বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
বুধবার (২ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধ চলকালীন ৬/ক সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হলো নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন সহকর্মী, জাতীয় সংসদের চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান নেতা, পঞ্চগড় জেলার মানুষের আস্থাভাজন, দুঃসময়ের আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি রেলপথমন্ত্রী ও পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম সুজনের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম। করোনাকালীন সময়ের জন্য সীমিত পরিসরে নেয়া হয়েছে পারিবারিক নানা কর্মসূচি। কর্মসূচির মধ্যে ছিল- পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত, মিলাদ মহাফিল, এতিমখানার বাচ্চাদের উন্ন্যতমানের খাবার পরিবেশন।
অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চল্লিশ দশকে জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের মহাজনপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সময়ে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা এবং সর্বোপরি ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং একাধারে রাজশাহী বিভাগীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এবং ডাকসুর সহ-সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসীন ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৬নং সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে তেঁতুলিয়াকে মুক্তাঞ্চলের তীর্থভূমি হিসেবে সারাবিশ্বের কাছে পরিচিত করান। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে বাকশালের ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। এছাড়াও তিনি একাধিকবার জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে ২ জুন মৃত্যুকালীন পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিলেন।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানিয়ে তার নামে পঞ্চগড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম, সাবেক পুঠিমারী ছিটমহলের নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম নগর ও নবাবগঞ্জ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে।
পারিবারিক জীবনে তিনি চার সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম সুরাইয়া ইসলাম মঞ্জু। তিন মেয়ে ইমতিয়াজ শারমিন বিন্টিশিয়া, সানজিদা মুস্তাকিম বিন্টিশিয়া, সাজিয়া আফরোজ বিন্টিশিয়া এবং এক ছেলে মৃত আবু নূর মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বিন্টিশিয়া (সুবর্ণ)।
এমএসএম / জামান