ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

মোবাইল ফোন ব্যবহারে সুফল - কুফল


মো. কামাল উদ্দিন photo মো. কামাল উদ্দিন
প্রকাশিত: ৩-৮-২০২৪ দুপুর ৩:৩৫

মোবাইল ব্যবহারের সুফল-অসুবিধা নিয়ে লিখতে বসে মনে পড়লো, ১৯৯৭ সালে যখন প্রথম মোবাইল হাতে পেয়েছিলাম, তখন মোবাইল ছিল সোনার হরিণের মতো। গ্রামীণ মোবাইল কোম্পানি সাংবাদিকদের জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজ দিয়েছিল, যার বদৌলতে আমি একটি আইএসডি পোস্টপেইড মোবাইল পেয়েছিলাম। তখন থেকেই আজ পর্যন্ত মোবাইলটি ব্যবহার করে আসছি। কত লাখ টাকা মোবাইল বিল দিয়েছি, তার হিসাব করলে হয়তো মাথা ঘুরে যাবে। শুরু থেকে যে নম্বর পেয়েছি, তা এখনও একই রয়ে গেছে। একমাত্র পরিবর্তন হয়েছে মোবাইলের সেট আর টোনের—আগে ছিল নকিয়া টোন, এখন "তুমি যে আমার কবিতা" গানের টোন।

"তুমি যে আমার কবিতা" টোন মানে হলো, আমাকে পাওয়া! সেই মোবাইল নিয়ে আজ কিছু কথা বলার ইচ্ছে, জানি না পাঠকরা আমার লেখায় কতটা সন্তুষ্ট হবে। চলুন, মোবাইলের ইতিহাসের রাজ্যে একটু ঘুরে আসি।
মোবাইল ফোনের আবিষ্কার ও উন্নয়নের ইতিহাস এক দীর্ঘ ও উত্তেজনাপূর্ণ যাত্রা। এটি আধুনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দিয়েছে। মোবাইল ফোনের বিকাশের ইতিহাস নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো: প্রাথমিক ধারণা ও গবেষণা (১৯৭০-এর দশক):
মোবাইল ফোনের প্রাথমিক ধারণা ১৯৭০-এর দশকে মূলত প্রাপ্তবয়স্ক প্রযুক্তিবিদদের দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল। সেলুলার প্রযুক্তির মৌলিক ধারণা তখনকার সময়ের গবেষণায় উদ্ভূত হয়। এটি একটি সিস্টেম তৈরি করার চিন্তা ছিল যার মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগের জন্য বিনা তারে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হতো।

প্রথম প্রোটোটাইপ (১৯৭৩)
মোবাইল ফোনের ইতিহাসের প্রথম মাইলফলক ছিল ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল, যখন মার্টিন কুপার, মটোরোলা কোম্পানির একজন প্রকৌশলী, প্রথমবারের মতো হাতে ধারণযোগ্য মোবাইল ফোনের কল করে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্টি করেন। তার ফোনটির নাম ছিল "ডাইনাট্যাক ৮০০০x", যা প্রাথমিক পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়।
প্রথম বাণিজ্যিক মোবাইল ফোন (১৯৮৩)
মটোরোলার ডাইনাট্যাক ৮০০০x ১৯৮৩ সালে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ মোবাইল ফোন। ফোনটির সাইজ ছিল বেশ বড় এবং এটি প্রায় ১ কেজি ওজনের ছিল। এর ব্যাটারি জীবন ছিল খুবই সীমিত, যা ৩০ মিনিটের বেশি চলতো না।
সেলুলার প্রযুক্তির উন্নয়ন (১৯৮০-১৯৯০)
১৯৮০-এর দশকে সেলুলার নেটওয়ার্কের প্রযুক্তি দ্রুত উন্নয়ন লাভ করে। দ্বিতীয় প্রজন্মের (2G) সেলুলার প্রযুক্তি, যা ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে, এটি মোবাইল ফোনের মূল প্রযুক্তিতে একটি বড় পরিবর্তন আনে। ১৯৯১ সালে, ইউরোপে প্রথম GSM নেটওয়ার্ক চালু হয়, যা মোবাইল ফোন কলের মান উন্নত করে এবং আন্তর্জাতিক রোমিং সেবা শুরু করে।
স্মার্টফোনের উন্মোচন (১৯৯০-এর দশক):**

১৯৯২ সালে, IBM (International Business Machines) "IBM Simon Personal Communicator" নামে প্রথম স্মার্টফোনটি বাজারে আনে। এটি ছিল একটি মোবাইল ফোন যা পিডিএ (Personal Digital Assistant) ফিচারও সমন্বিত ছিল। এতে ক্যালেন্ডার, কনট্যাক্টস, ইমেইল ও অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন ছিল।
আধুনিক স্মার্টফোনের যুগ (২০০০-এর দশক)

২০০৭ সালে অ্যাপল আইফোন চালু করে মোবাইল ফোনের বাজারে এক বিপ্লব নিয়ে আসে। এটি প্রথমবারের মতো একটি টাচস্ক্রিন স্মার্টফোন হিসেবে পরিচিতি পায়, যা মোবাইল ফোনের ডিজাইন ও ব্যবহার কৌশলে একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করে। আইফোনের পর থেকে, বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি আধুনিক স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে, যেমন উন্নত ক্যামেরা, শক্তিশালী প্রসেসর, উন্নত অপারেটিং সিস্টেম এবং বিস্তৃত অ্যাপ্লিকেশন।
বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ:
বর্তমানে মোবাইল ফোন একাধিক ফিচারসহ অত্যন্ত স্মার্ট ডিভাইসে পরিণত হয়েছে। ৫জি প্রযুক্তির আগমন মোবাইল ফোনের গতিশীলতা ও সংযোগের গতিকে আরও উন্নত করেছে। ভবিষ্যতে, মোবাইল ফোনের প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে এবং এর সাথে নেটওয়ার্ক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), এবং অন্যান্য উদ্ভাবন যুক্ত হবে।
মোবাইল ফোনের ইতিহাস একটি অসাধারণ উদ্ভাবনের কাহিনী, যা সমাজের যোগাযোগের পদ্ধতি ও জীবনধারায় মৌলিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। প্রযুক্তির এই উন্মেষ ও উন্নয়নের ইতিহাস একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে মানব প্রযুক্তির অগ্রগতির প্রতীক হয়ে রয়েছে।
মোবাইল নেশা একটি গুরুতর সমস্যা, বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের জন্য। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে অনেকেই বই পড়া ছেড়ে দিয়েছে, যা জ্ঞানের প্রকৃত উৎস। ভার্চুয়াল দুনিয়ার এই বিষাক্ত প্রভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি সঠিকভাবে রক্ষা না পায়, তবে তারা হয়তো জ্ঞানহীন হয়ে পড়বে।
মোবাইল ফোন একদিকে যেমন তথ্য প্রাপ্তির সহজ মাধ্যম, তেমনি অন্যদিকে এটি আমাদের মেধা এবং চিন্তা শক্তির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এজন্য মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করা উচিত এবং এটি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ব্যবহার করা উচিত। বই পড়ার মাধ্যমে যে গভীর জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব, তা মোবাইলের মাধ্যমে সহজে প্রাপ্ত হয় না। তাই, মোবাইলের চেয়ে বই পড়া এবং সৃজনশীল কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে আমরা সত্যিকারভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুস্থ এবং জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারি।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আজকাল বিভিন্ন সমস্যা ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এখানে কয়েকটি বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
গুজব ছড়ানো: মোবাইল ফোন ও সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব, ভুয়া খবর, ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটি সমাজে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং সন্ত্রাস, হিংসা ও আতঙ্কের সৃষ্টি করতে পারে। গুজবের প্রভাব কমানোর জন্য সত্যতা যাচাই করা এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা গুরুত্বপূর্ণ।
অশ্লীল কনটেন্ট: মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও, ছবি ও সামগ্রীের প্রবাহ বেড়ে গেছে। এটি শিশুদের ও তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং সামাজিক মানদণ্ডের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। এই ধরনের কনটেন্টের প্রতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রাপ্তবয়স্কদের দৃষ্টিপাত এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর নিয়মিত মনিটরিং প্রয়োজন।
ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা: মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য চুরি বা ডাটা হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি বাড়ছে। ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার এবং নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ।
মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে শিক্ষামূলক উদ্যোগ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।মোবাইলে ছোট ছোট বাচ্চাদের অনলাইন ক্লাস নেওয়া: উপকারিতা এবং চ্যালেঞ্জ
প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন ঘটেছে। তবে, ছোট বাচ্চাদের জন্য অনলাইন ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত।
উপকারিতা:সুবিধা এবং প্রবেশযোগ্যতা: মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস শিশুদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। তারা ঘর থেকে বের না হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, যা বিশেষ করে দূরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের জন্য সহায়ক।
ইন্টারেক্টিভ লার্নিং: কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গেম ও ইন্টারেক্টিভ অ্যাকটিভিটিস রয়েছে যা শিশুর আগ্রহ বজায় রাখতে সহায়ক। এসব উপকরণ শিক্ষাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
স্বতন্ত্র শেখার সুযোগ: মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিশুরা নিজেদের গতিতে শেখার সুযোগ পায়। এটি তাদের নিজেদের আগ্রহ ও সামর্থ্যের অনুযায়ী শেখার স্বাধীনতা প্রদান করে।
চ্যালেঞ্জ:
স্বাস্থ্যগত সমস্যা: দীর্ঘ সময় মোবাইল স্ক্রিনের সামনে থাকা শিশুর চোখের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়া, স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা ও নীল আলো ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
মনোযোগের অভাব: ছোট বয়সে শিশুর মনোযোগের সীমাবদ্ধতা থাকে। মোবাইল ফোনে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তারা সহজেই বিভ্রান্ত হতে পারে বা অস্বস্তি অনুভব করতে পারে।
প্রযুক্তির প্রতি নির্ভরতা: অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার শিশুদের প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তৈরি করতে পারে, যা তাদের অন্যান্য সৃজনশীল ও শারীরিক কার্যকলাপের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে।
সামাজিক দক্ষতার অভাব: অনলাইন ক্লাস শিশুদের সরাসরি সামাজিক মিথস্ক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারে, যা তাদের সামাজিক দক্ষতা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
নির্দেশনা:
মডারেশন: শিশুদের মোবাইল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় সীমিত করা উচিত এবং ক্লাসের পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক ও সৃজনশীল কার্যকলাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত।অভিভাবক নজরদারি: অভিভাবকদের মোবাইল ব্যবহারের প্রতি নজর রাখা ও ক্লাসের সামগ্রী পর্যালোচনা করা উচিত। এটি নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে যে, শিশুদের জন্য উপযুক্ত ও নিরাপদ কনটেন্ট ব্যবহার হচ্ছে।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: নিয়মিত বিরতি নিয়ে চোখ বিশ্রাম দেয়া, শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা এবং সঠিক অবস্থানে বসে পড়াশোনা করা উচিত।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি শিশুর শিক্ষা উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে, তবে এটি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে তার ফলস্বরূপ দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পাওয়া সম্ভব। পরিবারের সচেতনতা ও প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যেতে পারে।মোবাইল নির্ভরশীলতা: সামাজিক সম্পর্ক ও মনোযোগের অবক্ষয়
আজকের ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোনের প্রাধান্য এতটাই বেড়ে গেছে যে, মানুষের দৈনন্দিন জীবন কার্যত মোবাইল নির্ভর হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোনে অব্যাহত ব্যস্ততার ফলে অনেকেই পাশের মানুষদের প্রতি কোনো মনোযোগ দিচ্ছে না এবং সামাজিক সম্পর্কের গুরুত্ব ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  সামাজিক বিচ্ছিন্নতা:
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবসর সময় কাটানোর প্রবণতা সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বসার সময়, পরিবারের সদস্যদের সাথে অথবা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর পরিবর্তে, বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকে। এতে করে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের আন্তরিকতা কমে যাচ্ছে এবং মানুষের মধ্যে এক ধরনের মানসিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। পাশে বসা একজন মানুষ থাকলেও, মোবাইল ফোনের প্রতি গভীর আগ্রহের কারণে তারা একে অপরের অনুভূতির প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।
মনোযোগের অভাব:
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার ব্যক্তি বিশেষের মনোযোগের দক্ষতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ মানুষের মনোযোগের সময়সীমা কমিয়ে দেয় এবং বাস্তব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে মনোযোগ দিতে বাধা সৃষ্টি করে। এতে করে সম্পর্কের মধ্যে আন্তরিকতা ও বুঝাপড়ার অভাব দেখা দেয়। পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষতি:মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পারিবারিক বা সামাজিক সভায়, মোবাইল ফোনের প্রতি বেশি মনোযোগ দেওয়ার ফলে সাধারণ কথাবার্তা বা সহানুভূতির অভাব দেখা দেয়। এই প্রবণতা সম্পর্কের মধ্যে আস্থার অভাব এবং সামাজিক অক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা:
অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং একাকীত্বের অনুভূতি বাড়তে পারে। মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত সময় কাটানোর ফলে ব্যক্তি সহজেই বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এটি তাদের সামগ্রিক মানসিক সুখের অভাব ঘটাতে পারে।
প্রযুক্তি নির্ভরতা:
মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি তৈরি করতে পারে। এটি শিশু ও তরুণদের শারীরিক কার্যকলাপ কমিয়ে দেয় এবং সৃজনশীল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
উপসংহার:
মোবাইল নির্ভরশীলতা সামাজিক ও মানসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলছে। আমাদের উচিত মোবাইল ফোনের ব্যবহারকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সামাজিক সম্পর্কের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পারিবারিক সময়, বন্ধুত্বপূর্ণ সংযোগ ও সরাসরি যোগাযোগের গুরুত্ব পুনরুদ্ধার করতে হলে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সংযত করা প্রয়োজন। শুধু প্রযুক্তি নয়, আমাদের মানবিক সম্পর্কের গুরুত্বও ভুলে গেলে চলবে না।মোবাইল নির্ভরশীলতা: সামাজিক সম্পর্ক ও মনোযোগের অবক্ষয়**

