সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের ৩ যুবকের মৃত্যু
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের তিন যুবক নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন, জেলার হাইমচর উপজেলার চরভাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল ছৈয়ালের ছেলে সাব্বির, তার খালাতো ভাই কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার গাজীর ছেলে রিফাত ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিশকাটাখালী গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে সবুজ। তাদের মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে বইছে শোকের মাতম। পরিবারের রোজগারের একমাত্র সম্বল ছেলেদের জীবিত পাবেনা জেনেও মৃত সন্তানের লাশ নিজ হাতে দাপন করতে চায় পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানাজায়, গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪ টায় সৌদিআরব থেকে ফোন আসে তিন যুবক কাজ করতে যাওয়ার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন। নিহত তিন যুবক সৌদিআরব আল আলাফিপ শহরে থাকতেন। সৌদিআরব সময় সকাল ১০ টায় সবুজ তার নিজস্ব গাড়িতে করে নিজে ড্রাইভিং করে কন্সট্রাকশন কাজ করার উদ্দেশ্যে তাদের নিয়ে রওয়ানা হন। প্রতিমধ্যে গাড়িটির সামনের একটি চাকা খুলে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয়। ঘটনাস্থলে গাড়ির চালক সবুজ মারা যায়। অপর দুই খালাতো ভাই স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু বরণ করেন।
নিহত সাব্বিরের পিতা ইসমাইল ও তার মা জানান, তাদের ছোট ছেলে সাব্বির জীবিকার তাগিদে গত ৪ বছর পূর্বে সৌদিআরবে পাড়ি জামান। তার দুই সন্তানের ছোট ছেলেকে তারা সারাজীবনের জন্য হারিয়ে পেলেছেন। তারা তাদের সন্তানকে জীবিত পাবে না, তবে মৃত সন্তানের লাশ নিজ হাতে দাপন করতে চায় তারা। সন্তানের লাশ দ্রুত তাদের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
নিহত রিপাতের পিতা দেলোয়ার গাজী জানান, তাদের একমাত্র ছেলে রিপাত। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। টাকা পয়সা কিছু চায় না, শুধু ছেলেকে নিজ হাতে দাপন করতে চায়।
নিহত সবুজের পিতা জামাল চৌকিদার জানান, তার ৫ সন্তানের সবার বড় ছেলে সবুজ। তার আয়কৃত টাকায় তার পুরো সংসার চলতো। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়েছে। ৫ বছর যাবত তার সন্তান সৌদিআরবে রয়েছে। সংসারের সকল কিছু সেই দেখতো। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী সবুজ ছিল তাদের কালো মানিক। কালো মানিক সবুজকে তারা কই পাবে কোথায় পাবে। তার লাশ কী তারা দেখতে পাবে কীনা এ ভেবেই আহাজারি করছে তার মা। ছেলের লাশ যেন তারা দেখতে পায় এই আশায় বুকে পাথর বেধেছে তারা।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, সৌদিতে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে আমাদের জানালে তাদের জন্য যেসব করণীয় আছে সব ধরণের সহযোগীতা করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম