চট্টগ্রামে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চুরি মামলা, উদ্ধারকৃত দুই সিএনজি গায়েব!

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ছিনতাই হওয়া সিএনজি সিএনজি অটোরিকশা কর্ণফুলী থেকে উদ্ধার হলেও চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, উদ্ধার করা ৬টি সিএনজির মধ্যে থানায় জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে মাত্র ৪টি। বাকি দুইটি সিএনজি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, এ ঘটনা ঘটেছে ওসি মুহাম্মদ শরীফের নির্দেশে দুই এসআইয়ের প্রত্যক্ষ যোগসাজশে। অথচ পুলিশের দাবি, মামলা হওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই তারা ছিনতাই হওয়া সিএনজি উদ্ধার করে এবং এক সক্রিয় চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ভিন্ন চিত্র।
গত ২১ আগস্ট দুপুরে কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের বাঁশখালী বিল্ডিং থেকে আনোয়ারার আব্দুল করিম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় বিল্ডিংয়ের পার্কিং থেকে পুলিশ চারটি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করার কথা জানালেও স্থানীয় ওসমান সরোয়ার জানান, সেখানে মোট ছয়টি সিএনজি ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন, দুই এসআই শফি উল্লাহ ও পিএসআই ইকবাল হোসেন গাড়ির মালিকানা দাবি করা হেলালের সঙ্গে বাসায় উঠে দ্বিতীয় তলায় গোপন বৈঠক করেন। বৈঠকের পর দুইটি সিএনজি আর থানায় যায়নি।
ছিনতাই হওয়া সিএনজির মালিক মো. রফিক অভিযোগ করেন, গাড়ি ছিনতাইয়ের মূল হোতা হেলাল উদ্দিনকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পেলেও গ্রেপ্তার করেনি। বরং তাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ‘মা–বাবার দোয়া’ ও ওয়াসিম নাম লেখা দুটি সিএনজি পরে থানার তালিকায় রাখা হয়নি। এক শ্রমিক নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গাড়ি দুটি রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গোপন আঁতাত করে।
এছাড়া মামলার এজাহার নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বাদী রফিক বলেন, তিনি স্পষ্টভাবে লিখিয়েছিলেন গাড়িটি আনোয়ারার চেয়ারম্যান ঘাটা থেকে অস্ত্রের মুখে ছিনতাই হয়েছে। কিন্তু পুলিশ মামলার কাগজে উল্লেখ করেছে, গাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ডাকপাড়া এলাকায় চা খাওয়ার সময় চুরি হয়েছে। ভুক্তভোগীর বক্তব্য উপেক্ষা করে পুলিশ নিজের মতো করে মামলা সাজিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব ঘটনায় পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, উদ্ধার অভিযান ও মামলার নথি উভয় ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে কর্ণফুলী থানা পুলিশ। ফলে পুলিশি কর্মকাণ্ডের ওপর জনআস্থা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
স্থানীয় চালক ও ভুক্তভোগীদের দাবি, পুলিশের এ ধরনের ভূমিকা চোরাই সিএনজি সিন্ডিকেটকে আরও উৎসাহিত করছে। গায়েব হওয়া দুই সিএনজির বাজারমূল্য আনুমানিক আট লাখ টাকা। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে পুলিশের একটি অংশ অপরাধীদের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি শুধু আইনের শাসনকেই দুর্বল করবে না, বরং চোরাই সিএনজি সিন্ডিকেট ভাঙতে পুলিশের সক্ষমতা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাই তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দায় নির্ধারণ এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা জরুরি।
কর্ণফুলী থানার এসআই মো. শফি উল্লাহ বলেন, বাদি এজাহারে যা লিখেছে তাই। আমরা কিছু জানি না। আপনারা কিছু বলতে চাইলে সরাসরি কথা বলব। তবে ৬টি সিএনজি আটক করার পরও কেন মাত্র ৪টি জব্দ দেখানো হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দেননি। এ ঘটনায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পিএসআই মো. ইকবাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে বারবার কেটে দেন। তবে গত ২১ আগস্ট তিনি নিজেই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মামলা হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে ৪টি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করেছেন।
অথচ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সেদিন মোট ৬টি সিএনজি আটক হয়েছিল। আবার মামলার বাদী রফিকুল ইসলামের দাবি, ৫টি সিএনজি আটক করেছিলো, তার ছিনতাই হওয়া সিএনজি ছাড়া। তাহলে সংখ্যার এ অমিল কেন—তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
কর্ণফুলী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আনোয়ারায় সিএনজি ছিনতাই হলেও উদ্ধার হয়েছে কর্ণফুলীতে, তাই মামলাও হয়েছে এখানে। অপরাধের ধরণ অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ৬টি সিএনজি আটক করার পর মাত্র ৪টি জব্দ দেখানো হয়েছে কেন—সে বিষয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি।
এ বিষয়ে বাঁশখালী বিল্ডিংয়ের মালিক হাজী মো: ইয়াছিন বলেন, আমাদের বিল্ডিংয়ে কিছু সিএনজি চালক ভাড়ায় থাকেন, তারাই এসব সিএজিগুলো পার্কিংয়ে রেখেছে, তারা কিভাবে, কখন এনেছে তা তারাই ভালো বলতে পারবে।
এব্যপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট সেলিম চৌধুরী বলেন, পুলিশ যখন অপরাধীর সহযোগী হয়ে কাজ করে তখন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়,
এ মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ যদি মুল ঘটনাকে আড়াল করে থাকে তবে মুল অপরাধীকে সেইফ করেছে, চোরাই পন্য যার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় চুরির দায় তার উপর বর্তায়। এটাই
আইনের বিধান।
এখানে পুলিশ চোরাই পন্যের হেফাজতকারীকে মামলার আসামী করতে পারে, তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনতে পারতো কিন্তু পুলিশ তা না করে অপরাধীকে সহায়তা করছে বলে মনে করি। সূতরাং সংশিষ্ট পুলিশ অপরাধীদের সহযোগী হিসেবে সমানভাবে অপরাধী। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।
এমএসএম / এমএসএম

সান্তাহারে ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রাইভেট কারসহ দুইজন গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে গরুর গাড়ি মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে সভা

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে গাছের চারা বিতরণ

দুই সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত

পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে চটের ব্যাগ ব্যবহার করুন- কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোনাগাজীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গরু চোরসহ গ্রেফতার-০৪, চোরাই গরু উদ্ধার

সীমান্তে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এভাবেই নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ

টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি, শিক্ষার্থী নেই তবুও চলছে এমপিওভুক্ত কলেজ

জয়পুরহাটে ব্র্যাকের উদ্যোগে ১৩৯ জন গ্রাহকের মাঝে তেলাপিয়া মাছের পোনা বিতরণ
