ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

এলজিইডির বিকল্প ‘চীফ’ তিনি


আলমগীর হোসেন photo আলমগীর হোসেন
প্রকাশিত: ১৬-৫-২০২৪ বিকাল ৫:৩৪

দেশের বেশির ভাগ সরকারি দপ্তরের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কারণে বদনাম হচ্ছে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের। তারা রাজনীতির নাম ভাঙিয়ে দপ্তরগুলোতে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারি আধিপত্য বিস্তার করেছে। কেউ কেউ আবার একাধিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে তটস্থ করে রেখেছে। অনেকেই আবার স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে ছবি তুলে সেই ছবি অফিসে বা বাসায় ঝুঁলিয়ে রেখে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে চান মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে তার চরম সম্পর্ক- তারে ছাড়া তাদের বাঁচা দায়। সে যদি তাদের রাজনীতি না করে তাহলে গদি বাঁচানোই সম্ভব না। ভাব-ভঙ্গিমাতেও এরা অনেক এগিয়ে। যে কারণে সাধারণ মানুষ তাদের কথায় আকৃষ্ট হয় খুব সহজে। চাকরি, বদলি, টেন্ডার পাইয়ে দেয়া তাদের কাছে কোন ব্যাপারই নয়! এখানেই প্রতারিত হয় সাধারণ মানুষ। এভাবে ভুক্তভোগীদের অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন- এদের খপ্পরে পড়ে। কিছু কিছু দপ্তরে কোন ধরনের কর্মচারী ইউনিয়নের অফিস নেই অথবা অনুমতি নেই। তারপরও তারা সে সব দপ্তরের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে দপ্তরগুলোতে একধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। তাদেরই একজন এলজিইডি’র শহিদুল ইসলাম বাবু (হুজুর বাবু)। 

সম্প্রতি সকালের সময়’র অনুসন্ধানী টিম গিয়েছিল তার জাতীয় পরিচয়পত্রে দেয়া ঠিকানায়। সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও মেম্বার জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তারা কেউ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। এমনকি মুক্তারেরচর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা শেখও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, বাবু কেন এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিলে কর্তৃপক্ষের বিষয়টি যাচাই করা উচিত। 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, দপ্তরটি ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে ওয়ার্কস প্রোগ্রাম উইং রাজস্ব বাজেটের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল ব্যুরো (এলজিইবি) রূপে গঠিত হয়। ১৯৯২ সালের আগস্ট মাসে এলজিইবিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়। প্রায় তিন দশকের স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক ভালো মানুষের আগমন যেমন ঘটেছে, তেমনি কিছু দুর্নীতিবাজের আগমনও ঘটেছে। যাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি, বদনামও হয়েছে দপ্তরের। নিজ আখের গোছাতে কোন কৌশলই বাদ দিচ্ছেন না তারা। এবার পাওয়া গেল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) চীপের (প্রধান প্রকৌশলী) ‘বিকল্প চীফ’। নাম শাহিদুল ইসলাম (বাবু), পিতা আব্দুল মোতালেব, গ্রাম শের আলী মাতবর কান্দি, ওয়ার্ড নং-৮, ইউনিয়ন মোক্তারেরচর উপজেলা নড়িয়া, জেলা শরিয়তপুর। পদবী- অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, শ্রেণী-তৃতীয়, গ্রেড-১৬, বেতন সর্বসাকুল্যে ২৬ হাজার ২৭৬ টাকা। অথচ ‘বিকল্প চীফ’ বাবু হাঁকান দামী-গাড়ী, আছে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, নামে-বেনামে জায়গা জমিসহ অনেক কিছু। চলনে-বলনে মনে হবে কোনো রাজা-বাদশা। প্রধান প্রকৌশলীসহ দপ্তরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার হুকুম ছাড়া নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই বলে জানা যায়। কেনইবা যাবে, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি তার ডান হাত! বাবুর কথার বাইরে নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক পা-ও সামনে এগোন না! তিনি বলে বেড়ান ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘বাবু’ না থাকলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পাস করার কোনো সম্ভাবনাই নাকি ছিল না! আপনারা ছবি দেখে বোঝেন না তার মন্ত্রীর সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডির একাধিক ব্যক্তি জানান, নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য বাবু অনেকের গায়ে হাতও তুলেছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে টু-ঁশব্দ করার সাহস পায় না কেউ। বাবু চাকরি করে নামমাত্র। তার মূল কাজ- বদলি, টেন্ডার বাণিজ্য। 

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে বিএনপি-জামায়ত ঘেঁষা এই কর্মচারী বছরের পর বছর আরসিসি ভবন (এলজিইডি)-তে অফিসারদের মতো এলজিইডির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে যাচ্ছে। সামান্য একজন কর্মচারী যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এলজিইডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার কথা না শুনলে সে কথিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়ে অফিসারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের মাধ্যমে জোরপূর্বক বিভিন্ন ধরনের কাজের ফায়দা লুটে নিচ্ছে। নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য ঠিকাদারি কাজের অনৈতিক সুবিধা নিতে সে অফিসারদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করে যাচ্ছে বলে জানা যায়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কর্মচারীদের মামলা পরিচালনা ও চাকরি স্থায়ী করার জন্য সে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। 

সূত্র বলছে, বাবু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হলেও সে যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছে তা জাল। কম্পিউটার সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। এমনকি এলজিইডির ইঞ্জিনিয়াররা সরকারি বরাদ্দের গাড়ি না পেলেও ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ঢাকা মেট্রো-গ ১৫-৪৮১৯ গাড়িটা সে ব্যবহার করে। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে দপ্তরটিতে। তার ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারের বিষয়টি সরকারি প্রটোকলের সঙ্গে যায় না বলেও অনেকে মনে করে।
আর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের সুবিধা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছবি তার ছবির সঙ্গে অফিস কক্ষে টাঙিয়ে বীরদর্পে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে যাচ্ছে জানা যায়। একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তার উপরের বড় বড় কর্মকর্তাদের ভাই সম্বোধন করেও কথা বলতে দেখা গেছে। এলজিইডিতে বৈধ কোনো ট্রেড ইউনিয়ন না থাকলেও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে শহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু এলজিইডির মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকে নানা প্রশ্নের সম্মুখিন করছে। তার মতো এক কর্মচারীর আচরণে পুরো এলজিইডি ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, বাবুর মত সন্ত্রাসী সরকারি চাকরি করার যোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না তা রহস্যজনক। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে একাধিকবার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

 

এমএসএম / এমএসএম

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আইন যেন শুধু খাতা কলমে

প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

গোয়েন্দা প্রধানসহ লুটপাটের অভিযোগে চার কর্মকর্তা ক্লোজড

নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের মানববন্ধনে শাস্তি ও অপসারণ দাবী

সীমাহীন দুর্নীতি,অর্থ আত্মসাত ও সরকারি চাকুরির শৃংখলা ভংগের অভিযোগে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রনজিত দে সাময়িক বরখাস্ত

সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে শ্রমিকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ

রাজউকের ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ

বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