আত্মহত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু!
ধর্মপাশায় কিরোশীর মৃত্যু নিয়ে সমালোনার ঝড়
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় হিন্দু ছেলের গণধর্ষণের শিকার হয়ে মুসলিম মেয়ের বিষপাণে আত্মহত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু? এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন গণধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা আবার কেউ বলছেন স্বাভাবিক মৃত্যু। অন্যদিকে স্বজনরা বলছেন মানসিক সমস্যায় স্বাভাবিক মৃত্যু। গত ২ সেপ্টেম্বর ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের পাথারিয়াকান্দা গ্রামে একটি মেয়ের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড়ও বইছে এবং বিষয়টির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর আসল রহস্য উন্মোচনের দাবি স্থানীয়দের। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, পাথারিয়াকান্দা গ্রামের সুবল বর্মণের সাথে এক গ্রামেই এক কিশোরীর প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তারই জের ধরে গত ১ সেপ্টেম্বর পাথারিয়া কান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুবল বর্মণসহ তার বন্ধু-বান্ধবদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী। গণধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হলে লজ্জা সইতে না পেরে গত ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে বিষপানে আত্মহননের পথ বেছে নেয় ওই কিশোরী। ওই ঘটনায় ‘সত্যেরজয় চিরদিনরয়’ নামক ফেসবুক আইডিতে হিন্দু প্রেমিক সুবল বর্মণ ও তার সহযোগী সত্যেন্দ্র বর্মণের ছেলে লিটন বর্মণ, জগদীশ বর্মণের ছেলে যিশু বর্মণ ও রবি বর্মণের ছেলে লিটন বর্মণ গণধর্ষণ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
নিহত কিশোরীর চাচা কেনু মিয়া জানান, আমার ভাতিজির পেটের বেদনা ছিল এবং মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল। বিষ খেয়ে মারা যায়নি। এমনিতেই মারা গেছে। ধর্ষণের বিষয় টিআমার জানা নেই।
ধর্মপাশা থানার এসআই সোহেল জানান, একটি মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং নিহতের পিতা-মাতা ও স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি, মেয়েটির মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল এবং গত ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে পেটেব্যথায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা কিংবা গণধর্ষণের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে। যেহেতু নিহতের পিতা-মাতা কিংবা স্বজনদের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না কিংবা বিষপাণে আত্মহত্যা করেছে তারও লক্ষণ পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গেও পাঠাতে দেয়নি। তাই এ বিষয়ে কোনো অপমৃত্যু মামলা হয়নি।
এ ব্যাপারে সুবল বর্মণ জানান, নিহত কিশোরীর সাথে আমার কিংবা আমাদের বন্ধু-বান্ধবের কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমি গজারিয়ায় জাল দিয়ে মাছ ধরি। বাড়িতে খুবই কম সময় থাকি। আর অন্য বন্ধু-বান্ধবরা বিভিন্ন স্থানে থাকে। ওই কিশোরীর মাথায় সমস্যা ছিল বলে শুনেছি। কিভাবে মারা গেছে তাও জানি না।
ধর্মপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরী জানান, পাথারিয়া কান্দা গ্রামে একটি মেয়ে মানসিক সমস্যায় ছিল এবং স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আমার পুলিশ কর্মকর্তা পাঠিয়ে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছিল। বিষ খাওয়া কিংবা গণধর্ষণের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এমএসএম / জামান