গুলশান-বনানীতে মার্ডারের পরও থেমে নেই স্পা ও বিভিন্ন লাউঞ্জের নামে অবাধ অপরাধচক্র

রাজধানীর গুলশান-বনানী—যেখানে দেশের নামকরা ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও তারকারা বসবাস করেন, সেই অভিজাত এলাকাতেই দিনদুপুরে দাপটের সঙ্গে চলছে মাদক, দেহব্যবসা ও ব্ল্যাকমেইলের মতো অপরাধ। নামমাত্র স্পা, বিউটি পার্লার বা রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের ব্যবসা চললেও কার্যত কোনো বাধা নেই। এমনকি সম্প্রতি মার্ডারের মতো স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটার পরও থেমে যায়নি এই দৌরাত্ম্য।
গত সপ্তাহে গুলশানের একটি সীসা লাউঞ্জকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এখনো আলোচনার কেন্দ্রে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলশান ও বনানি এলাকায় এখন শতাধিক স্পা ও সীসা লাউঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। অধিকাংশ ব্যবসা আবাসিক ভবনের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে পরিচালিত হয়। দিনের বেলায় শান্ত পরিবেশ, রাতে সেখানে চলে চরম উচ্ছৃঙ্খলতা।
গুলশান-২ এর ২৪ নম্বর রোডের ৯১/বি ভবনটি যেন প্রকাশ্য যৌনপল্লীতে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্দ্বিধায় চলছে দেহব্যবসা। এই চক্র পরিচালনা করছে হীরা, মিজান ও মীরাজ নামের তিনজন। অন্যদিকে রোড ৪১–এর ছোঁয়া বিউটি পার্লারের দ্বিতীয় তলায় কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তি একই অপরাধ চালাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ৯৫ নম্বর রোডের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলাতেও স্পার আড়ালে পতিতাবৃত্তি চালাতেন। উত্তর সিটি করপোরেশন একসময় সেই ভবন সিলগালা করলেও পরবর্তীতে কুদ্দুস তালা ভেঙে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন।
রোড ৪৫–এ ‘অধরা থাই স্পা’র আড়ালে নিয়মিত দেহব্যবসা চলে, যার মালিক রত্না আক্তার। গুলশান-২ এর রোড ৪৭, বাড়ি ২৫–এ মোক্ষীরানী পায়েল নামে এক নারী দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে আবাসিক ভবনের ভেতরেই মিনি পতিতালয় চালাচ্ছেন। বনানীর ৩ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়িতেও পায়েল নামের এক আওয়ামী সন্ত্রাসী একইভাবে মাদক ও দেহব্যবসা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া গুলশান থানার সাবেক ওসি মাহমুদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে র্যাব-১ এর সোর্স পরিচয় দিয়ে রবি টাওয়ারের পাশের একটি আবাসিক ভবনের দুটি ফ্লোরে স্পা চালাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই স্পার আড়ালেও চলে দেহব্যবসা এবং শাহ আলম নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন।
এসব স্থাপনার বেশিরভাগেরই নেই কোনো বৈধ অনুমতি বা স্বাস্থ্য সনদ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম মোস্তাক জানিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে কখনো সীসা লাউঞ্জ বা স্পার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই, কিন্তু বাস্তবে দেখছি এসব এখন পুরোপুরি নেটওয়ার্ক হয়ে গেছে। একাধিক স্তরে বাধা আসে।”
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আহাম্মদ বলেন, “সীসা লাউঞ্জের কোনো অনুমতি সরকার দেয় না। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ। আমরা কিছু লাউঞ্জে মামলা দিয়েছি, কিন্তু অন্যান্য সংস্থার নিষ্ক্রিয়তার কারণে তা থামানো যাচ্ছে না।”
গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার তারেক মাহমুদ জানান, “যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাই, সঙ্গে সঠিক ঠিকানা থাকে, আমরা ব্যবস্থা নেব। ঠিকানা দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।”
তবে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো—গুলশান থানার কমিশনার অফিসের সামনেই ১৭ নম্বর রোডের জাতীয় পার্টির অফিসের সামনের ভবনের নিচ থেকে তিন তলা পর্যন্ত চলছে স্পা ও সীসা লাউঞ্জ, অথচ প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো অভিযানের খবর মেলেনি।
এতে প্রশ্ন উঠেছে—গুলশান ও বনানীর মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কীভাবে এসব স্পা, লাউঞ্জ ও পতিতালয় বছরের পর বছর প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে চলে? বাস্তবতা হলো, চোখ এড়িয়ে নয়—প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এসব কর্মকাণ্ড। মাসোহারার বিনিময়ে নিশ্চুপ থাকা এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের ছত্রছায়ায় জমজমাট হয়ে উঠেছে এই অপরাধচক্র।
এমএসএম / এমএসএম

ওয়ারিতে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান, অবৈধ নির্মাণাধীন ভবনে উচ্ছেদ ও মিটার জব্দ

ইসলামী আন্দোলনের এমপি প্রার্থী ঢাকা-১১ আসনে ফজলে বারী মাসউদ ও ঢাকা-১৮ আসনে আনোয়ার হোসেন

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার আয়োজনে “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মামলায় নাম জড়িয়ে ব্যবসায়ী আকবর’কে হয়রানি,প্রশাসনীক চার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ

গুলশান-বনানীতে মার্ডারের পরও থেমে নেই স্পা ও বিভিন্ন লাউঞ্জের নামে অবাধ অপরাধচক্র

ব্যবসায়ী রাজু’কে উদ্দ্যোশ্য প্রণোদিত মামলা, ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ

তরুণ সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন: সংবাদ পেশা থেকে মানবসেবার অগ্রদূত

জনগণ যেদিকে চায় বিএনপি সেদিকে থাকবে: মোস্তফা জামান

শ্রমিকের অধিকার পূরণ না করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা হবে না-জোনায়েদ সাকি

ডেমরা রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভুমি) জাকির হোসেনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ভুমি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ

শূন্য থেকে শুরু করা শাকিব এখন সফল মার্কেটিং উদ্যোক্তা

ইউনুস সরকারকে উৎখাতে কাফনের কাপড় পরে আন্দোলকারীদের অবৈধ সম্পদের সন্ধানে গোয়েন্দারা
