ঢাকা শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

মোগল ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন: কুমিল্লার শাহ সুজা মসজিদ


ইবনুল হাসান রায়হান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা photo ইবনুল হাসান রায়হান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা
প্রকাশিত: ১৩-৪-২০২৫ বিকাল ৬:৪

বাংলার ইতিহাসে মোগল অধ্যায়ের এক উজ্জ্বল নাম শাহ সুজা। কুমিল্লা শহরের গোমতীর নদীর তীরে মোগলটুলি এলাকায় দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক শাহ সুজা জামে মসজিদ। মোগল সাম্রাজ্যের শিল্প ও স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন হিসেবে পরিচিত এই মসজিদটি নির্মাণ করেন সম্রাট শাহজাহানের পুত্র ও সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভাই
বাংলার সুবেদার শাহ সুজা। তার শাসনামলের শেষ দিকে ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটি কেবল কুমিল্লার নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মোগল স্থাপত্য হিসেবে স্বীকৃত।

মসজিদটি আয়তনে বড় না হলেও, এর স্থাপত্যশৈলী, নকশা ও কারুকাজ মোগল ঐতিহ্যের শৌর্য-বীর্যের প্রতিফলন ঘটায়। এর বাইরের অংশে অষ্টকোণাকার চারটি বুরুজ, কারুকাজমণ্ডিত প্রবেশপথ, এবং মারলোন নকশা খচিত কার্নিশ এখনো সেই সময়ের নির্মাণশৈলীর নিদর্শন বহন করছে।
মসজিদের অভ্যন্তরে তিনটি মিহরাব রয়েছে, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় মিহরাবটি সবচেয়ে বড় এবং অলংকরণে সমৃদ্ধ। ফুল, লতাপাতা ও জ্যামিতিক নকশায় সজ্জিত এই মিহরাব মোগল আমলের স্থাপত্যকলার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মসজিদটির ছাদে তিনটি গম্বুজ রয়েছে, যার মধ্যে মধ্যের গম্বুজটি সবচেয়ে বড়। গম্বুজগুলোর চূড়ায় পদ্ম নকশা ও কলস আকৃতির শোভাযাত্রা দেখা যায়, যা মসজিদের সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

মসজিদটির নির্মাণ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে কিছু মতভেদ থাকলেও, এটি যে মোগল সাম্রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ঐতিহাসিক কৈলাসচন্দ্র সিংহ তাঁর "রাজমালা" গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, শাহ সুজা হয়তো ত্রিপুরা জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে কিংবা মহারাজ গোবিন্দ মানিক্য তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

মসজিদের ইমাম মুফতি খিজির আহমদ কাসেমী বলেন, ২০০৩ সাল থেকে আমি এ মসজিদে ইমামতি করছি। "মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লি ও দর্শনার্থীরা আসেন, কিন্তু স্থান সংকুলানের কারণে অনেকসময় যথাযথভাবে সম্পুর্ণ জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। কালের সাক্ষী এ মসজিদটির মূল কাঠামো ঠিক রেখে মসজিদের পরিধি বাড়ানো প্রয়োজন।"

শাহ্ সুজা হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ মাসুদ বলেন, মসজিদটি কয়েক ধাপে সামনের দিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। চুন-সুরকি দিয়ে মসজিদটি নির্মিত। মসজিদটির সংস্কার এবং যথাযথ সংরক্ষণ হলে এটি শুধু কুমিল্লার নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের ইসলামী স্থাপত্যের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হতে পারে। 

সরেজমিন দেখা যায়, মোটা দেওয়ালে নির্মিত মসজিদটি। পার্শ্ববর্তী ভবন আর বারান্দায় টিনের ছাউনি মসজিদের সৌন্দর্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মসজিদের ভেতরে একটা শীতল পরিবেশ রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকার সহ আশেপাশের বহু দর্শনার্থী প্রতিদিনই মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন। বিশেষ করে জুমা, শবে বরাত, শবে কদর ও ঈদের দিনগুলিতে এখানে মুসল্লিদের ঢল নামে। 

এক দর্শনার্থী জানান সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হলে তা হাজার বছরেও কিছু হবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তা নিয়ে ইতিহাস জানতে পারবে।

এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যটি যুগের পর যুগ ধরে মোগল স্থাপত্যের গৌরব বহন করে চলেছে, যা ভবিষ্যতেও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। শ্রুতি যাই থাকুক না কেন কুমিল্লার গোমতীর তীরের শাহ সুজা মসজিদটি পাক ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন সভ্যতার অপূর্ব নিদর্শন।

এমএসএম / এমএসএম

কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা

টেকনাফের বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযান

লাকসামে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ কাউন্সিল’২৫ অনুষ্ঠিত

শেরপুরে বন্যহাতির তান্ডবে আমন খেত নষ্ট: দিশেহারা কৃষকেরা

মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি" শীর্ষক প্রতিবাদকে সামনে রেখে স্থানীয় গ্রামবাসী ও যুবসমাজের উদ্যোগে আলোচনা

বাউফলে স্প্রেইড হিউম্যানিটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন,স্বৈরাচারের বিচার দৃশ্যমানকরে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবেঃ এটি এম মাসুম

তানোরে মা ও ছেলেকে কুপিয়ে জখম

সীতাকুণ্ডে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল সাইকেল আরোহীর

ঝামায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

মুকসুদপুর প্রেসক্লাব ৩ সদস্যকে ত্রুেস্ট ও পরিচয়পত্র প্রদান

নাগরপুরে পাকুটিয়া ইউনিয়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিফলেট বিতরণ

পাটগ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু