হজ নিবন্ধনের বার্তা

২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকার ২০২৩ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। সরকারিভাবে একটি প্যাকেজই ঘোষণা করা হয়। এর কয়েকদিন পরেই আমাদের মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা এল নিবন্ধন ভাউচার তৈরি করে টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য। সরকারি হাজিদের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সরকারিভাবে নির্ধারিত স্থানে এই ভাউচার তৈরির ব্যবস্থা রাখা হয়। ভাউচার তৈরি করে পুরো টাকা একবারে জমা দিতে হয়। বেসরকারি হাজিদের পক্ষে তাদের ট্রাভেল এজেন্ট বা হজ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি যাবতীয় কাজ করে থাকে। তাদের পুরো টাকা একবারে জমা দিতে হয় না।
নিবন্ধনের জন্য প্রথম শর্ত হলো যথাযথ মেয়াদের পাসপোর্ট। আমরা পাসপোর্ট হাতে নিয়ে দেখি যে মেয়াদ আছে দু মাসের কিছু বেশি। আর সেটা এমআরপি। কাজেই নবায়ন করাতে তথা ই-পাসপোর্ট নিতে হবে নতুন করে। অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করার পর অটোমেটেড চালানে (এ-চালান) এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ছুটলাম আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে। তবে ওখানে একজন কর্মকর্তা পরামর্শ দিলেন সুপার এক্সপ্রেস ফির জন্য বাড়তি টাকা জমা করে আসতে। কাছেই সোনালী ব্যাংকে গিয়ে বাড়তি টাকা জমা দিলাম ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের বিশেষ সহায়তা।
এদিক আমার এ-চালানে নামে টাইপিংয়ের ভুল ছিল। আগের দিন সন্ধ্যায় ওটা সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করি। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যেই ইমেইলে সংশোধিত এ-চালান পেয়ে যাই। সরকারি কাজ এত দ্রুততম সময়ে হবে কি না সন্দিহান ছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে তাও হয়ে গেছে। পাসপোর্ট অফিসে বিকেল পর্যন্ত কাটিয়ে ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিক দেওয়া শেষ করতে পারি। তারপর ক্লান্ত দেহে বাসায় ফিরে আসি। আর তিন দিনের মাথায় খুদে বার্তা আসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার।
পরবর্তীতে অবশ্য মনে হলো যে এত তাড়াহুড়া না করলেও পারতাম। কারণ, হজের টাকা জমা দেওয়ার সময় দুই মাস ধরে কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছিল। পাসপোর্ট পাওয়ার পরের ধাপ হলো টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করা। দুজনের জন্য নগদ ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩০ টাকা বহন করে সোনালী ব্যাংকের শান্তিনগর শাখায় গেলাম জমা দিতে। তার আগে যে নিবন্ধন ভাউচার তৈরি করাতে হবে, সেটা আমি ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। ব্যাংক কর্মকর্তাকে প্রাক-নিবন্ধনে কাগজ দেখানোর পর তিনি বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন। এখানেও আল্লাহর তরফ থেকে রহমত ছিল।
ইস্কাটনে ওয়াক্ফ বোর্ড অফিসে হজের একটা নিবন্ধন কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। আমার সহধর্মিণীকে টাকাসহ ব্যাংকে বসিয়ে রেখে ছুটলাম ওখানে দুজনের পাসপোর্ট নিয়ে। ওখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী ফয়সালের সহায়তায় ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে নিবন্ধন ভাউচার তৈরি করে আবার ব্যাংকে এলাম। ততক্ষণে আমার সহধর্মিণী বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এতগুলো নগদ টাকার ব্যাগসহ একা ব্যাংকে বসে থাকা রীতিমতো উদ্বেগের বটে।
যা হোক, ক্যাশ কাউন্টারে যখন টাকা জমা দিতে গেলাম, তখন একটু বিপত্তি দেখা দিল। আসলে এতগুলো টাকা যার মধ্যে ১০০ টাকার বান্ডিল ছিল কয়েকটি। যে ব্যাংক থেকে আমরা টাকা তুলেছিলাম, ওরা সব টাকা ৫০০ ও ১০০০ টাকার বান্ডিলে দিতে পারেনি। ক্যাশের কর্মকর্তা আসাদ সাহেব তাই কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন। কারণ, এতগুলো টাকা গুনতে অনেক সময় লেগে যায়। আবার আমাদের পেছনে বেশ কয়েকজনকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তবে হজের টাকা জমা দিচ্ছি শুনে সবাই ধৈর্য ধারণ করেন। আসাদ সাহেবও ঠিকঠাক মতো সব টাকা গুণে গুছিয়ে জমা নেন। এভাবে সবাই আমাদের সহযোগিতা করেন।
তবে নগদ জমা দেওয়ার পাশাপাশি যে কোনো ব্যাংক হিসাব থেকে ইলেকট্রনিকভাবে হজের টাকা স্থানান্তরের বিশেষ ব্যবস্থা নিলে নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি পোহাতে হয় না, অতিরিক্ত সময়ও ব্যয় করতে হয় না। বাংলাদেশে যেহেতু ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা চালু আছে, এটাকে কিভাবে এই হজের টাকা জমা দেয়ার জন্য ব্যবহার করা যায়, তা ভেবে দেখা দরকার। তাছাড়া প্রাক-নিবন্ধনের টাকা যেহেতু সোনালী ব্যাংক ছাড়া আরও কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমেও জমা দেওয়া যায়, হজের নিবন্ধনের টাকাও একইভাবে জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অবশ্য সোনালী ব্যাংকে নগদের বদলে চেকের মাধ্যমেও টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তারা এটা করতে উৎসাহ দেন না সম্ভবত প্রক্রিয়াগত কোনো কারণে।
Israt / Israt

কোরআনে কল্যাণের পথে অগ্রগামী বলা হয়েছে যাদের

মন্দ কাজ থেকে নিজেকে বাঁচাবেন যেভাবে

কৃতজ্ঞতা প্রকাশে জীবন-জীবিকার প্রশস্ততা

কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ এসেছে কোরআনের যে আয়াতে

মানুষের ওপর আল্লাহর রহমত নিয়ে যা বলেছেন মসজিদুল হারামের খতিব

পবিত্র আশুরা আজ

আশুরার রোজা কবে-কয়টি রাখতে হবে

কারবালার মর্মান্তিক ইতিহাস ও শিক্ষা

পবিত্র হজ আজ, লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফা

কোরবানির পশু জবেহ করার বিধান

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত মিনা

কুরবানির শিক্ষা গুরুত্ব ও তাৎপর্য
