কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসে আন্দোলকানীদের মাঝে আতঙ্ক চলছে

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সদর দপ্তরের অধীন সাতটি বিভাগের অফিসের সরকার বিরোধী আন্দোলণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার খবরে আতঙ্ক বিরাজ করছেন। বিশেষ করে যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের বিরুদ্ধে কাফনের কাপড় পড়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। শুধু তাই নয়, তারা বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলসহ সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের মাঝেই সবচেযে বেশী আতঙ্ক বিরাজ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, কাস্টমসের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, অতিরিক্ত কমিশনার মোংলা কাস্টম হাউসের আবুল আল মোহাম্মদ আমীনুল ইসলাম খান, কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মানস কুমার বর্মন, মো. মজিবুর রহমান মজিব, কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা (বাকাএভ নেতা) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্বিতীয় তলা, মো. মাজহারুল ইসলাম কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা (বাকাএভ নেতা)। আর এদের সবচেয়ে কুপরামর্শ দাতা ও নাটের গুরু হলেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ওরফে মজিবুর।
আবার কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট (বাকাস মহাসচিব), মো. মাহবুব হোসাইন সাব ইন্সপেক্টর (বাকাস সহ-সভাপতি) কাস্টমস ঢাকা পূর্ব কমিশনারেট, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন সিপাই (সাংগঠনিক সম্পাদক) কাস্টমস পশ্চিম কমিশনারেট, মো. বাবুল হোসেন সিপাই (বাকাস নেতা) কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট, মো. আবুল হোসেন সিপাই (সাংগঠনিক সম্পাদক) কাস্টমস বৃহত্তর করদাতা ইউনিট এল টি ইউ ঢাকা, মো. মনজুরুল ইসলাম সিপাই (আঞ্চলিক কমিশনারেট নেতা) কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট, মো. আবুল কাশেম তুহিন সিপাই (আঞ্চলিক কমিশনারেট নেতা) কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট, মো. রাজিব হোসেন সিপাই (সাংগঠনিক সম্পাদক) কাস্টমস ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট, মো. আবু সাঈদ সিপাই (বাকাস নেতা) কাস্টমস ঢাকা পশ্চিম কমিশনারেট ঢাকা, মো. মিজানুর রহমান সাব ইন্সপেক্টর কাস্টমস আঞ্চলিক (কমিশনার নেতা) ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেট।
ব্যবসায়ী মহল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, কাস্টমসের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। তারা সরকারের রাজস্ব আদায় বন্ধ করে দেশকে অচল করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিলেন। আন্দোলনে যারা দোষী তাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। আর সরকার উৎখাতের আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে সরকার। ইতিমধ্যে চারজনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং ২৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। আর আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তাছাড়া, তালিকার মধ্যে যারা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন ও অফিস বন্ধ রেখে কাজে অনুপস্থিত থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের মধ্যে ৩৪৬ জন এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই তালিকার যাচাই-বাছাই পূর্বক রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে যাদের সম্পৃক্ততা, অংশগ্রহণ, সমর্থন ও সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে কাস্টমস সহ এনবিআরের কখন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। ক্ষমা চাওয়ার পরও এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশার মধ্যে অফিস করছেন অনেকেই। আর সরকার বিরোধী আন্দোলনের অভিযোগে ঢালাওভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অসন্তোষ তৈরি হবে এবং রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১২ মে সরকার এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এনবিআর ভেঙে দুটি বিভাগ (রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা) গঠনের জন্য অধ্যাদেশ জারি করে। সেটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে সেটি সংশোধনের আশ্বাস দিলে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়। তবে স্বার্থ সংরক্ষণে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা। এরপর গত ২২ জুন কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করে আদেশ জারি করে এনবিআর। তাদের গত ২৪ জুন বা তার আগে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়। কিন্তু তাদের সেই বদলি আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ২৪ জুন এনবিআর ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বদলির আদেশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান কর্মকর্তারা। এরপর গত ২৯ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় কোনো সাজা দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন কর্মকর্তারা। আর আন্দোলন প্রত্যাহারের পরে এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বদলি আদেশ ছিঁড়ে ফেলা এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কটূক্তি করায় একজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আরও অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সদর দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বহিরাগতদের অবৈধ সু সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে তাদের সেই সম্পর্ক চুর্ন হয়ে যাবে। ফলে তারা সরকার বিরোধী আন্দোলণে সক্রিয় ভুমিকায় লিপ্ত হয়। তারা প্রত্যেক অফিসে দালালদের এমন ভাবে প্রতিষ্টিত করেছেন যে, তাদের অবস্থা বুঝে কেউ বুঝতেই পারছেন , তারা কোন সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তা নন। তারা অফিসের গোপন নথিসহ ফাইলপত্র অর্থের বিনিময়ে বাহিরে সরবরাহ করে থাকেন বলেও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আর এই সাতটি বিভাগ হচ্ছে মোহাম্মদপুর বিভাগ, মানিকগঞ্জ বিভাগ, সাভার বিভাগ, মিরপুর বিভাগ, ধামরাই বিভাগ, টাঙ্গাইল বিভাগ ও জালামপুর বিভাগ। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর অধীন এই সাতটি বিভাগের প্রতিটি অফিসেই বহিরাগতরা আধিপত্য বিস্তার চালিয়ে আসছেন। তাদের কাছে প্রকৃত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একপ্রকার জিম্মি।
বাংলাদেশ কাস্টমস অফিসার অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) এর সহসভাপতি মাহবুব হোসাইন এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি উল্লেখিত আন্দোলনের বিষয়ে কিছু না বললেও কাস্টমস হাউসগুলোতে বহিরাগতদের বিষয়ে জানান, এগুলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ তাদের সুবিধার্থে রেখেছেন। তাই তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য জানান। আর বাংলাদেশ কাস্টমস অফিসার অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) এর নেতা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ওরফে মজিবুর রহমান প্রতিবেদকের ফোনে ফোন করলে উল্লেখিত সরকার বিরোধী আন্দোলন ও তদবির বাণিজ্য ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের পুরো নাম ও অফিসের ঠিকানা জানতে চেয়ে তিনি কোন কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এমএসএম / এমএসএম

আবদুল্লাহপুর-টঙ্গী সড়কে বেইলি ব্রিজ স্থাপন ও দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

ওয়ারিতে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান, অবৈধ নির্মাণাধীন ভবনে উচ্ছেদ ও মিটার জব্দ

ইসলামী আন্দোলনের এমপি প্রার্থী ঢাকা-১১ আসনে ফজলে বারী মাসউদ ও ঢাকা-১৮ আসনে আনোয়ার হোসেন

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার আয়োজনে “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মামলায় নাম জড়িয়ে ব্যবসায়ী আকবর’কে হয়রানি,প্রশাসনীক চার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ

গুলশান-বনানীতে মার্ডারের পরও থেমে নেই স্পা ও বিভিন্ন লাউঞ্জের নামে অবাধ অপরাধচক্র

ব্যবসায়ী রাজু’কে উদ্দ্যোশ্য প্রণোদিত মামলা, ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ

তরুণ সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন: সংবাদ পেশা থেকে মানবসেবার অগ্রদূত

জনগণ যেদিকে চায় বিএনপি সেদিকে থাকবে: মোস্তফা জামান

শ্রমিকের অধিকার পূরণ না করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা হবে না-জোনায়েদ সাকি

ডেমরা রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভুমি) জাকির হোসেনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ভুমি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ

শূন্য থেকে শুরু করা শাকিব এখন সফল মার্কেটিং উদ্যোক্তা
