতিটি লেখার অংশবিশেষ কথার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
পরকীয়া: আপন মানুষ ঘর ছেড়ে পরের সাথে যে প্রেম করে তাকে পরকীয়া প্রেম বলে বে-রসিক মানুষেরা। পরকীয়া অচলার প্রেম অবশ্য কোনো নতুন বা আধুনিক ব্যাপার নয়। যেদিন থেকে বিবাহ নামক প্রাচীন প্রতিষ্ঠানটির সূচনা হয়েছে তারপর দিন থেকে পরকীয়া শুরু। আমার কথার কথা হলো আপন মনে গোপন প্রেম করেন, একে অপরের আপনজন নিয়ে ঘর করেন, কোনও সমস্যা নেই। কোনো সমস্যা হলে বিবাহিতা বিয়ে করার ঘরের ঘরণী বা বরণীর অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা করুন। কথার কথাতে ভিক্ষার কথা লিখতে গিয়ে ভিক্ষা বিষয় অনেক কথা লিখলাম। ভিক্ষা পেশা একটি কুরুচিপূর্ণ পেশা। কথার কথা বলতে গেলে বলতে হয় ভিক্ষা পেশা এখন কোন কোন ভিক্ষুকের নেশায় পরিণত হয়েছে। এমনি কথা বেশি বলা হচ্ছে অন্যদিকে আবার গলাবাজি। সত্যিকথা বলতে আমি নিজেই একজন গলাবাজ। রাস্তাঘাটে, হাটবাজারে গলা ফাটিয়ে অনেক গলাবাজি করেছি। তবে এখন গলাবাজিটা কলমবাজিতে পরিণত করে 'কথার কথা' হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। বিদ্যা থেকে বিদ্বান, শিক্ষা থেকে শিক্ষিত তবে কথার কথা বলতে অতবেশি বিদ্বান ও শিক্ষার প্রয়োজন নেই। ইচ্ছা করলে যে কেউ আমার মতো কথার কথা বিরতিহীন বলে যেতে পারবে। তবে সাবধান পচা ডিম মাথায় পড়ার সম্ভাবনা আছে। কথার কথাতে সংবাদ ও সাহিত্য বিষয় বলতে আমার খুব লজ্জাবোধ হয়। কারণ সংবাদ সাহিত্যের পণ্ডিতদের সামনে আমার মতো লেখাপড়া কম জানা মানুষ কথার কথা সংবাদ সাহিত্য এবং সংবাদপত্র বা সাংবাদিক বিষয়ে লেখার সাহস আমার নেই। 'কথার কথা' বলতে গিয়ে কত লক্ষ কথার কোটি কোটি ভুল করেছি, সেই ভুলের মাশুল লিখতে বসে জীবনের অজানা ভুলের কথা মনে পড়লো। পৃথিবীর এমন কোন মানুষ নেই আমার মতো এত বেশি ভুল করেছে। কথার কথাতে আবারও খারাপ কথা বলতে ও গিলতে হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। জীবনে কত পরিমাণ শুভ বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি তার সঠিক হিসাব আমার কাছে না থাকলেও কিন্তু আমন্ত্রণপক্ষের নিশ্চয় মনে আছে। আমার পরিষ্কারভাবে মনে আছে ঐসব বিবাহ বিচ্ছেদ অনুষ্ঠানের কথা যে অনুষ্ঠানে বিবাহ বিচ্ছেদ বেদনা আমি খুবই মজা করে আনন্দ উপভোগ করেছিলাম। কথার কথা আমরা অনেক কথা বলি। বিশ্বকাপ বনাম নিঃস্বকাপ, ম্যারাডোনা বনাম পেলে এবং বর্তমান যেসব ছেলে মেয়েরা মাঠ ছাড়া খেলা খেলে তাদের জন্য নিশ্চয় বিশ্বকাপ বনাম নিঃস্বকাপ। কথার কথা আমি অনেক সময় ঘুমেও বলে থাকি। তবে ঐ কথা এই কথা নয়। এই কথা হলো স্বপ্নের কথার কথা। ঈদ মুসলমানদের মিলন উৎসব সবাই জানে এবং বুঝে। আমি আবার নতুনভাবে কথার কথা বলে শুধু শুধু ঈদপ্রেমিদেরকে বিরক্ত করছি। ঈদে সর্বক্ষেত্রে উপঢৌকন বিড়ম্বনার শিকার প্রতিটি মানুষ। তার মধ্যে আমি নিজেই ঈদের সালামি দিতে দিতে আমার ঈদের আনন্দ পানি হয়ে যায়। আবারও পুলিশ! যানবাহন নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা এটি নতুন কিছু নয়। কথার কথা বেশি কথা বললে যানবাহন একেবারে আপনার আমার প্রাণ কেড়ে নেবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলার নারীর ভূমিকা ছিল অন্যতম। কিন্তু ঐ কথাকে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা কথার কথা বলে বাস্তবে স্বীকার করে না। কথার কথা নয় সত্যি কথা বলছি, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সেয়ানা অভিযানের কথা। পুলিশের লেখা শেষ করতে চাইলেও শেষ হয় না। কোনও এক আইনের লোক পুলিশ কথার কথাতে বে-আইনি কথা বলেছিল। প্রতিদিন কত জন কত ধরনের কথার কথা বলে থাকেন তার হিসাব দেওয়া সম্ভব নয়। চোরের মায়ের বড় গলা, কথার কথাতে টিআইবি বাংলাদেশের দুর্নীতির তালিকা প্রকাশ করে একেবারে মিথ্যা সব কথার কথা। কি আর বলব ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানী উপস্থিত না থাকার বিষয়টি ভারতের কথার কথা ষড়যন্ত্র। তবে সম্ভবত ওসমানী সাহেব কথার কথাতে উপস্থিত থাকতে পারবেনা বলেছিল। বইমেলাতে আমাদের লেখকদের বহু বই প্রকাশ পায়। তবে অনেক লেখকরা কথার
কথাতে বলতে শুনেছি বইমেলাতে প্রকাশকরা লেখকদেরকে নিয়ে খেলা করে থাকেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন অনেকে কথার কথা বলেছিলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তবে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেছিলেন। শপথ করে বলতে পারি এই কথাটি কথার কথা নয়। বিশিষ্ট সাহিত্যিক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার একজন আলোকিত মানুষ। কথার কথাতে আমি পুলিশের কথা বলে ফেলেছি। আমি একেবারে ভুলে গিয়েছিলাম আকাশে যত তারা পুলিশের তত ধারা। পুলিশের আইনের খপ্পরে একবার পড়লে নিস্তার নেই। তাই বলি 'অর্ধেক দেবতা তুমি অর্ধেক পুলিশ'। আমি সব সময় আমার বন্ধুদেরকে পুলিশ বিষয়ে সাবধানের বাণী শুনিয়ে থাকি। ব্যক্তিগত কথা থাক। যাকে দিয়ে আরম্ভ করেছি সেই মহামহিম শিবরাম চক্রবর্তীর প্রসঙ্গে আসি। তিনি তাঁর হাসির গল্পের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে আনন্দে ভরপুর করে দিয়ে গেছেন। শিবরাম চক্রবর্তী লিখেছিলেন শিবরাম চক্রবর্তীর মতো কথা বলার বিপদ। তাঁর নিজের নাম এবং পদবি শিবরাম এবং চক্রবর্তী এই নিয়ে তিনি কত যে শব্দের মজা, কথার খেলা করেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। শিবরামের কথা অত:পর একদিন বিস্তারিতভাবে বলা যাবে। আপাতত কথা বলার বিপদের কথা বলি। নতুন নতুন যখন সাংবাদিকতায় সাংঘাতিকতা করছিলাম তখন আমি এক মধ্যবয়সী অর্ধভদ্রমহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তাঁর স্বামী কর্মরত অবস্থায় বাড়ি ফেরার পথে চোলাই খেয়ে লরি চাপা পড়ে মারা গেছেন। মহানচ্ছার ছিলেন তিনি। কিন্তু আইনগত তাঁর স্ত্রীকে একটি কাজ দিতে হবে। আমি সাংবাদিক হিসেবে খবর পেয়ে ঐ মহিলার পক্ষে সুপারিশ নিয়ে নিহতের উপরস্থ কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলাম। সেই সুবাদে নিয়মমাফিক কর্মকর্তার অনুরোধে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ঐ মহিলাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের কয়টি ছেলে মেয়ে? বিধবা বললেন দুটি ছেলে তিনটি মেয়ে। আমি বললাম একত্রে পাঁচটি? বিধবা বললেন, আমাকে কি কুকুর-বেড়াল ঠাউরেছেন? একত্রে নয়। একজন একজন করে। এক বছর, দেড় বছর বাদে বাদে আমার ছেলেমেয়েরা সব জন্মেছে। আমি হতভম্ব হয়ে বিধবা মহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। সত্যি কথা বলার কী বিপদ! কথার কথা মিথ্যা কথা বলে কথার মারপ্যাঁচে আমি অনেক কথার মার খেয়েছি। জীবনে কত শত বার তা ভোলার মতো নয়। বিশ্ববিখ্যাত রম্যসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর কাছে অনেকেই জানতে চাইতেন, তিনি কোন বই কী অবস্থায় লিখেছেন তা কেউ এরূপ প্রশ্ন করলেই সরাসরি তিনি উত্তর দিয়ে বলতেন, 'দেখো, সুইস মনস্তত্ত্ববিদ
কার্লগুস্তাফ জাং একদা তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, কিছু লোক আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি কীভাবে লিখি। এ ব্যাপারে আমাকে একটা বলতেই হয়, কেউ চাইলে তাঁকে আমরা আমাদের সন্তানসমূহ দেখাতে পারি। কিন্তু তাদেরকে কীভাবে পয়দা করেছি, সেটা অবশ্যই বলতে পছন্দ করি না।
এক বিখ্যাত লেখককে তাঁর বক্তারা জিজ্ঞাসা করেছিল, আপনার কাছে প্রচুর বই, আপনি এত বই পাঠ করেন কখন? প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন বই আমাকে পাঠ করতে ডাকে যখন! অন্য এক পাঠক প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি এত কথা মনে রাখেন কেমন করে? প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, প্রিয় পাঠকদের মাধ্যমে। তবুও আমার বাঁকা কথার স্বভাব থাকাতে আবারও "কথার কথা" লেখালেখি কখন হয় সেই বিষয়ে বিশ্বখ্যাত অনেক কথা বলে ফেললাম। পাঠকগণ, আমার লেখালেখির সময় কোথায় তাঁর গোপন কথা বলেদিলাম। আপনারা কাউকে বলবেন না।
"কথার কথা" এই গ্রন্থের লেখাসমূহ পাঠকদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী, পূর্বকোণ, সুপ্রভাত বাংলাদেশ, সাঙ্গু, সাপ্তাহিক চট্টলা, সময়ের আলো পত্রিকা, সুপ্রভাত রাউজান, শিরোনাম ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় সাপ্তাহিক চাঁটগাসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি জার্নালে এবং সাহিত্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রিয় পাঠক সমাজ, আমার প্রতিটি লেখায় দেশের এবং বিদেশের স্বনামধন্য বহু লেখকের গ্রন্থ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। বিশেষ করে ভারতের প্রয়াত বিশিষ্ট রম্য কথাসাহিত্যিক তারাপদ রায়ের সাহিত্য ভাণ্ডার থেকে অনেক কথা ধারণ করেছি। পাশাপাশি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিবরাম চক্রবর্তী, সুকুমার রায়, সৈয়দ মুজতবা আলী ও সুকান্ত ভট্টাচার্য'র দারস্থ হয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে ঋণী। অনুমতি ব্যতীত তাদের সাহিত্যরস সংযুক্ত করার জন্য তাদের আত্মার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। অন্যদিকে মহান এই কথা সাহিত্যিকদের পাঠককুল যেন আমাকে ভুল না বুঝে আমি তাদের প্রতিও মিনতি করছি।
আমার এই "কথার কথা" গ্রন্থের সকল অসুন্দর কথাসমূহ আমি মাথা পেতে নিয়ে এই বইয়ের সকল সফলতা সব ধরনের মননশীল কথা ঐ স্বনামধন্য বাংলার কথাসাহিত্যিকদের উৎসর্গ করলাম। আবারও বলি ক্ষমা করুন, পাঠক ক্ষমা করুন আমাকে।তবে এখনো আমার প্রতিদিন তিন চারটা লেখা দৈনিক পত্রিকার জন্য লিখতে হয়, অন্য দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নামে পরিচিত ফেইসবুকে লিখতে হয় একাধিক লেখা,একাধিক অনলাইনে ও সাপ্তাহিক এবং মাসিক পত্রিকা এবং ম্যাগাজিনে লেখা দিতে হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিভিন্ন বিষয় নিয়েও লিখতে হয়। বিভিন্ন সেমিনারে বিষয় ভিত্তিক তথ্য নির্ভর প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে হলে তা প্রবন্ধও লিখতে হয়, সব চেয়ে মজার বিষয় হলো আমি যা লিখি তার চেয়ে বেশি পড়তে হয়। বিভিন্ন মিটিং এ বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখতে হলে গবেষণা মুলুক লেখা পড়ে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হয় যেমন তেমনি টেলিভিশনে টকশো সহ বিভিন্ন ডকুমেন্টারি অনুষ্ঠান করার জন্য প্রচুর পরিমাণ পড়াশোনা করতে হয়। বিগত ১৯৮৮ সাল থেকে নিয়মিত লেখা লেখি করে আসছি, সাংবাদিক হিসেবে যেমন
সংবাদ লিখতে হলে তথ্য সংগ্রহ করে লিখেছি, তেমনি একজন লেখক হিসেবেও লেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন লেখককে বই সংগ্রহ পূর্বক মনোযোগ সহকারে বই পাঠের মাধ্যমে নিজেকে লেখার জন্য তৈরি করতে হয়। লেখা- লেখির বিষয়ে আলাপ শেষ হওয়ার নয়, তবুও পাঠক বন্ধুদেরকে সামান্য কিছু ধারণা দেওয়ার জন্য কিছু কথা লিখলাম, এর মধ্য আমার জীবনের সেরা সৃষ্টির মাঝে যা প্রকাশিত হয়েছে , সেই আমার প্রণীত গ্রন্হ সমূহ উল্লেখ করে দিলাম* জানা অজানা কথা * তাহাদের কথা * বঙ্গবন্ধুর কথা * কর্ণফুলী কথা * বাঁকা কথা * সমকালীন কথা * টক্ টক্ কথা
* সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কথা
* আদিবাসী সাহিত্য ও সাংস্কৃতি * রোহিঙ্গাদের ইতি কথা * শোক কথা * মেঘের বুকে জল
* নির্মম নিয়তি * জীবন কথা * কথার মতো কথা * বাংলাদেশ নির্বাচন ও নির্বাচনী তথ্য-উপাত্তন* নারীকথা * কথার কথা * চোর কথা
* সর্বনাশা আগস্ট ও বঙ্গবন্ধু
* চট্টগ্রাম ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা * মনের কথা
* অবশেষে * ঠাট্টা কথা * পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশ * সমকথা * কথা সমগ্র-১ এ ছড়াও বিশিষ্ট ইতিহাসবীদ সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন কতৃক রচিত ও সম্পাদিত বিখ্যাত ইতিহাস ভিত্তিক চারটি দুর্লব বইতে আমার অসাধারণ কিছু লেখা রয়েছে। আরো বহু না বলা লেখা লেখির কথা রয়েছে, তাতে আমার নিজের কাছে নিজের প্রশ্ন আসলে আমি লেখি কখন???
লেখকঃ সাংবাদিক, গবেষক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও মহাসচিব, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।
এমএসএম / এমএসএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন
