খানসামার হৃদয়ের স্পন্দন ডা. মুকুল: সেবার পথ ছেড়ে ষড়যন্ত্রের ছায়ায় বদলি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে বহু বছর ধরে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের এক অনন্য আশ্রয়স্থল ছিলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুজ্জোহা মুকুল। তাঁর হাতের সেবা, বিনামূল্যে অপারেশন এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার নিরন্তর চেষ্টা তাঁকে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আস্থার প্রতীক করে তুলেছিল। বিশেষ করে দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের জন্য তাঁর পরিচালিত নিরাপদ ওটি কার্যক্রম অগণিত পরিবারকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিয়েছে। বাংলাদেশের ১১তম দরিদ্র উপজেলা হিসেবে পরিচিত খানসামায় চিকিৎসক সংকট থাকা সত্ত্বেও ডা. মুকুলের আন্তরিক সেবা ও নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একাধিকবার জেলায় স্বাস্থ্যসেবায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। তিনি ছিলেন এমন একজন চিকিৎসক যিনি দরিদ্র মানুষের কষ্ট বুঝতেন এবং বিনা খরচে বা খুব সামান্য খরচে সেবা দিতে সর্বদা উদ্যোগী ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে চিকিৎসা পেয়ে অসংখ্য মানুষ স্বস্তি পেয়েছেন, একজন বৃদ্ধ বিনা খরচে অপারেশন করিয়েছেন, অসংখ্য মহিলার সিজারিয়ান হয়েছে বিনামূল্যে এবং আর্থিক সংকটে থাকা শিক্ষার্থীরাও তাঁর সাহায্যে উপকৃত হয়েছে। তাঁর নিয়মিত অস্ত্রোপচার কার্যক্রম গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে এক অনন্য ভরসা ও আশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। তাঁর বিদায়ের মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য মানুষ আবেগঘন বার্তা লিখেছেন। নুর-মোহাম্মদ শাহ লিখেছেন, “আপনার অবদান আমরা কখনোই ভুলব না। আপনার শূন্যতা খুব শিগগিরই এলাকাবাসী অনুভব করবে।” আরেক শুভাকাঙ্ক্ষী মন্তব্য করেন, “জরুরি সেবা বলতে আর খানসামায় কাউকে রইল না।” এস. এম. রকি লিখেছেন, “খানসামার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবায় আপনার ঐতিহাসিক ভূমিকা ও আন্তরিকতা চিরকাল স্মরণ করবে সেবাগ্রহীতারা।” ডা. মুকুলের এই সৎ ও নিষ্ঠাবান সেবার পথটি অবশ্য মসৃণ ছিল না। স্থানীয় ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. শফিকুল ইসলাম সজিবের সঙ্গে তাঁর প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। অভিযোগ উঠেছে, ইউএইচএফপিও গোপনে ডা. মুকুলের ব্যক্তিগত নথি ও ছবি সংগ্রহ করে রাজনৈতিক মোড়কে সাজিয়ে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন, যার উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত করে বদলি করানো। এসব ছবির মধ্যে ছিল সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনের সময় তোলা ছবি, যেখানে ডা. মুকুল উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, এই বদলির মূল উদ্দেশ্য ছিল একজন সৎ ও সক্রিয় কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা এবং অনিয়মের পথ প্রশস্ত করা। এ বিষয়ে ডা. মুকুল বলেন, “আমি একজন পেশাদার চিকিৎসক, ষড়যন্ত্র করে যদি আমাকে সরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে দুর্নীতির পথ সহজ হয়।” এ বিষয়ে জানতে ইউএইচএফপিও ডা. শফিকুল ইসলাম সজীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। দিনাজপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ ফেরদৌস জানান, “এই বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ জমা দেয়নি। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিতর্ক ও ষড়যন্ত্রের এই প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি ডা. শামসুজ্জোহা মুকুলের পদায়ন হয়েছে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে। খানসামার মানুষ গর্বের সঙ্গে তাঁর এই পদায়নকে স্বাগত জানালেও, বিদায়ের শূন্যতা তাঁদের চোখে জল এনেছে। বিদায়ের মুহূর্তে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠেছে শুভকামনা ও কৃতজ্ঞতার বার্তায়, যা প্রমাণ করে, তিনি শুধু একজন চিকিৎসক নন, ছিলেন এই অঞ্চলের মানুষের আশা ও আস্থার স্তম্ভ।
এমএসএম / এমএসএম

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা

কাপাসিয়ায় কড়িহাতা ইউনিয়নের মাস্টার ইয়াকুব আলী ফাউন্ডেশনের' উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা মাজহারুল ইসলাম ইমন

সলঙ্গায় কচুরিপানার নিচ থেকে মানুষের পায়ের কঙ্কাল উদ্ধার

পাবিপ্রবি’র শিক্ষকদের জন্য কর্মশালা শুরু

ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা

হাটহাজারীতে মানবতার কল্যাণে আমরা সংগঠনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

চন্দনাইশে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নাচোলে যথাযোগ্য মর্যাদায় ইলা মিত্রের জন্মশত বার্ষিকী পালিত

পাঁচবিবিতে গভীর রাতে ঝগড়া থামাতে বলায় প্রতিবেশির ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

চট্টগ্রামে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আলোচনা সভায় বেগম সেলিমা রহমান

দাগনভূঞায় ফেনী-৩ উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে দুই হাজারের বেশি রোগীকে সেবা প্রদান
