তানোরে কৃত্রিম সার সংকটে দিশেহারা কৃষক
রাজশাহীর তানোরে একশ্রেণির সার ডিলারের বিরুদ্ধে কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহলের দাবি, চলতি মৌসুমে সরকার নির্ধারিত দামে পর্যাপ্ত সার সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ কৃষকরা।
জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরিমাণ সার সংগ্রহে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকলেও কৃষকদের বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। এতে বিঘাপ্রতি চাষে খরচ বেড়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলস্বরূপ, কৃষকেরা আমন চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
সামনে বোরো মৌসুমকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই অসাধু সিন্ডিকেট। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দেড় যুগে এমন সংকট দেখা না গেলেও এবার কিছু অসাধু ডিলারের কারণে বোরো মৌসুমে বড় ধরনের সার সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু বোরো নয়, আলু চাষিরাও বাড়তি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বছর উৎপাদিত আলুর ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেকেই এবার চাষে অনীহা প্রকাশ করেছেন। কৃষকদের আশঙ্কা, এভাবে অতিরিক্ত দামে সার কিনতে হলে ঋণের বোঝা আরও বাড়বে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। স্থানীয় কৃষকদের ধারণা, এবার সার সংকটে উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অন্তত ২৫ শতাংশ কমে যেতে পারে।
বাজারে দেখা গেছে, গত দুই মাসে সব ধরনের রাসায়নিক সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ৫০ কেজির ডিএপি সার এক মাস আগেও যেখানে ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো, সেখানে বর্তমানে সেটি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকায়। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিএডিসির এমওপি প্রতি বস্তা ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা এবং টিএসপি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রশিদ ছাড়া বিক্রির অভিযোগও পাওয়া গেছে। রশিদ চাইলে অনেক ডিলার সার দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে দেশে রাসায়নিক সারের বার্ষিক চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫৭ লাখ ৮৫ হাজার টন। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ সরকারিভাবে আমদানি করা হচ্ছে এবং বাকি ২০ শতাংশ দেশের উৎপাদন থেকে সরবরাহ করা হয়। চলতি অর্থবছরে জুলাই মাসের চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের কাছে পর্যাপ্ত সার সরবরাহের পরও জাতীয়ভাবে ইউরিয়া মজুত রয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৬১৩ টন, টিএসপি ২ লাখ ১৭ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন এবং এমওপি ২ লাখ ৮১ হাজার টন।
তবুও মাঠপর্যায়ে সার সংকট সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। কৃষি সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, বোরো মৌসুমে উৎপাদন ব্যাহত হলে চাল আমদানি নির্ভরতা বাড়তে পারে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তানোরে প্রতিরাতে ট্রাক ও ভুটভুটিতে সার আসছে। একশ্রেণির ডিলার এসব সার কালোবাজারে বিক্রি করে এলাকায় অবস্থাপন্ন কৃষকদের সরবরাহ করছেন। এমনকি কালোবাজার থেকে আসা এসব সার আসল নাকি নিম্নমানের তা যাচাইয়ের সুযোগও নেই। কৃষকরা দাবি করেছেন, উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারের নৈশপ্রহরীদের দায়িত্ব দিতে হবে যাতে রশিদবিহীন কোনো সার আনা হলে তা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তানোরে বিসিআইসির ৯ জন ও বিএডিসির ২২ জন ডিলার রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, অধিকাংশ ডিলার বরাদ্দের সার গুদামে না নিয়ে মিলগেটেই বিক্রি করে দেন। তাদের মতে, বরাদ্দকৃত সার উত্তোলন, মজুদ ও বিক্রির সময় যদি সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে অনিয়ম অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Aminur / Aminur
চিলমারীতে ইউনি ব্লক সড়কে ধস
কুতুবদিয়ায় বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণে ৮ শিক্ষার্থী দগ্ধ
কেরানীগঞ্জ উপজেলার ৪৫টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে দুম্বার মাংস বিতরণ
প্রাথমিকে অনিয়মের ছড়াছড়ি, মান হারাচ্ছে শিক্ষার
রাণীনগরের একমাত্র শিশুপার্ক বেহাল দশা
তানোরে কৃত্রিম সার সংকটে দিশেহারা কৃষক
শেরপুরে ভূমি সেবার মানোন্নয়নে জেলা প্রশাসকের সদর ভূমি অফিস পরিদর্শন
ভূরুঙ্গামারীতে কৃষকের ১২শ কলা গাছ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা
কাউনিয়ায় বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ‘বিনাধান-১৭’ জাতের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
চাঁদপুরে ১০০ চালককে বিনামূল্যে হেলমেট প্রদান
রায়পুরে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক