ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

অনার্সের খাতা দেখেন কলেজ হোস্টেলের গার্ড !


শাহিনুর রহমান সোনা, রাজশাহী ব্যুরো প্রধান  photo শাহিনুর রহমান সোনা, রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
প্রকাশিত: ২৮-৮-২০২৫ দুপুর ৪:৪৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ'র এক শিক্ষক অনার্স ও মাষ্টার্স পরীক্ষার খাতা নিজে না দেখে মূল্যায়নের দায়িত্ব দেন হোস্টেলের নিরাপত্তা প্রহরীকে । ঐ কলেজের এক ছাত্র হোস্টলের তত্বাবধায়কের অফিস রুমে বসে নিরাপত্তা প্রহরীর খাতা দেখার একটি ছবি নিউ ডিগ্রী কলেজের ছাত্রদের ফোনে ফোনে ভেসে বেড়ানোতে এ অভিযোগ স্পস্ট হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। 

রাজশাহী নিউ গভ: ডিগ্রি কলেজের ঐ শিক্ষকের নাম ড. মো: শাহাদাত হোসেন সরকার। তিনি ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এবং ঐ কলেজের হায়দার হোসেন হোস্টেলের তত্বাবধায়ক । খাতা দেখা গার্ড রাসেল হায়দার হোসেন হোস্টেলে কর্মরত। 
  
সূত্র বলছে, শিক্ষক ড. শাহাদাত হোসেন নিয়ম অনুযায়ী বোর্ড পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব পান। কিন্তু দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিয়ে তিনি হোস্টেলের কর্মচারী রাসেলকে দিয়ে খাতা দেখাচ্ছেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক ও ছাত্ররা বলছেন, বোর্ড পরীক্ষার খাতা দেখার মতো গোপনীয় (Confidential) কাজে এ ধরনের অবহেলা ও অনিয়ম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এসব খাতার সঠিক মূল্যায়নের ওপর, অথচ সেখানে গার্ড বা কর্মচারী দিয়ে খাতা দেখানো হচ্ছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এইভাবে শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামলে বেরিয়ে আসে ড. শাহাদতের হোস্টেল নিয়ে বিস্তর তথ্য। তথ্য মতে বিগত ১০ বছর যাবত একই হোস্টেলের তত্ববধায়ক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। গার্ড রাসেল প্রফেসর শাহাদাতের হোস্টেলের কাজের পাশাপাশি তার বাড়ীর কাজ, শাহাদাতের নির্মিতব্য একটি ভবনের কাজ, খাতা দেখার কাজ, হোস্টেলেই আয়ের টাকা থেকে উন্নয়নে খরচ না করে কিভাবে নিজেদের পকেট ভরানো যায়, সে কাজ  এবং হোস্টেলের নানা অনিয়মে প্রতিবাদ করা ছাত্রদের শাসন করার কাজটিও করে থাকেন। যদিও এসব কাজই তার স্যার শাহাদাত'র নির্দেশে তাকে খুশী করার জন্যই করে থাকেন রাসেল। জানা যায় তিন তলা হোস্টেলটির ২৫ টি ঘরে ৩ জন করে মোট ৭৫ জন ছাত্র থাকে। কখনও কোন সিট ফাঁকা থাকে না। জনপ্রতি মাসিক ১ হাজার টাকা হিসেবে সর্বোমোট ৭৫ হাজার টাকা আয় হয়। ২ জন গার্ড, ১ জন বুয়া, ১ জন বুয়া সহকারী, ১ জন টেবিল বয় এই ৫
কর্মচারীর বেতন দেয়া হয় ২৫ হাজার টাকা। গড়ে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ১৫ হাজার টাকা। মানে হোস্টেলটিতে মাসে মোট আয় ৭৫ হাজার টাকা, মোট ব্যয় ৪০ হাজার টাকা। তাহলে বাকি ৩৫ হাজার টাকা যায় কোথায় ? আর এত টাকা বাঁচার পরও নষ্ট পানির পাম্প সারানো হচ্ছে না, সারানো হচ্ছে না বিদ্যুতের লাইন। বিদ্যুতের লাইন ঠিক না করায় প্রতিনিয়ত হোস্টেলে থাকা ছাত্রদের ল্যাপটপ, ফোন, চার্জার সহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে।  সূত্র বলছে ৭৫ সিট সবসময় ভর্তি থাকলেও প্রতিমাসে শাহাদাত হোসেন ২০-২৫ টি সিট খালি দেখিয়ে ঐ টাকাগুলো নিজের পকেটে ভরছেন৷ 

