দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চট্টগ্রাম দিয়ে পালাতে গিয়েও ব্যর্থ আলমগীর কবির ও রায়হান কবির

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও তার ছেলে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রায়হান কবির যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক পরিদর্শনে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার তথ্য উঠে আসায় তারা দেশত্যাগে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে জানাগেছে। তারা সিঙ্গাপুর পালিয়ে যেতে পারেন বলে জানিয়েছে বিএফআইইউ, সাউথইস্ট ব্যাংক ও দুদকের একাধিক সূত্র।
সম্প্রতি আলমগীর কবির ও রায়হান কবির চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে বিদেশে যেতে চাইলেও তারা সফল হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ বেশকিছু অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক পরিদর্শনে বাংলাদেশ থেকে ১৯৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে রাইয়ান কবিরের বিরুদ্ধে। দেশবন্ধু গ্রুপ ও জারা জামান টেকনোলজির নামে এলসি খুলে এ অর্থ বিদেশে নেওয়া হয়। অর্থ পাচারের পাশাপাশি রাইয়ান কবিরের শ্বশুরের প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতির তুলনায় ১৩ কোটি টাকা বেশি সুদ মওকুফ দিয়ে আত্মসাৎ, ১০ টাকার শেয়ার ২৫ টাকায় কেনাসহ নানা জালিয়াতির তথ্যও পাওয়া গেছে।
আলমগীর কবিরের ছেলে রাইয়ান কবির এবং তাঁর পুত্রবধূ নুসরাত নাহারের নামে ২০১২ সালে সিঙ্গাপুরে ‘আর অ্যান্ড এন হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড’ কোম্পানি খোলা হয়। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৪ লাখ সিঙ্গাপুরি ডলার। দেশ থেকে বৈধ উপায়ে এ অর্থ নেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংক ওই কোম্পানির অনুকূলে বিপুল অঙ্কের এলসি খুলেছে। এর মধ্যে ১৭টি এলসির বিপরীতে এক কোটি ৫৯ লাখ ১১ হাজার ৫৮৪ ডলার পাচার হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিএফআইইউ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যার পরিমাণ ১৯৪ কোটি টাকা।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের নির্দেশে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই এই বিনিয়োগ করা হয়। বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রি-আইপিও শেয়ার কেনার সময় ও টাকা প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া এক কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যাংকের ‘প্রমোশনাল ব্যয়’ হিসেবে বিকলন করা হয় যা সন্দেহজনক। প্রি-আইপি প্লেসমেন্টের প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া অর্থ শেয়ার মানি ডিপোজিট হিসাবে জমা না করে এই টাকা পরস্পরের যোগসাজশে ভাগবাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, পরস্পরের যোগসাজশে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ঋণ জালিয়াতি, বিনিয়োগের আড়ালে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে আলমগীর কবির, তাঁর পুত্র রাইহান কবির এবং পুত্রবধূ নুসরাত নাহারসহ ব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা, ক্রেডিট কমিটি, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং বিভাগ, ট্রেজারি বিভাগ, সিআরএম বিভাগ, সিএফও এবং শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব অনিয়মে সহযোগিতা করেছেন। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের এসব তথ্য উত্থাপন করে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে জানাতে ইতোমধ্যে বর্তমান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।
আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান শুরু হওয়ায় তারা পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে সূত্রটি। এরই মধ্যে দুদক তাদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তারা হাজির হননি। বর্তমানে আলমগীর কবির ও তার ছেলে রায়হান কবিরের ব্যবহৃত মোবাইল প্রায়ই বন্ধ পাওয়া যায়। গণমাধ্যমকর্মী পরিচয়ে একাধিকবার ম্যাসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর মিলেনি।
ইতোমধ্যে আলমগীর কবির ও তার ছেলে রায়হান কবিরের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন, অর্থ পাচার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
৪ আগস্ট দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক আজিজুল হক অভিযোগ তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনগুলো আদালতের কাছে উপস্থাপন করেন দুদক প্রসিকিউটর। পরে তা মঞ্জুর করা হয়।
আবেদনে বলা হয়, আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উক্ত ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও তার ছেলে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রায়হান কবির যে কোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা বলেন, আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে আদালতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন অপারেশনস) এর কড়া নির্দেশনা রয়েছে তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে। তাদের কোনো ভাবেই দেশত্যাগ করতে দেওয়া হবে না।
এমএসএম / এমএসএম

মেট্রোপলিটন হিন্দু কর্মজীবী সমবায় সমিতির অর্থ তছরুপ

উত্তরার গণসমাবেশে আনোয়ার হোসেনের হাতে হাতপাখা তুলে দিলেন চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করিম

উত্তর সিটির টেন্ডারবাজিতে এখনো আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দৌরাত্ম

চট্টগ্রাম দিয়ে পালাতে গিয়েও ব্যর্থ আলমগীর কবির ও রায়হান কবির

ধর্ষণের মামলায় এএসপি নাজমুস সাকিব গ্রেপ্তার হচ্ছে না, চাকরিতে থেকে তদন্ত প্রভাবিত করছেন

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী: দায় এড়ানোর কৌশল খুঁজেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে

উত্তরার জসীমউদ্দীনে যানজট নিরসন: আলোচনায় টিআই জলিল

ওয়ার্ড নেতা বিল্লাল হোসেনের দলীয় পদ স্থগিত

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে CLAS এর আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ফ্যাসিস্ট বিরোধী মিছিল- ম্লোগান

খুব শিগগিরিই এম এ কাসেমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে দুদক

পোলার আইসক্রিম ২৯ তম স্কুল হ্যান্ডবলে থাকছে ঘরে এবং বাহিরে আয়োজন
