মেট্রোরেল প্রকল্প ধ্বংসের মিশন
এমডি ফারুক আহমেদের স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে অনিশ্চয়তায় চলমান প্রকল্পগুলো
ঢাকার যোগাযোগের এক আশির্বাদের নাম মেট্রোরেল। অল্প সময়েই মেট্রোরেল পেয়েছে মানুষের জনপ্রিয়তা। একসময় মতিঝিল থেকে উত্তরা যেতে নগরবাসীকে পোহাতে হতো অতিষ্ঠ দুর্ভোগ। এখন সেই আগের ভোগান্তি যেন নিয়েছে চির বিদায়। মতিঝিল-উত্তরার পথে আগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লাগলেও এখন মেট্রোরেলে সময় লাগছে মাত্র ৩১ মিনিট। সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্য করেছে যাতায়াত ব্যবস্থার। কিন্তু সেই আরামদায়ক মেট্রোরেলের অশুভ শক্তি হিসেবে রূপ নিচ্ছে বর্তমান মেট্রোরেলের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে বর্তমানে চলাচলকারী মেট্রোরেল ও চলমান প্রকল্পগুলো এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এছাড়া পাতাল ও উড়াল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। বেশকয়েকটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এমডি ফারুক আহমেদ যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশের মেট্রোরেলের উন্নয়নের চেয়ে বিদেশের স্বার্থটাই তিনি বড় করে দেখছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।ফারুক আহমেদ হাসিনা সরকারের পতনের পর যোগদান করলেও তিনি এখন চেয়ারে বসে বাস্তবায়ন করছেন ভারতের এজেন্ডা। ভারতীয় কোম্পানিকে মেট্রোরেলের দায়িত্ব তুলে দিতে তিনি এখন ব্যস্ত। ভারতীয় মেট্রোরেলে চাকরি করা ফারুক আহমেদ ভারতের মায়ায় আচ্ছন্ন। বাংলাদেশের পুরোনো বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী জাপানকে বাদ দিয়ে ভারতের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করেই অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্টধারী নাগরিক, ভারতীয় আধার কার্ডধারী ব্যক্তি ফারুক আহমেদ তথ্য গোপন করে বসে যান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চেয়ারে। চেয়ারে বসেই তিনি শুরু করেন এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ। বর্তমান এমডি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অফিসারদের সাথে পরামর্শ না নিয়ে কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাদের পরামর্শে কয়েকজনের বিরুদ্ধে পদ শূন্য ঘোষণা করে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তার এসব সিদ্ধান্তে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমডি ফারুক আহমেদ ঠিকাদার পেশায় ছিলেন। করতেন ডেভেলপার ব্যবসা। তারপর বিদেশে পাড়ি দেন। সিডনি মেট্রোতে প্ল্যানার হিসেবে প্রায় দুই বছর, হংকংয়ে দুই বছর, সউদী আরবে এক বছর এবং ভারতে প্রায় দুই বছর কর্মরত ছিলেন। ডোনার এজেন্সীর সাথে সৌজন্যতা বহির্ভূত আচরণ, জাপানের সাথে লোন চুক্তির শর্তাদির প্রতি না জেনে অবজ্ঞা প্রদশর্ন ও ব্যজ্ঞাত্মকমূলক উক্তি প্রদর্শন করেন। পরামর্শক, সহকর্মীসহ সবার সাথে সৌজন্যতা বহির্ভূত আচরণ করেন সব সময়। যোগদানের পর থেকে নিজের পছন্দের লোক নিয়োগে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের টিম লীডারকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অপসারণের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। এগুলো ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদের মোবাইলে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি।
জানা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা শহরজুড়ে মেট্রো মহাপরিকল্পনা পূর্ণ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও যথাসময়ে শেষ হচ্ছে না মেট্রোরেলের কাজ। রাজধানীতে মেট্রোরেলের নতুন দুটি লাইনের নির্মাণকাজে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে দেওয়া প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এমআরটি লাইন-১-এর কাজকে মোট ১২টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভাগের কিঞ্চিৎ অগ্রগতি আছে, বাকিগুলোর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। এসব বিভিন্ন প্যাকেজের কাজ গত ছয় মাস ধরে এগোচ্ছে না। আর এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর)-এ মোট ১০টি প্যাকেজ রয়েছে। লাইন-১-এর তুলনায় লাইন-৫-এর অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। এমন পরিস্থিতিতে কাজের ধীরগতি নিয়ে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানে এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
ইতোমধ্যেই মেট্রোরেল-১ এবং মেট্রোরেল-৫ (উত্তর লাইন) প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাপান দূতাবাস। বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্প দুটির বাস্তবায়ন পর্যায়ে বিলম্ব হচ্ছে। প্রকল্পের ঋণের অর্থ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আলাদা করে রাখা আছে। এ অর্থ ব্যবহার না হলে তাদের ঋণ শৃঙ্খলায় সমস্যা হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে কাজের গতি বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়। প্রকল্প দুটির জন্য জাপানি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্প দুটি নগর যোগাযোগ সহজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় প্রকল্প দুটির নির্মাণ কাজ শুরু করা প্রয়োজন বলে জানায় তারা। এমআরটি-১ চালু হলে এবং উভয় রুটে দৈনিক আট লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এমআরটি লাইন-৫ আওতায় হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন নির্মাণের কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করা কথা ছিলো। ২০২২ সালের জুনে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা এমআরটি-৫ উত্তর লাইন নির্মাণে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ নিশ্চিত করে। এমটিআর-১ প্রকল্পে জাইকার প্রতিশ্রুত ঋণের পরিমাণ ৫৪ কোটি ডলার।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত। তারা আমাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী। জাপান বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার এবং তার সরকার এ সম্পর্ক আরো বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশটি অনেক বছর ধরে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।
এমএসএম / এমএসএম
এমডি ফারুক আহমেদের স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে অনিশ্চয়তায় চলমান প্রকল্পগুলো
মিরপুরে আগুনের সূত্র এখনো নিশ্চিত নয় ফায়ার সার্ভিস
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকারের ইন্তেকাল
জেনেভা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত
রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে ছাত্রদল
এম্বুল্যান্স মালিক ও চালকদের সম্মাননা প্রদান করলেন বিএনপি নেতা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন
উত্তরায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৫ উদযাপন
ঢাকা -১৯ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ডাঃ দেওয়ান মোঃ সালাউদ্দিন পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ
ফারইষ্ট লাইফের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
রাজউক যান্ত্রিক সহকারী জাকির হোসেনের দুর্নীতি- অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কতৃপক্ষ নিরব
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান
পুরান ঢাকায় জবি ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা