ঢাকা শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

ডেমরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সাকিবের খোঁজ নেয়নি কেউ


সালে আহমেদ photo সালে আহমেদ
প্রকাশিত: ২১-৯-২০২৪ বিকাল ৫:০

ডেমরায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুরুতর আহত সাকিব হাসানের খোঁজ খবর রাখে নি কেউ।মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সাকিবের পরিবার তাকে নিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে ।

সাকিব আল হাসান (২১) শরীয়তপুরের সখিপুর থানার কিরণ নগর এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি ঢাকার ডেমরায় বামৈল পশ্চিম পাড়ার জুলহাস মিয়ার টিনশেড বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। সাকিব বিদেশে গিয়ে চাকরি করে সংসারে সচ্ছলতা এনে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে এমনই স্বপ্ন ছিল সাকিব হাসানের। বাবা আব্দুল আজিজ পাইটির এমকে ডাইং কারখানায় চাকরি করে তিল তিল করে সাকিবের বিদেশ যাওয়ার জন্য  টাকা জমাতে থাকেন।সাকিবের বড় ভাই সোয়াইব হোসেন ও কুরআনের হাফেজ। সোয়াইব বর্তমানে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।

বাসার পাশে বাইতুর নুর মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন সাকিব। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে গেল বছর মাদ্রাসায় আর পড়া হলো না। বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে তিনি স্থানীয় বামৈল আইডিয়াল হাই স্কুলের পাশে টেইলারিং কারখানায় কাজও শিখেছেন।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অগ্নিঝরা স্লোগানে মুখরিত ছাত্র-জনতার ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বর্বরতম নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে ঘরে বসে থাকতে পারেনি সাকিব। গত ২১ জুলাই থেকে প্রায় প্রতিদিনই তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থান করতেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। প্রতিদিনই তার চোখের সামনেই হতাহতের বহু ঘটনা ঘটত। এসব দেখার পরও তিনি ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের সাক্ষী হতে ৫ জুলাই সকাল ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ীর থানার সামনে  অবস্থান নেন।

এ দিন দুপুর ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ছাত্র-জনতার মুখোমুখি অবস্থান নিলে উভয়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যেতে থাকে। এ সময়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। বিকেল ৩টার দিকে সাকিব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সহযোগীরা প্রথমে স্থানীয় কাজলার ডক্টর ল্যাব নামক হাসপাতালে নিলে ওখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  মুগদার ফরাজী হাসপাতালে পরবর্তীতে রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে নেওয়া হয় সাকিবকে মুগদা হাসপাতালে সে ৫ দিন ভর্তি থাকার পর গত ১১ আগস্ট তিনি বাসায় ফেরেন। পরে আবার ঢাকার সায়েদাবাদে আল কারীম হাসপাতালে সপ্তাহখানেক ভর্তি থাকেন।

এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ সাকিব হাসান বলেন, গত ৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে থাকে পুলিশ। এ সময় আমিসহ আরও ৪-৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তার কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে দেখি আমার পায়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং প্রচণ্ড ব্যথায় আমি স্থির থাকতে পারছিলাম না। ওই সময় কয়েকজনের সহযোগিতায় মুগদা হাসপাতালে ভর্তি হই। এখানে ভুল চিকিৎসার কারণে পরে সায়েদাবাদের আল কারীম হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।

নিজের পায়ে গুলির বর্ণনা দিতে গিয়ে সাকিব কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেছেন- গুলির আঘাতে আমার পায়ের গোড়ালি ভেঙে গেছে। পায়ে পচন ধরেছে। উন্নত চিকিৎসার করা না গেলে হয়তো পা কেটে ফেলা হতে পারে। বর্তমানে ১ দিন পর পর ড্রেসিং করানোর জন্য হাসপাতালে যেতে হয়। সব মিলিয়ে এখনো প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।আমার বিদেশ যাওয়ার জন্য জমানো প্রায় লক্ষাধিক টাকা আমার চিকিৎসা সেবায় খরচ করা হয়। এ পর্যন্ত কেউ আমার খোঁজ নেয়নি। এ বিষয়ে কারও কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে সাকিব কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ বিষয়ে সাকিবের বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ঋণের টাকায় চলছে আমার সংসার। সংসারের অভাব-অনটনের কারণে ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারলাম না। স্থানীয় একটি ডাইং কারখানায় অল্প বেতনে চাকরি করে বাসা ভাড়া দিয়ে সংসারের খরচ বহন করা সম্ভব হয় না। এ জন্যই সাকিবের ইচ্ছে ছিল বিদেশে গিয়ে সংসারের হাল ধরবে কিন্তু সে ইচ্ছেও আর পূরণ হলো না। সে ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পায়ের গোড়ালির হাড় ভেঙে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়নি। সে এখনও হাঁটতে পারছে না। এ ছাড়া তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য তিল তিল করে কিছু টাকা জমিয়েছিলাম, সে টাকাগুলোও তার চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে গেল। বর্তমানে ঋণ করে তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে হচ্ছে।

স্থানীয় ঘাসফুল সংগঠনের সদস্য হাফিজুল ইসলাম বলেন,সাকিব গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আমরা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতাল ব্যান্ডেজ করে পরবর্তীতে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করাই। মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলা করায় আমরা আল কারীম হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করি।

এ বিষয়ে ৬৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমি যখন বিষয়টি জানতে পারি সঙ্গে সঙ্গেই তার খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং মুগদা মেডিকেল থেকে আসার পরে চরমোনাই হুজুরের পরিচালনাধীন রাজধানীর সায়েদাবাদে আল কারিম হাসপাতালে ফ্রি ডাক্তারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।ভবিষ্যতে ও তার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

T.A.S / T.A.S

সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে আগুন

স্টেডিয়াম এলাকায় সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান

তুরাগে রাজউকের খালি প্লট দখলের অভিযোগ সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে

ই-কমার্স খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বাফেসাপ আইকনিক অ্যাওয়ার্ড পেল ই-ক্রয় ডটকম

পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় নারীর অংশগ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা

জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের আলোচনা সভা

বাড়তি টাকা দিলে কাগজপত্র ছাড়াই বাসায় পৌঁছে যায় ট্রেড লাইসেন্স

অডিট আপত্তির ভিত্তিতে রেলওয়ে মহাপরিচালকের অপসারণ বেআইনি : রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি

জুলাই সনদের দাবি নিয়ে শাহবাগ অবরোধ

আড়াইহাজারে বিএনপি'র অফিসের ভাড়া চাওয়ায় ঘর মালিককে হত্যা

ডেমরায় জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কর্মসূচি

জুলাই গণঅভূখ্যান দিবস উপলক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সচেতনতা বৃদ্ধি