আবারও সক্রীয় ফ্যাসিস্ট যুগের বীজ সিন্ডিকেট, বিপাকে কৃষক
সরকারি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য বীজ ক্রয় ও সরবরাহে আবারও অনিয়ম ও সিন্ডিকেটবাজির অভিযোগ উঠেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)–এর সমন্বয়ে চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের রবি মৌসুমে সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, শীতকালীন পেঁয়াজ, খেসারি ও আড়হড়সহ বিভিন্ন ফসলের বীজ আমদানির প্রক্রিয়ায় এ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, কৃষকদের প্রণোদনা বীজ হিসেবে প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিএডিসি ও বিনা’র পাশাপাশি উদ্যোক্তা ও নিবন্ধিত বীজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরাসরি বীজ ক্রয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। গমের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ বীজ বিএডিসি এবং ১০ শতাংশ উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ক্রয় করার কথা বলা হয়েছে।
তবে বিতর্ক দেখা দিয়েছে সূর্যমুখীর হাইব্রিড জাত নিয়ে। প্রজ্ঞাপনে কেবল তিনটি নির্দিষ্ট জাত—হাইসান-৩৩, সূর্য এসআর-২৪ এবং হাইসান-৩৬—উল্লেখ করা হয়েছে, যা মাত্র দুটি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধিত। এতে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি প্রজ্ঞাপনে কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির জাত উল্লেখ করা কতটুকু আইনসম্মত?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘সূর্য এসআর-২৪’ নামের জাতটির নিবন্ধন এমন একজন ব্যবসায়ীর নামে, যার হাইব্রিড বীজ উৎপাদন ও বিপণনে পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার নিজের নিবন্ধিত জাতকে প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন।
কৃষি খাতের একাধিক সূত্র জানায়, এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলে ‘একটি বিশেষ সিন্ডিকেটে’ গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন। এই সিন্ডিকে দীর্ঘদিন ধরে বিএডিসির বীজ সরবরাহের বাজার নিয়ন্ত্রণ করত। ২০২২–২৩ অর্থবছরে এই দুই প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের শীতকালীন পেঁয়াজ ও সূর্যমুখী বীজ সরবরাহ করে, যার ফলে হাজারো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংসদীয় কমিটি তদন্ত শেষে ওই প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবারও একই সিন্ডিকেটকে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিবন্ধিত বীজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কারণে তারা প্রণোদনা কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। এক উদ্যোক্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “মন্ত্রণালয়ে এখন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। যারা নিজেদের স্বার্থে নির্দিষ্ট কোম্পানির বীজের নাম প্রজ্ঞাপনে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এতে করে প্রকৃত উদ্যোক্তারা কাজ হারাচ্ছেন, কৃষকরাও ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রণোদনার বীজের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোম্পানির নাম উল্লেখ করা কৃষি আইন ও নীতিমালার পরিপন্থী। এতে প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত হয় এবং নিম্নমানের বীজ বাজারে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, প্রণোদনার নামে আবারও পুরনো সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে, যারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা দাবি করছেন, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “বীজ সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি প্রভাব খাটালে সেটি দুর্নীতি হিসেবে গণ্য হবে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
কৃষকদের দাবি, সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি যেন সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি না হয়—এমন পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই। তা না হলে আবারও নিম্নমানের বীজে ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা।
এমএসএম / এমএসএম
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শিখাচ্ছে পাথওয়ে
উত্তরায় SEDA ফাউন্ডেশনের ১৭তম মেধা যাচাইয়ে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় নকশা দাখিল ও অপসারণের নির্দেশ
হাতপাখা নির্বাচিত হলে ঢাকা-১৮ কে একটি মডেল সিটি হিসেবে গড়ে তুলা হবেঃ আলহাজ্ব আনোয়ার
ডেমরায় সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীর মত মতবিনিময় সভা
গণধোলাইয়ে মারা গেলো চোর, হত্যা মামলায় ফাঁসলো নারী সাংবাদিক
আত্মনিবেদিত রাজনীতিবিদ শেখ ফজলে বারী মাসউদ
যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত
গেমপ্লিফাই সফলভাবে আয়োজন করল অনসাইট স্পোর্টস কুইজ প্রতিযোগিতা
মাদক সন্ত্রাস প্রতিরোধে ঐক্যের ডাক, পরিবর্তনের অঙ্গীকার কামাল হোসেনের
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে রাজউকের জরুরি তৎপরতা