ঠাকুরগাঁওয়ে সুখ-সমৃদ্ধি কামনায় ঠাকুরগাঁওয়ে ওরাঁও সম্প্রদায়ের কারাম উৎসব
হাজারো বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে বর্ণাঢ্য উৎসবমুখর পরিবেশে ঠাকুরগাঁওয়ে পালিত হলো ওরাঁও সম্প্রদায়ের কারাম উৎসব। আদিবাসী ওরাঁওদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব এটি। ফসলের ভালো ফলন, পরিবার-পরিজনের সুস্বাস্থ্য এবং সমাজের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় প্রতি বছর ভাদ্র মাসে এই উৎসব পালন করা হয়।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের পাঁচপীরডাঙ্গা, রুহিয়া, বালিয়াডাঙ্গীসহ বিভিন্ন স্থানে এবারও ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন হয়। স্থানীয় জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, সামাজিক সংগঠন ও যুবসমাজের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও লোকসঙ্গীত পরিবেশনা। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবাই অংশ নেন আনন্দ-উৎসবে।
কারাম উৎসবকে ঘিরে দিনকয়েক আগেই ওরাঁও পল্লিগুলোতে প্রস্তুতি শুরু হয়। কিশোর-কিশোরীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে দলে দলে গান ও নাচের মহড়া দেয়। ঘরে ঘরে চলে খাবার তৈরির আয়োজন। বিশেষত চালভিত্তিক খাবার এবং নানা রকমের লোকজ খাদ্য উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ।
উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হলো কারাম গাছের ডাল। বিশ্বাস করা হয়, কারাম গাছ শক্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধির প্রতীক। উৎসবের দিন যুবকরা বন থেকে কারাম গাছের শাখা নিয়ে আসে। গ্রামের প্রবীণ ও পুরোহিতরা বিশেষ মন্ত্রপাঠ ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাখাটি পূজা করেন। এরপর সেটি গ্রামের মাঝখানে পুঁতে দেওয়া হয় এবং ঘিরে শুরু হয় সারারাত নাচগান।
মেয়েরা কণ্ঠে তুলেন ঐতিহ্যবাহী কারাম গান—যার মূল সুরে থাকে দুঃখ-কষ্ট ভুলে সুখ-শান্তির প্রার্থনা। ছেলেরা ঢোল, মাদল, করতাল, শিঙ্গা বাজিয়ে সঙ্গত দেন। রাতভর চলে তাল-লয়ের মেলবন্ধন। এতে শুধু ওরাঁও নয়, পার্শ্ববর্তী সাঁওতাল, মুন্ডা, মাহাতোসহ অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর মানুষও যোগ দেন।
উৎসবের চূড়ান্ত পর্যায়ে ভোররাতে বা পরদিন সকালে পূজিত কারাম গাছের ডাল দল বেঁধে গিয়ে নদী বা পুকুরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এই আচারকে বলা হয় কারাম বিসর্জন। বিশ্বাস করা হয়, গাছের সঙ্গে গ্রামের দুঃখ-দুর্দশা দূরে চলে যায় এবং নতুন বছরে ঘরে ঘরে আসে সুখ-সমৃদ্ধি।
কারাম উৎসবকে ঘিরে একদিকে যেমন ধর্মীয় বিশ্বাস জড়িত, অন্যদিকে তেমনি এটি সামাজিক ঐক্য ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। পরিবার থেকে শুরু করে পুরো গ্রামজুড়ে সবাই মিলে অংশ নেয়য়া সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মিলনমেলার আবহ সৃষ্টি করে।
স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবছরই উৎসবে যোগ দেন। তারা মনে করেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি রক্ষার পাশাপাশি বহুসংস্কৃতির বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করে। পর্যটন উন্নয়ন ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও কারাম উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মত দেন অনেকে।
এমএসএম / এমএসএম
অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখলেই ব্রাশফায়ারের নির্দেশ দিলেন সিএমপি কমিশনার
চাঁদপুরে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ৫ সদস্য আটক
বগুড়ার শাজাহানপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
পত্রিকা পরিবেশক শফির পিতার সুস্থ্যতা কামনা
জুয়া খেলায় হেরে পার্টনারকে হত্যা, আসামীর যাবজ্জীবন
কুমিল্লায় টাস্কফোর্সের অভিযানে প্রায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ
নবীনগরে ডাকাতি হওয়া সারের জাহাজ উদ্ধার
পূর্বধলায় গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার
নড়াইলে অ্যারাইজ আইএনএইচ জাত ধানের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
কেরানীগঞ্জে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে শেষ হলো সাদ পন্থীদের তাবলীগের জোড়
সর্বোচ্চ প্রসিকিউশন দাখিল করায় সম্মাননা পেলেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে অফিসার ইনচার্জ
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের আটপাড়া উপজেলা পরিদর্শন