মেয়ের পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় সাভারের সাবেক এমপির স্ত্রী খুন: পিবিআই

সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সামছুদ্দোহা খান মজলিশের সহধর্মিনী আলোচিত সেলিমা খান মজলিশ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
খুনের ঘটনার দীর্ঘ ১৩ বছর পর ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে আটকের পর কয়েক দফা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সংস্থাটি। এদের মধ্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে সনাক্ত করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত সেলিমা খান মজলিশের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে শামীমা তাহের পপি (৫৫), প্রতিবেশী ও ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায় (৫০) ও গৃহ-পরিচারিকা আরতি সরকার (৫৮)।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সেলিমা খান মজলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে চলতি বছরের ৩০মে বিকেলে সাভার মডেল থানার সামনে থেকে সন্দেহভাজন সুবল কুমার রায়কে গ্রেফতার করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে রিমান্ডে এসে ৩ জুন আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় সুবল কুমার রায়।
জবানবন্দীতে সুবল কুমার রায় জানায় নিহত সেলিমা খান মজলিশের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপির সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালের ১৪ই জুন সাভার মডেল থানা সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ায় নিহতের নিজ বাসভবনে যায় সুবল কুমার রায়। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকতেন বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ। পরকীয়ার কারণে সুবল রায়ের ওই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশও হয়। ২০০৫ সালে এই কারণে সুবলকে মারধর করা হয়। ২০০৮ সালে সুবল অন্যত্র বিয়ে করেন এরপর দীর্ঘদিন যাতায়াত বন্ধ থাকলেও ২০১১ সালে পুনরায় ওই বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন সুবল। ঘটনার দিন ভোরে সুবলকে বাড়িতে দেখতে পেয়ে নিহত সেলিমা খান মজলিশ উত্তেজিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। সেলিমা খান মজলিশকে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপির সহায়তায় তাকে জোরপূর্বক রান্না ঘরে নিয়ে সেখানে থাকা ফল কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে পরকীয়া প্রেমিক সুবল কুমার রায় নিহতের গলার দুই পাশে তিনটি পোচ মারেন। পরে সেলিমা খান মজলিসের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর মাথার পাশে দেয়ালে থাকা সুইচ বোর্ড খুলে বিদ্যুতায়িত তার দিয়ে ইলেক্ট্রিক শক দেন সুবল রায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির দ্বিতীয় তলার ডাইনিং রুমে প্রতিবন্ধী ছেলে সেতুর কক্ষে খাটের চাদরের উপরে একটি পুরাতন পত্রিকা বিছিয়ে নিহতের মাথার কাছে দুটি বালিশ দিয়ে চাপা দেয় এবং ঘাড়ের নিচে তোষক দিয়ে শুইয়ে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সুবল রায়।
পিবিআই প্রধান বলেন, সুবল কুমার রায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেওয়ার একদিন পর ৪ জুন নিহতের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশ ওরফে পপিকে সাভারের ভাগলপুর এবং গৃহ-পরিচারিকা আরতি সরকারকে পাকিজা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাদের দুজনকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারা দুজনেই এই হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে সুবল কুমার রায় এবং নিহতের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিশের অনৈতিক সম্পর্ক, পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ এবং রাজনৈতিক বিরোধের কারণ খুঁজে পায় পিবিআই। তাদের দেওয়া তথ্য আরো নিবিড় ভাবে পর্যালোচনা করছে তদন্ত সংস্থাটি।
জানা যায়, ২০১১ সালের ১৪ই জুন সাভার মডেল থানা সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ায় নিজ বাসভবনে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন সেলিমা খান মজলিশ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ই জুন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান তিনি। পরদিন ১৫ই জুন (২০১১) বুধবার বিকেলে এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী হন সেলিমা খান মজলিশের ছোটভাই শাফিউর রহমান খান ওরফে শাফি। ১৮ই জুন (২০১১) সেলিমা খান মজলিশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর সাভার মডেল থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান আলোচিত এই হত্যা চেষ্টার মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন।
তবে মামলাটি নানা তদন্ত সংস্থার হাত বদল হলেও শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোনো জট আর খোলেনি।
দীর্ঘ চার বছর তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) হত্যাকাণ্ডে কারও সম্পৃক্ততা না পেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে পরিবারের কেউ নারাজির আবেদন ও করেননি। তাই আদালত মামলার সব নথি সাভার মডেল থানায় পাঠিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়। হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিতে ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর দুই মেয়ে পারভীন খান মজলিশ ও ইলোরা খান মজলিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক আবেদন করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়।
হত্যার বহুদিন কেটে গেলেও অবশেষে ১৩ বছর পর চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশনা পেয়ে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এমএসএম / এমএসএম

গাজীপুর-৩ আসনে আলোচনায় বিএনপির ৪ প্রার্থী, একক প্রার্থী নিয়ে নিশ্চিন্ত অন্য দল

আদালতের দোতলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা হত্যা মামলার আসামির

রায়পুরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পছন্দের শীর্ষে এস এম মামুন মিয়া

চাঁদপুরে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পেয়েছেন ১৯ সাংবাদিক

জুড়ীতে কৃষ্ণনগর বাছিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে উপহার প্রদান

গাছে ঝুলন্ত লাশ, পা মাটিতে-শ্বশুরবাড়ি থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রূপগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশমুখে গোলচত্বর ও ফ্লাইওভারের দাবিতে মানববন্ধন

ভূরুঙ্গামারীতে নবযোগদানকৃত কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে

রাণীশংকৈলে গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

হাটহাজারী নাগরিক সেবা নিয়ে বিপাকে পৌরবাসী। তবে কর্তৃপক্ষের দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
