অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে : ডিসি
খালেদা জিয়াকে মামলা দেয়া আশিকের নড়াইলে জুলাই আহত তালিকাভুক্তিতে হইচই
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে মামলা করা নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার সৈয়দ আশিক বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তি জুলাই আহত তালিকাভুক্ত হওয়া নিয়েই শুরু হয়েছে হইচই। এদিকে এ ঘটনার তদন্ত ছাড়াই এর দায় জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের ওপর চাপিয়ে পোস্ট করেন গুটিকয়েক সমালোচক।
তবে ঘটনার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন রকম তথ্য। সৈয়দ আশিক বিল্লাহ'র আহত তালিকাভুক্তির নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে আহতের এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম)-ভুক্ত হন। জুলাই অভ্যুত্থানকালে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সুবাদে আহত তালিকাভুক্ত হন তিনি। তবে সৈয়দ আশিক বিল্লাহ আন্দোলনের পক্ষে গিয়ে আহত হয়েছেন নাকি আন্দোলন দমনে গিয়ে আহত হন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল জেলা সিভিল সার্জন ও আহত তালিকা প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুর রশিদ বলেন, "তিনি আমাদের নড়াইল থেকে আহত তালিকাভুক্ত হননি। আমরা তার সম্পর্কে জানিও না। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে তিনি আহত এমআইএসভুক্ত হয়েছেন। কাজেই তার আহত তালিকাভুক্তির ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দায় নেই। তিনি ভুয়া জুলাই আহত হয়ে থাকলে এবং এ বিষয়ে প্রমাণাদি পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবো৷"
জুলাই আহতদের তালিকা প্রণয়ন প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জুলাই-আগস্টে আহত হয়ে যারাই এসেছেন, তাদেরই আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। এখানে কে কোন দলের হয়ে আহত হয়েছেন, সেটি আমরা দেখতে চাইনি। রোগী আসলে সেবা দেয়া আমাদের কর্তব্য। আর আহত তালিকাভুক্ত আমরা করিনি। হাসপাতালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দুইজন কো-অর্ডিনেটর ছিল। আহতদের এমআইএস
ভুক্ত করা তাদের কাজ। তারাই এসব যাচাই-বাছাই করেছে।
তবে নিজেকে প্রকৃত জুলাই আহত দাবি করে অভিযুক্ত সৈয়দ আশিক বিল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই আমি ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় সক্রিয়ভাবে যোগদান করে আহত হয়েছিলাম। আমার চিকিৎসা সনদসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মোতাবেক আমি প্রকৃত আহত ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইল জেলার মোট ৬৮ জন ব্যক্তি আহত জুলাইযোদ্ধা তালিকায় রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে নড়াইল জেলায় আন্দোলন করে আহত হন। আবার আহতদের বড় একটা ঢাকা, খুলনা বা অন্য জেলায় আন্দোলন করে আহত হন। এদের মধ্যে বিতর্কের শুরু হয় সৈয়দ আশিক বিল্লাহ আহত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে। এ ইস্যুতে পুনরায় আহত জুলাইযোদ্ধার তালিকা করার দাবিতে গেল ২৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কিছু সময় মানববন্ধন করেন ৩০-৪০ জন ব্যক্তি। মানববন্ধনের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিএনপি সংশ্লিষ্ট বেশকিছু নেতাকর্মীকে।
জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আহতদের তালিকা করা হয় দুই উপায়ে। প্রথমদিকে দেশের সকল সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরকারিভাবে নির্দেশ দেয়া হয় জুলাই অভ্যুত্থানকালে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ব্যক্তিদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস-এ (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। এমআইএসভুক্ত হাওয়ার পর তাদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নথিভুক্ত করে যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করা হয়। এরপর সেখান থেকে গেজেটভুক্ত করা হয়। তবে একটি মন্ত্রণালয়ের সীমিত কর্মকর্তাদের দিয়ে এত সংখ্যক আহতের সঠিক তদন্ত হওয়া দুরূহ বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে কাউকে আহত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা ত্রুটিপূর্ণ মনে হলে এবং এ বিষয়ে অভিযোগ ও প্রমাণাদি পাওয়া গেলে ভুয়াদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দ্বার উন্মুক্ত রয়েছে বলেও জানান তারা।
এদিকে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে গেজেটভুক্ত হলেও পরবর্তীতে ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান সহজ করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই আহতদের এমআইএস আইডি নিজ নিজ জেলায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে যারা সেসময় বৈরী পরিস্থিতির জন্য সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে পারেননি তারা নিজেদের চিকিৎসার কাগজপত্র, আহতের ছবি নিয়ে আহত তালিকা প্রণয়ন কমিটি বরাবর আবেদন জমা দিতে জুলাই আহত তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এক্ষেত্রে আহত তালিকা প্রস্তুত করার কমিটিতে জেলা প্রশাসক আহ্বায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার ইউএনও এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সমন্বয়করা দায়িত্ব পালন করেন। মূলত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সব জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন আসায় তারা আন্দোলনে নেতৃত্বদাতাদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করেই আহত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। ফলে কে আন্দোলনের পক্ষে গিয়ে সত্যিকারে আহত হয়েছেন, তা যাচাই করা এক-দুই জন কর্মকর্তার পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কেউ জুলাই আহত তালিকাভুক্ত হলে এ সংক্রান্তে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে বলে জানান নড়াইল জেলা প্রশাসক।
নড়াইলে জুলাইযোদ্ধাদের তালিকা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, "৫ আগস্টের আগে আমিতো নড়াইল জেলায় ডিসি ছিলাম না৷ কারা আন্দোলন করেছে আমিতো দেখিনি। অনেকে ঢাকা, খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল থেকে জুলাই আহত তালিকাভুক্ত হয়ে নড়াইলে তাদের আইডি স্থানান্তর করেছে। এখানে তো আমাদের করার কিছু নেই। আর যারা নড়াইলে আমাদের বরাবর আহত তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, সেসব কাগজ সিভিল সার্জন মহোদয়, নড়াইল সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করেছে। এরপরও আমরা কাউকে আহত তালিকাভুক্ত করার আগে স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে নিয়েছি যে, এই ব্যক্তি আন্দোলন করেছে কিনা। এত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তবুও কাউকে নিয়ে সন্দেহ হলে এ বিষয়ে কারো নিকট তথ্যপ্রমাণ থাকলে লিখিত অভিযোগ দিবে। আমরা সেটা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।"
এমএসএম / এমএসএম
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
চিকিৎসক সংকট ও অব্যবস্থাপনায় হাসপাতালই যেন রোগী
পটুয়াখালীতে টিউবওয়েল বসাতে গিয়ে মেলে গ্যাস, ছয় মাস ধরে জ্বলছে আগুন
পিরোজপুরে আফতাবউদ্দিন কলেজে নবীনবরণ ও বই বিতরণ অনুষ্ঠিত
ভূরুঙ্গামারীতে বন্যায় আগাম সতর্কবার্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সচেতনা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
বাঁশখালীতে পরিত্যক্ত দোকান গৃহ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার
সন্দ্বীপে রেডিও স্টেশন স্থাপনে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তাদের আগমন, মতবিনিময় সভা ও স্টেশনের জন্য স্থান পরিদর্শন
কুড়িগ্রামের রাজারহাট-আনন্দবাজার পাকা সড়ক দ্রুত সংষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নারীদের উন্নয়নে কাজ করবে সরকারঃ মিঠু
কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ
আত্রাইয়ে মোটরসাইকেল চোরকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ
পাবনায় মাদকের টাকা না পেয়ে নামাজরত পিতাকে কুপিয়ে হত্যাঃ ছেলে আটক