এসব নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষকে ছাত্ররা অভিযোগ দিলে হোস্টেল পরিচালনা পরিষদের ৩ শিক্ষককে পাঠানো হয় তদন্তে। ছাত্রদের ভাষায়, তদন্ত কমিটির শিক্ষকরা বড় বড় আপেল কমলা খেয়ে ফিরে যান, যাওয়ার সময় প্রতিবাদ করা ছাত্রদের শাসিয়ে যান, এসব করলে হোস্টেল থেকে বের করে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে রাসেলকে হোস্টেলে না পেয়ে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আমি দূুরে আছি, সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই, আমি পরে কথা বলছি বলে ফোনটি কেটে দেন। 

জানতে চাইলে, প্রফেসর ড. শাহাদাত হোসেন সরকার বলেন, গার্ড কিভাবে খাতা দেখবে, খাতা আমি দেখি। ও শুধু বৃত্ত ভরাটের কাজটি করে দেয়। বোর্ডের পরীক্ষার খাতা অন্যকে দিয়ে বৃত্ত ভরাট করাটা কি অনিয়ম নয় ?  তিনি বলেন, অন্যায় নয়, এটা তো বেশীরভাগ শিক্ষকই করে থাকেন ;  তাছাড়া খাতা তো তার কাছে ছেড়ে দেয়া হয় না, আমি পাশে বসে তাকে দিয়ে এগুলো করিয়ে নিই। ছবি আর ভিডিওতে তো ঐ ঘরে আপনাকে দেখা যাচ্ছে না, শুধু রাসেলকেই খাতা গুলো নিয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। তখন তিনি বলেন, হোস্টেলে আমার অফিস আর থাকার ঘর পাশাপাশি, তখন হয়তো ছিলাম না, কোন ছাত্র ষড়যন্ত্র করে এটা করেছে। 

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুঞ্জুর রহমান খান বলেন, শিক্ষা বোর্ড হোক আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হোক বা যে কোন বোর্ডের খাতা দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক ব্যতীত অন্য কেউ কিছুই করতে পারবে না, এটি অত্যান্ত গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। যা সংরক্ষণের দায়ভার শুধুই সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের। 

রাজশাহী গভ: নিউ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কালাচাঁদ শীলকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, কাজটি ঠিক হয়নি, অন্যায় হয়েছে, এটা করা উচিৎ নয়। এরকম ঘটনা জানার পর প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে আপনার করণীয় কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রিন্সিপাল হিসেবে আমার কিছু করনীয় থাকে না, এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যদি কোন ব্যবস্থা নেয় তাহলে নিতে পারে।

এমএসএম / এমএসএম

ভূঞাপুরে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন সভা

রাণীশংকৈলে পুলিশের ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

সবুজে ঢেকে যাক কালকিনি: পরিবেশ রক্ষায় আনসার-ভিডিপি’র অঙ্গীকার

অভয়নগরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

শ্রীমঙ্গলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত -১

তানোরে ব্যাক ডেট ও জালিয়াতি নিয়োগের তদন্তে হাজির হননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে স্কুল শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন

চট্টগ্রামে নেক্সাস ফেস্ট-২০২৫ সম্পন্ন

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে: জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান

শ্রীপুরে পরিবেশ বিপর্যয় রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

অনার্সের খাতা দেখেন কলেজ হোস্টেলের গার্ড !

মানিকগঞ্জে ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারী আটক

কাপাসিয়া 'ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় হাইলজোরে' অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত