ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

দুদকের তদন্ত চললেও থামেমি উপ-পরিচালক রেজাউলের দুর্নীতি


সুমন হোসাইন, শার্শা photo সুমন হোসাইন, শার্শা
প্রকাশিত: ২৪-৯-২০২৪ বিকাল ৫:৪৫

বেনাপোল স্থলবন্দরের সাবেক পরিচালক রেজাউলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ও নৌমন্ত্রাণালয়ে একাধিক অভিযোগের তদন্ত চলমান থাকলেও থামেনী অনিয়ম-দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ড। বরং নিজের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে সাবেক সমাজকল্যানমন্ত্রীর নুরুজ্জামানের জামাতা বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়া স্থলবন্দরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বদলি ও সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় অভিযোগ মিলেছে।

সাম্প্রতি তার নীলনকশায় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র,দপ্তরের শৃঙ্খলা ভঙ্গ,রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারসহ নানা অভিযোগ তুলে স্থলবন্দরের দুই উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম ও মো. কবির খানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ভূক্তভোগী ঐ দুই কর্মকতা চেয়ারম্যান ও রেজাউলের রোষানালে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বরখাস্ত হয়েছে বলে জানান। স্থলবন্দরের বিতর্কিত কর্মকর্তা রেজাউলের ইন্ধনে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক নোয়াপাড়া পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি সাংবাদিক সুমন হোসাইন।

তিনি জানান, বেনাপোল স্থলবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যায়ে কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো স্থলবন্দরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজে ব্যাপক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্নসাত করেছেন। কাজে নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার ও সিডিউল বর্হিভূত কাজ করার তথ্য চিত্র তিনি মোবাইলে ধারন করে প্রতিকারের জন্য স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের কাছে প্রেরণ করে তার বিবৃতি চান। এতে বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্বে থাকা রেজাউল করিম ক্ষুদ্ধ হয়ে নিজেই বাদী হয়ে সাংবাদিক সুমনের নামে থানায় এজহার দায়েরের আবেদন করেন। এমনকি তাকে হেও প্রতিপন্ন করতে বেনাপোল স্থলবন্দরের ওয়েবসাইটে পরিকল্পিত ভাবে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের (স্মারক নং-১৮.১৫.৪১৯০.০২৫.০০.১৩৯.২৪.৬৪১ তাং-১ লা সেপ্টেম্বর ২০২৪) আবেদনের কপি নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করে।

বেনাপোল পোর্ট থানা আবেদনের সত্যতা না পাওয়ায় সেটি আমলে না নিলেও চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের তদবিরে পুনরায় বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক(প্রশাসন) কর্মকর্তা শাহিদা শারমিনকে দিয়ে পোর্টথানায় মামলা দায়ের করান। যাহার মামলা নং- ৫/২৮১ ও তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর২০২৪ ইং। বেনাপোল স্থলবন্দরের সাবেক পরিচালক রেজাউলের দুর্নীতি ও বেনাপোল স্থলবন্দরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অনিয়মের নিউজ করায় তিনি প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে মামলায় জড়িয়েছেন বলে আরো জানান। সাংবাদিক সুমনের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দেওয়া ও বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ব্যাপক অনিয়মের খবর বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রাণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রাণালয়ের উপদেষ্ঠা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে নৌপরিবহন মন্ত্রাণায়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং তারা গত বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ও ১৯ সেপ্টেম্বর দুই দিন ধরে বেনাপোলের নির্মাণাধীন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষে কর্মরত মো. রেজাউল করিম উপ-পরিচালক (প্রশাসন) এর অসামাজিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অনিয়ম সরকারের রাজস্ব ফাঁকি,অর্থ আত্নসাৎ,সেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিচার চেয়ে ঢাকা জর্জ কোর্টের এ্যাডভকেট ও মানব অধিকার কর্মী জয়নাল আবেদীন বিগত ২১-৬-২০২২ ইং তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। সেখানে তিনি  উপপরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিমের রাজস্ব ফাঁকিতে সহযোগীতা,অর্থ আত্নসাৎ,স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেছেন।

আবেদনে লেখা তথ্যমতে বেনাপোল স্থলবন্দরের কর্তৃপক্ষের স্টেট অফিসার হিসাবে কর্মরত থাকা কালে বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য আনসার ব্যারাক রপ্তানী টার্মিনাল,বাস টার্মিনাল, প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের জন্য জমি অধিগ্রহণের পূর্বে ভূমি মালিকদের সাথে যোগা যোগ করে জমির মূল্য বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করেছে। তার বাড়ী যশোর জেলায় হওয়ার সুবাধে বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার সরকারী রাজস্ব ফাঁকি সিন্ডিকেট, শেডে দায়িত্বরত অসাধু ইনচার্জ, কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্থ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীর সাথে যোগসাজে সরকারের কোটি কোটি টাকার রজাস্ব ফাঁকি কাজে সহায়তা দিয়ে নিজেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শকদের নিকট হতে সেড প্রতি মাশুয়ারা নেন রেজাউল করিম। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে বদলি হয়ে যোগদানের পর ঐ স্টেশনেও ওজন স্কেলে কারসাজির মাধ্যমে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করে শত কোটি টাকার অবৈধ উপার্জন করেন। বন্দরের ব্যবহৃত গাড়ী নিলামে তুলে টেন্ডারে কম টাকায় প্রাক্কলিত মূল্য দেখিয়ে অন্য নামে নিলাম ক্রেতা সাজিয়ে নিজে ক্রয় পূর্বক পরে তা বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। স্থলবন্দরে চাকুরীকালীন সময়ে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম স্বল্পকালীন সময়ে রাজধানীর মিরপুরে ৩টি ফ্ল্যাট, যশোরের পৌর এলাকায় একাধিক বাড়ি,যশোরের কেশবপুরে আনুমানিক ১শত বিঘা জমি,নিজ নামে ও বেনামে একাধিক জমি,গাড়ী ও ব্যাংকে প্রচুর টাকা রয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন।

গত ৯ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে জাতীয় দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় বেনাপোল বন্দরে আমদানি ট্রাকে অবাধ অর্থ বানিজ্য শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে রেজাউল করিম বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বেনাপোল স্থলবন্দরে ১৪টি পয়েন্টে ব্যাপক চাঁদাবাজির তথ্য তুলে ধরা হয়। এমনকি বন্দরের প্রতিটা শেডে বিধি বর্হিভূত ভাবে বহিরাগত লোক ঢুকিয়ে শেডের কাজ পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে বিগত ১৩মার্চ ২০২৩ সালে লিখিত চিঠি কোলকাতার আইপিএস অফিসারকে অবহিত করে এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশ স্থলবন্দরকর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। যশোর জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী ট্রাক্টর ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি বেনাপোল স্থলবন্দরে পর্যাপ্ত ক্রেন ফর্ক লিফটের ব্যবস্থা ও লেবার কর্তৃক হয়রানীর মাধ্যমে বকশিষের নামে চাঁদা আদায় বন্ধ করার আববেদন জানিয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যানের নিকট গত ২৬-৬-২০২৪ ইং তারিখে (স্মারক নং- ট্রাঃ/মাঃ/সঃ /বে- ০৬/২০২৪/৮)চিঠি দেন। বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসাবে রেজাউল করিমের দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে কর্মস্থলে অনুউপস্থিত আনসার সদস্যদের বরাদ্দকৃত বেতন ভাতা আত্নসাত এবং পিপা কর্মী নিয়োগে অর্থবানিজ্যের গুঞ্জন রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে রেজাউল করিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, দুদকে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ নিস্পত্তি হয়ে গেছে এগুলো ভুয়া অভিযোগ। দুদুক ও মন্ত্রাণালয় তদন্ত করে কিছু পায়নি। সাংবাদিক সুমনের নামে মামলা দায়ের বিষয়টি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সিদ্ধান্তে চিঠি জারী করি তাই এ বিষয়ে আমার বক্তব্য নেই। বর্তমানে তিনি প্রধান কার্যালয়ে উপপরিচালক (প্রশাসনের) দায়িত্ব পালন করছেন বলে আরো জানান।

যদিও দুর্নীতি দমন কমিশন অফিস সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। কর্মসূত্রে বদলিজনিত কারণে বাংলাদেশ স্থলবন্দরের যে বন্দরে তিনি চাকরি করেছেন সেখানেই তিনি অনিয়ম-দুর্নীতির দোষে দুষ্ট হয়েছেন বলে আরো জানা গেছে। ধুরন্ধর এ কর্মকর্তার রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী-এমপিদের সাথে সখ্যতা থাকা ও চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের অপকর্মের দোসর হওয়ায় লাগামহীন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড চালালেও আজ পর্যন্ত তার টিকিটি পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা প্রশাসন। বরং যেই তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তাকে কুট কৌশলে বহিস্কার বা মামলায় ফাাঁসিয়ে নিজের অপকর্ম ঢাকাতে সচেষ্ঠ থেকেছেন।রেজাউল করিমের অনিয়ম বা ক্ষমতার অপব্যবহারের কবলে পড়া ভূক্তভোগীরা বিতর্কিত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছেন। 

এমএসএম / জামান

টিসিবি'র কার্ডের কথা বলে নারী-পুরুষদের মানববন্ধনে দাঁড় করালেন প্যানেল চেয়ারম্যান, ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী

শিবির কর্মী থেকে বিএনপি নেতা, কে এই জাকির হোসেন সরকার

রৌমারীতে বিয়ের প্রলোভনে তরুনীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা

মান্দায় ছয় মাস ধরে এসিল্যান্ড শূন্য

পঞ্চগড়ে বিএনপির বিজয় র‌্যালি

প্রশাসনিক অনুমতিতে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের দাফন সম্পন্ন

সড়ক দুর্ঘটনায় সুবিপ্রবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক

পটুয়াখালীতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে জেলা বিএনপির বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ

গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঠাকুরগাঁওয়ে বিজয় র‌্যালী

ঝিনাইদহে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে আনন্দ শোভাযাত্রা

ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে ফটিকছড়িতে বিজয় মিছিল-আলোচনা সভা

আর কোন স্বৈরাচারের জন্ম হতে দিবেনা বিএনপি

নোয়াখালী -৪ আসন থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