ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

প্রকৃতির কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে


মাজেম আলী মলিন photo মাজেম আলী মলিন
প্রকাশিত: ৮-৫-২০২৪ দুপুর ২:২৫

প্রকৃতির কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। কেউ প্রকৃতির ক্ষতি করলে চোখে আঙুল দিয়ে তা যথা সময়ে বুঝিয়ে দেয়। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা, বন্যা, ভূমিকম্প, রোগ-বালাই থেকে শুরু করে সবকিছুর জন্য দায় এড়াতে পারে না। গাছপালা ও পাহাড় কাটা, বন ধ্বংস, কৃত্রিম ক্ষতিকর জিনিস তৈরি সবই পকৃতিকে বিপক্ষে দার করাচ্ছে। প্রকৃতি তার স্বতন্ত্রতা দিয়ে আমাদের রক্ষা করেছে। আর আমরা না বুঝেই সেগুলো ধ্বংস করছি। যার কারণে প্রকৃতি মানুষের ওপর পাল্টা আঘাত করছে। 
প্রতিশোধ একটি মানুষের তৈরি শব্দ। যুগে যুগে আমরা অকারণে প্রকৃতির উপর হাত খেলছি। প্রকৃতি আমাদের সেই অপকর্মের কথা বারবার মনে করিয়ে দিলেও আমরা সেটিও উপলব্ধি করতে  পারছিনা। আমরা স¦ার্থ হাসিলের জন্য সর্বদা প্রকৃতির উপর আধিপত্য বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে পড়েছি। প্রকৃতি আমাদের পথ দেখায়, শিক্ষা দেয় কিন্তু আমাদের অহংবোধের কারণে আমরা নিজস্ব তৈরির ফাঁদে আটকে যাচ্ছি।
প্রকৃতির কাছ থেকে শিক্ষনীয় কিছু উদাহরণ আমরা বাস্তবেই দেখেছি প্রকৃতি যে মানুষের জন্য কাজ করতে চায় সাথে চলতে চায় তা বুঝতে কোন বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় না। বাদুড়ের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী দেড় থেকে দুই ডজন বিভিন্ন প্রজাতির ভাইরাস বহন করে যা মানবদেহের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। আমাদের মানব বিলুপ্তি নীতি অনুযায়ী বাদুড়ের প্রজাতি নির্মূল করা উচিত! কিন্তু প্রকৃতির হিসাব সমাপুর্ণ অন্য রকম। একটি বাদুড়  প্রতি রাতে তার শরীরের ওজনের পোকামাকড় খেতে সক্ষম। এর মধ্যে রয়েছে ডেঙগু, জিকা এবং ম্যালেরিয়া ভাইরাস বহনকারী মশা। এই বাদুড় প্রায় পাঁচশ প্রজাতির উদ্ভিদের পরাগায়ণ করে থকে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর  প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত আমাজন পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। মানুষ কিভাবে নিজেদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে তার একটি উদাহরণ হল আমাজন। কথিত আছে যে প্রতি মিনিটে আমাজনে একটি খেলার মাঠ সমান বনভূমি কাটা হয়। মানুষ বিপজ্জনকভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে, মানুষের জন্য ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে মানুষের হাতে,প্রকৃতির কোনো না কোনো প্রাণ মানুষের লোভের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ার সাথে সাথে আমরা প্রকৃতিকে আবার ' প্রকৃতির প্রতিশোধ' বলে আখ্যায়িত করছি।
অপর দিকে বন্যা আমাদের কাছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুযোগ নামে পরিচিত। প্রায়ই বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে যায়, জীবন ও ফসল নষ্ট হয় এবং দুর্ভোগ চরমে ওঠে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে বন্যা শুধু দুর্ভোগের কারণ নয়। বন্যা পানির সাথে পলিও বহণ করে নিয়ে আসে। সেই উর্বর পলিমাটিতে উপচে পড়া ফসল ঘরে তোলে কৃষক। মাটি তার সারা বছরে ব্যবহৃত রাসায়ানিক সার বিষাক্ত কীটনাষক দুর করে বন্যার পানিতে পরিশুদ্ধ হয়ে স্বরুপে ফিরে আসে।
পরিশেষে যে জিনিসটি ঘটেছে তা হল প্রচন্ড গরম। এ কারণে পৃথিবী উষ্ণ হয়ে উঠেছে এবং পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। ফলে কৃষির চাহিদা সেচের পানি ব্যাহত হচ্ছে। গরমে মাটি ফেটে যাচ্ছে এবং জমি তার উর্বরতা হারাচ্ছে। গো খদ্যের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রচন্ড গরমে উল্টো বরফ গলে পাহার থেকে পানি নেমে এসে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাকৃতিক জ্বালানি ব্যবহার করার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন করে ডেকে আনা হচ্ছে বিপদ।যার কারনে তাপদাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মাত্রা  মানুষ হারাচ্ছে প্রাণ, ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। বাড়ছে খাদ্য সংকট।
সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে প্রকৃতি আরও বিপন্ন হয়ে পড়ছে। অথচ দাবি করা হচ্ছে যে সভ্যতা বিকাশের শীর্ষে পৌঁছেছে। তবে বিপদ শুধু প্রকৃতির নয় মানুষেরও। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে একটা কথা আছে, প্রকৃতি আজ সেই প্রতিশোধ নিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মানুষ আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি বিপন্ন।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন, প্রকৃতিকে উস্কে দেবেন না, কারণ প্রকৃতি বিরূপ হয়ে হয়তো প্রতিশোধ নেবে। বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক প্রবক্তা ডারউইনও সেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন অনেক আগেই ;কিন্তু মানুষ সেসব কথায় কান দেয়নি। 
যাইহোক, মানুষের বুদ্ধি প্রকৃতির একটি মহান উপহার। এর মাধ্যমেই মানুষ তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে নানা ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করে। জীবন একটি দীর্ঘ যাত্রা। এ যাত্রায় নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে মানুষকে এগিয়ে যেতে হবে। আর এই জীবনযাত্রার সবচেয়ে বড় শিক্ষক হল প্রকৃতি। তাই প্রকৃতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। প্রকৃতি সর্বদা মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। 

এমএসএম / এমএসএম

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি

টেকসই উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও বাস্তবতা

গাজায় যুদ্ধের নৃশংসতা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত

বন্ধ হোক অপসাংবাদিকতা

বিভাজনের রাজনীতি দেশের জন্য হুমকি হতে পারে

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি আরব

শারদীয় দুর্গোৎসবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ ভাবনা

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজন পর্যটন গন্তব্যগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং

গণতান্ত্রিক অধিকার ও নতুন নেতৃত্বের অন্বেষণ

দুঃখই সবচেয়ে আপন

জাতিগত নিধন বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা

গণতান্ত্রিক হতে হলে মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখতে হয়