ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

‘ফ্যাসিস্ট’ দাতা সদস্য করতে প্রধান শিক্ষকের ওপর চাপ!


জসিম উদ্দিন, খানসামা photo জসিম উদ্দিন, খানসামা
প্রকাশিত: ৮-৭-২০২৫ রাত ৯:২০

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার মধ্য সুবর্ণখুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ঘিরে সম্প্রতি এক নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই বিতর্ক আর্থিক অনিয়ম বা শিক্ষার মান নিয়ে নয়—বরং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনায় ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারসংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তিকে দাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তালুকদার নিজেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেবুন নেছা ফেরদৌসীকে চাপ প্রয়োগ করেছেন একজন বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দাতা সদস্য করতে, যার নাম সরকারিভাবে ‘ফ্যাসিস্ট সংশ্লিষ্ট’ হিসেবে চিহ্নিত।

ঘটনার সূত্রপাত গত মে মাসে, যখন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় একটি চিঠি আসে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের কাছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৫ মে ২০২৫ তারিখের স্মারকে স্পষ্টভাবে বলা হয়—বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নাম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা, প্রকল্প, পুরস্কার বা কমিটি থেকে মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং ১৫ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ২ জুন ২০২৫ তারিখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকেও এই বিষয়টি নিয়ে তাগিদপত্র জারি হয় এবং জেলা-উপজেলার সকল শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে সরাসরি দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এই জাতীয় প্রেক্ষাপটেই প্রধান শিক্ষক জেবুন নেছা ফেরদৌসী যখন নিজের বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় একজন বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দাতা সদস্য করার ব্যাপারে আপত্তি জানান—যার নাম ইতোমধ্যে ‘ফ্যাসিস্ট সংশ্লিষ্ট’ হিসেবে চিহ্নিত—তখন থেকেই শুরু হয় প্রশাসনিক চাপ, সামাজিক হেনস্থা এবং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ষড়যন্ত্র। অভিযোগ রয়েছে, এই চাপ সৃষ্টির পেছনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তালুকদার।

জানা গেছে, ওই ‘ফ্যাসিস্ট সংশ্লিষ্ট’ ব্যক্তি হলেন উপজেলার প্রভাবশালী এক সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা, যিনি আগে থেকেই বিদ্যালয়ের দপ্তরি তরিকুল ইসলামের আত্মীয়। তরিকুল নিজেই বিদ্যালয়ের সম্পদ আত্মসাৎ ও বেঞ্চ চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত এবং তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ভিডিও প্রমাণ। তারই চাচাত ভাই প্রভাবশালী সাইয়েদুজ্জামান ‘সামু’ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই তদবির করে আসছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিয়মনীতি মেনে তার আবেদন বাতিল করেন। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার, মিথ্যা অভিযোগ এবং প্রশাসনিক হয়রানি।

প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, শিক্ষা অফিসার তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে বলেন—"উপরে নির্দেশ আছে, ফয়সালা করতে হবে, সামুকে দাতা সদস্য করতে হবে, না হলে তোমার জন্য ঝামেলা হবে।" এখানেই শেষ নয়! এই সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে, যেখানে শোনা যায়—প্রধান শিক্ষক জেবুন নেছা ফ্যাসিস্ট সংশ্লিষ্ট নির্দেশনার প্রেক্ষিতে একজন বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দাতা সদস্য না করার যুক্তি তুলে ধরে বলেন, "স্যার, অধিদপ্তরের মেইলে এসেছে যে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা দাতাদের বাদ দিয়ে কাজ করতে হবে। ওরা তো বিগত সরকারের পদবিধারী কর্মী ছিল—ওদেরকে কিভাবে…?" জবাবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন: "বাংলাদেশে যারা দাতা আছে, ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে যারা জড়িত—আপনি তাহলে সবই চেঞ্জ করে দেন।" প্রধান শিক্ষক উত্তরে বলেন, "বিদ্যালয়ের মূল দাতা যাঁর জমিতে স্কুল হয়েছে, তিনি এবং তাঁর উত্তরাধিকার বৈধ দাতা হিসেবে আছেন।" তাতে শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিক্রিয়া ছিল, "দাতা কে কে আছে তালিকা নিয়ে আসেন, আমি বোঝাতে চাই না, আপনি নীতিমালা পড়ে দেখুন।"

এদিকে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের জন্য যাঁরা জমি দিয়েছেন তাদের মধ্যে একজনের (সামুর পিতা) দেওয়া জমির পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ, এবং সেটিও একটি পুকুর—যা বিদ্যালয়ের কাজে কখনো ব্যবহৃত হয়নি এমনকি তাদেরই ভোগ দখলে রয়েছে। অপরদিকে, বিদ্যালয়ের মূল ভবন ও খেলার মাঠ যে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত, তা এসেছে অন্য একজন দাতার কাছ থেকে, যার বৈধ উত্তরাধিকারী বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

প্রশ্ন উঠছে, যেখানে সরকারি নির্দেশনায় (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ১৫ মে ২০২৫ এবং শিক্ষা অধিদপ্তর, ২ জুন ২০২৫) স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প, কমিটি, পুরস্কার বা স্থাপনায় রাখা যাবে না, সেখানে একজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কিভাবে উল্টো ওইসব ব্যক্তিকে দাতা সদস্য রাখতে উৎসাহ দেন?

এই বিষয়ে জানতে চাইলে খানসামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তালুকদার প্রতিবেদককে বলেন—"আমি কাউকে দাতা সদস্য করতে বলিনি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে অভিযোগ এসেছে বলেই তদন্ত করছি।"

এমএসএম / এমএসএম

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা

কাপাসিয়ায় কড়িহাতা ইউনিয়নের মাস্টার ইয়াকুব আলী ফাউন্ডেশনের' উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা মাজহারুল ইসলাম ইমন

সলঙ্গায় কচুরিপানার নিচ থেকে মানুষের পায়ের কঙ্কাল উদ্ধার

পাবিপ্রবি’র শিক্ষকদের জন্য কর্মশালা শুরু

ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা

হাটহাজারীতে মানবতার কল্যাণে আমরা সংগঠনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

চন্দনাইশে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নাচোলে যথাযোগ্য মর্যাদায় ইলা মিত্রের জন্মশত বার্ষিকী পালিত

পাঁচবিবিতে গভীর রাতে ঝগড়া থামাতে বলায় প্রতিবেশির ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

চট্টগ্রামে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আলোচনা সভায় বেগম সেলিমা রহমান

দাগনভূঞায় ফেনী-৩ উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে দুই হাজারের বেশি রোগীকে সেবা প্রদান

ভূরুঙ্গামারীতে গণমাধ্যমকর্মীর তৎপরতায় এক শিক্ষার্থী ফিরে পেল বই-খাতা আর স্বপ্নের স্কুলজীবন