ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

১৩০ টাকায় চাকরি নিয়ে ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক


নিজাম উদ্দিন photo নিজাম উদ্দিন
প্রকাশিত: ১৪-৯-২০২১ রাত ৮:১২

২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক ১৩০ টাকায় কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নিয়েছিলেন নুরুল ইসলাম। আট বছর পর ২০০৯ সালে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। তবে নিজের আস্থাভাজন আরেকজনকে ওই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে জড়িয়ে পড়েন দালালি সিন্ডিকেটে। মাত্র ১৩০ টাকা দৈনিক মজুরিতে কাজ করা নুরুল ইসলাম এখন ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। রয়েছে একাধিক প্লট, ফ্ল্যাট, গড়ে তুলেছে নামে-বেনামে একাধিক প্রতিষ্ঠান।

র‌্যাবের দাবি, টেকনাফ বন্দরে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালির কৌশল রপ্ত করেন নুরুল ইসলাম। বন্দরে দালালির বিভিন্ন সিন্ডিকেট গড়ে অবৈধভাবে অর্জন করেছেন সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ। এছাড়াও নামে-বেনামে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

দালালির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া টেকনাফ বন্দরের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. নুরুল ইসলামকে (৪১) গ্রেফতার করা হয়। নুরুল ইসলাম ভোলা সদরের পশ্চিম কানাই নগরের মো. আব্দুল মোতালেবের ছেলে।

অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, মিয়ানমারের ৩ লাখ ৮০ হাজার মূল্যমানের মুদ্রা, ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা এবং নগদ ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার নুরুল ইসলাম তার অপরাধ সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন খন্দকার আল মঈন। নুরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, সে ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেয়। বন্দরে কর্মরত থাকার সময়ে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালি ইত্যাদির কৌশল রপ্ত করে। একই সঙ্গে দালালির বিভিন্ন সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। পরে নিজেই ওই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আস্থাভাজন একজনকে একই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে। চাকরি ছেড়ে দিলেও দালালি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রেখে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

টেকনাফ বন্দরের দালাল সিন্ডিকেটের প্রধান নুরুল

নুরুল টেকনাফ বন্দর কেন্দ্রীক দালাল সিন্ডিকেটের প্রধান। তার সিন্ডিকেটে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দালালি কার্যক্রমগুলো করে থাকে। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কাঠ, শুঁটকি, বরইয়ের আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসত। চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত। গ্রেফতার নুরুলের সঙ্গে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের যোগসাজশ ছিল বলেও জানা গেছে।

বন্দরের ইনভয়েস কারসাজিতেও নুরুল

অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সঙ্গে সমন্বয় এবং চতুরতার সঙ্গে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েস কারসাজি করত নুরুল ইসলাম। অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সে।

ঢাকায় ফ্ল্যাট-প্লটও গড়েছে নুরুল

দালালি ও অবৈধ কার্যক্রমে অর্জিত অর্থে ঢাকা শহরে ৬টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট কিনেছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে ৩৭টি জায়গা, প্লট, বাগানবাড়ি রয়েছে। অবৈধভাবে তার অর্জিত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা। নামে-বেনামে তার বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে নুরুল জাহাজ শিল্প ও ঢাকার নিকটবর্তী বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার আল মঈন বলেন, নুরুল ইসলামের সঙ্গে কারবারিদের ইয়াবা বেচাকেনার তথ্যও আমরা পেয়েছি। তার ঢাকার বাসা থেকে ইয়াবাও জব্দ করা হয়েছে। কক্সবাজার ও টেকনাফ কেন্দ্রিক মাদক কারবারিদের সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে।

আমদানি-রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও তার ছিল সখ্যতা। কম্পিউটার অপারেটরের পদে থাকার সময় আমদানি-রফতানিকারক দুটি বেনামি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে বিপুল অর্থ হাতিয়েছে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফুলটাইম দালালির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থের ব্যবহার বৈধ করতে গড়ে তোলে ৫টি প্রতিষ্ঠান। সরকার দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও সখ্যতার ভিত্তিতে দালালির কাজ করত সে। তবে গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতেই এই প্রথম র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় নুরুল।

জাল টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে কমান্ডার আল মঈন বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ কেন্দ্রিক বাণিজ্য করার সুবাদে সে দেশের দালালদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। সে দেশের দালালদের মাধ্যমে জাল টাকার লেনদেন করত।

এমএসএম / এমএসএম

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ঐতিহাসিক অভ্যর্থনায় প্রস্তুত বিএসপিপি

ঢাকায় দাওয়াতে ইসলামীর ৩ দিনের ইজতেমার প্রথমদিনেই মুসল্লির ঢল

ঢাকা–১৩ আসনে কামরুজ্জামান জুয়েলের পক্ষে বিএনপির মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ

ড্যাপ ও নতুন ইমারত বিধিমালায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন

ড্যাব কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ঢাকা- ৫ আসনে বিএনপি'র প্রার্থী নবীউল্লাহ নবীর পক্ষে মনোনপত্র সংগ্রহ

ঢাকা-১৮ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ

জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসক দের ভূমিকা এবং স্বাস্ব্য সেবার ক্ষেত্রে তাদের বর্তমান অবস্থা

রূপগঞ্জে একাধিক মামলার আসামি নাজমুল হাসান টিপু গ্রেফতার

স্যার ফজলে হাসান আবেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা

হাদির জানাজা ঘিরে ডিএমপির নিরাপত্তা বলয়, থাকছে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা

রাজধানীতে ২৪ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দাওয়াতে ইসলামীর ইজতেমা