আজকের ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোনের প্রাধান্য এতটাই বেড়ে গেছে যে, মানুষের দৈনন্দিন জীবন কার্যত মোবাইল নির্ভর হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোনে অব্যাহত ব্যস্ততার ফলে অনেকেই পাশের মানুষদের প্রতি কোনো মনোযোগ দিচ্ছে না এবং সামাজিক সম্পর্কের গুরুত্ব ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

**১. সামাজিক বিচ্ছিন্নতা:
মোবাইল
ফোনের মাধ্যমে অবসর সময় কাটানোর প্রবণতা সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বসার সময়, পরিবারের সদস্যদের সাথে অথবা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর পরিবর্তে, বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকে। এতে করে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের আন্তরিকতা কমে যাচ্ছে এবং মানুষের মধ্যে এক ধরনের মানসিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। পাশে বসা একজন মানুষ থাকলেও, মোবাইল ফোনের প্রতি গভীর আগ্রহের কারণে তারা একে অপরের অনুভূতির প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।
মনোযোগের অভাব:
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার ব্যক্তি বিশেষের মনোযোগের দক্ষতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ মানুষের মনোযোগের সময়সীমা কমিয়ে দেয় এবং বাস্তব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে মনোযোগ দিতে বাধা সৃষ্টি করে। এতে করে সম্পর্কের মধ্যে আন্তরিকতা ও বুঝাপড়ার অভাব দেখা দেয়।

পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষতি:
মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পারিবারিক বা সামাজিক সভায়, মোবাইল ফোনের প্রতি বেশি মনোযোগ দেওয়ার ফলে সাধারণ কথাবার্তা বা সহানুভূতির অভাব দেখা দেয়। এই প্রবণতা সম্পর্কের মধ্যে আস্থার অভাব এবং সামাজিক অক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা:
অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং একাকীত্বের অনুভূতি বাড়তে পারে। মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত সময় কাটানোর ফলে ব্যক্তি সহজেই বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এটি তাদের সামগ্রিক মানসিক সুখের অভাব ঘটাতে পারে।
প্রযুক্তি নির্ভরতা:
মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি তৈরি করতে পারে। এটি শিশু ও তরুণদের শারীরিক কার্যকলাপ কমিয়ে দেয় এবং সৃজনশীল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।মোবাইল নির্ভরশীলতা সামাজিক ও মানসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলছে। আমাদের উচিত মোবাইল ফোনের ব্যবহারকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সামাজিক সম্পর্কের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পারিবারিক সময়, বন্ধুত্বপূর্ণ সংযোগ ও সরাসরি যোগাযোগের গুরুত্ব পুনরুদ্ধার করতে হলে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সংযত করা প্রয়োজন। শুধু প্রযুক্তি নয়, আমাদের মানবিক সম্পর্কের গুরুত্বও ভুলে গেলে চলবে না।
লেখকঃ সাংবাদিক,
প্রাবন্ধিক, গবেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক। 

এমএসএম / এমএসএম

কোচিং-এর গোলকধাঁধায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে গুরুত্ব নেই

সাংবাদিকের দল সমর্থন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ইঁদুরের কৃতজ্ঞতা

নাগরিক সেবা ও প্রত্যাশার সংকট: রাষ্ট্রীয় কর্মচারী কোথায়?

টেকসই সমাজ গঠনে সাম্য একটি অপরিহার্য ভিত্তি

শুভ জন্মাষ্টমী : সত্য, সুন্দর ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় শান্তির বার্তা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য

জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচিতরাই কাশ্মীরের শাসক

স্বৈরশাসকের বিদায়, বিদ্রোহ ও পলায়ন

জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা: স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির নবদিগন্ত উন্মোচন

ট্রাম্প-উরসুলার বাণিজ্য চুক্তিতে স্বস্তির হাওয়া

মানবিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব