ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

শ্যোন অ্যারেস্ট মডেল পিয়াসার রিমান্ড শুনানি রোববার

মুনিয়া হত্যা : নিম্ন আদালতে যেতেই হচ্ছে বসুন্ধরার এমডিকে


আব্দুল লতিফ রানা photo আব্দুল লতিফ রানা
প্রকাশিত: ২-১০-২০২১ রাত ৯:১৪

চাঞ্চল্যকর বীর মুক্তিযোদ্ধাকন্যা মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তিনি র‌্যাবের অভিযানে মাদকসহ গ্রেফতারের পর কারাবন্দি রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পিবিআই। আগামীকাল রোববার (৩ অক্টোবর) ওই আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মাফরুজা পারভীন গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ মামলায় বসুন্ধরার এমডি আনভীরের পাশাপাশি তার বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সায়েম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, হুইপপুত্র শারুনের সাবেক স্ত্রী সাইফা রহমান মিম, ফ্ল্যাট মালিক ইব্রাহিম আহমেদ রিপন ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। এর মধ্যে ইব্রাহীমকে শর্তসাপেক্ষে আগাম জামিন দেয় হাইকোর্ট বিভাগ। 

সূত্র জানায়, কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি বির্তকিত কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছে তদন্ত সংস্থা পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে গত মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিন। আগামীকাল রোববার ওই রিমান্ড শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। পিয়াসাকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট পিবিআই কর্মকর্তারা। মাদকসহ গ্রেফতারের পর বর্তমানে কারাগারে থাকার কারণে পিয়াসার বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে গত সোমবার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আগাম জামিন দেয়নি হাইকোর্ট বিভাগ। তবে এই মামলায় সায়েম সোবহানের স্ত্রী সাবরিনা সায়েমকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়ে মেয়াদ শেষে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ারের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বুধবার আনভীরের ক্ষেত্রে আগাম জামিনের অবেদনটি আদালতের কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়। 

আদালত বলেছে, মুনিয়ার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চারটি আঘাতের চিহ্ন থাকায় প্রধান আসামির বিষয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ আপাতত হস্তক্ষেপ করবে না। মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলাটির প্রধান দুই আসামির আগাম জামিন আবেদনের ওপর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মামলার এক নম্বর আসামি সায়েম সোবহান আনভীর ও দুই নম্বর আসামি সাবরিনা সায়েম দুজনেই আদালতে উপস্থিতি ছিলেন। আর তাদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এম হাসান ইমাম ও বদিউজ্জামান তরফদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। এছাড়া অনলাইনে ছিলেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন, শাহ মো. আবদুল কাইয়ুম ও মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। 

আদালত সূত্র জানায়, সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন শুনানিতে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার করা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা থেকে আনভীরের অব্যাহতি পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, বাদী পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করেন। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে কী- বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক তা জানতে চাইলে ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন মামলার অভিযোগ থেকে পড়ে শোনান। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। এরপর তিনি প্রধান আসামির জামিনের বিষয়ে আপত্তি তোলেন। 

আদালতের বিচারক বলেন, আগাম জামিনের আবেদনকারী এক-এর (সায়েম সোবহান আনভীর) বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, দুইয়ের (আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সায়েম) বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। আমরা শুধু দুই নম্বরকে দিচ্ছি ছয় সপ্তাহ। এরপরও আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন শুনানি চালিয়ে যেতে থাকলে বিচারক বলেন, এই মুহূর্তে আমরা হস্তক্ষেপ করব না। শুধু একজনকে জামিন দেব। আমরা আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে ডিলিট করে দিচ্ছি। এরপরও ইউসুফ হোসেন হুমায়ন তার শুনানি চালিয়ে যেতে থাকলে আদালত পরবর্তী ক্রমিক ডেকে সে মামলার শুনানি শুরু করে। তখন আদালত বলে, মিস্টার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ভিকটিমের (মুনিয়ার) চারচি ইনজুরি আছে। অনেক মামলা আছে, এগুলো আমাদের শেষ করতে হবে। আমরা একজনকে দিচ্ছি। আরেকজনকে ডিলিট করে দিচ্ছি। 

এরপর সহকারী অ্যাটর্নি মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মামলায় আনভীরের স্ত্রী সাবরিনাকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে। কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তবে সাবরিনাকে জামিনের মেয়াদ শেষে সংশ্লিষ্ট ট্রায়াল কোর্টে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

এর আগে মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর ও তার স্ত্রী সাবরিনা সোবহানের আগাম জামিন চেয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন জানান। আর গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। সেখানে আবেদনটি কার্যতালিকায় ১৪২৪ নম্বর ক্রমিকে থাকায় এ বিষয়ে শুনানির জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য ছিল।

গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়েরকৃত মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ করেন নিহত মুনিয়ার বোর নুসরাত জাহান তানিয়া। তিনি হত্যা ও ধর্ষণ মামলা করতে চাইলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। উক্ত মামলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর প্রেমের সম্পর্ক করে ভাড়া নিয়ে স্বামী- স্ত্রী হিসেবে থাকতেন। ওই বাসায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। পরে বিয়ে না করে উল্টো মুনিয়াকে হুমকি দিয়েছিলেন।

মুনিয়ার মৃত্যুর সঙ্গে আসামির আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানায়। পরে গত ১৯ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতবেদন দিয়ে বসুন্ধরার এমডিকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে গুলশান থানা পুলিশ। পুলিশের ওই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়ে মুনিয়ার বোন নুসরাত অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেন। তা খারিজ করে ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী গত ১৮ আগস্ট চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। এরপরই আনভীর ও তার পরিবারের তিন সদস্যসহ আটজনকে আসামি করে ট্র্যাইবুনালে মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া।

ওই ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বলা হয়, বসুন্ধরার এমডি আনভীর ২০১৯ সালের জুন মাসে বনানীতে ৬৫ হাজার টাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। আর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মুনিয়াকে নিয়ে সেখানে ওঠেন। আনভীর ৭ থেকে ৮ মাস ধরে তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আনভীরের মা-বাবা ও মডেল পিয়াসা তাদের বাসায় মুনিয়াকে ডেকে নিয়ে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলা হয়। আর তাদের কথা না শুনলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর মুনিয়া কুমিল্লায় বাবার বাড়িতে চলে যান। কিন্তু পরে গত মার্চে মুনিয়াকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে পুনরায় ঢাকায় এনে গুলশানে ভাড়া বাসায় তাকে রাখেন। একপর্যায়ে মুনিয়া ২ থেকে ৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হন। বিষয়টি আনভীরকে জানিয়ে মুনিয়া বিয়ে করতে চাপ দেয়। এ বিষয়টি জানাজানি হয়। তাদের পারিবারিক সুনাম, সুখ্যাতি রক্ষায় মুনিয়াকে হত্যার হুমকি দেয়। 

উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন বাদী হয়ে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে।

জামান / জামান

বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্পের মাটি ভরাটের প্রিলেভেল সার্ভে কাজে প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতি

মাদারীপুরের আলোচিত মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধার কোটায় একই পরিবারের চারজন করছেন সরকারি চাকরি

নিষিদ্ধ হলেও হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে কর্মসূচী ঘোষণা

মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অফিসার তৌহিদুলের শাস্তি দাবি

বিসিকের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসানের ঘুস-দুর্নীতি সমাচার

জমি ক্রয়ের নামে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রবাসি স্বামীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সাবেক পরিচালক সাইফুলের টাকার উৎস কি?

নার্গিসকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দেওয়া হোক

গাজীপুর গণপূর্তের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকের ঢাকায় ১৯ বছরের লুটপাটের রাজত্ব

মসজিদের নামে জমি দখলের চেষ্টা করছে মল্লিক বিল্ডার্স

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টেন্ডার বাতিল এর অভিযোগ

পিডব্লিউডি এর কয়েকজন স্টাফের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর অভিযোগ