ঢাকা বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫

অস্থায়ী ঘরের স্থায়ী বাসিন্দা


তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, মুন্সীগঞ্জ photo তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশিত: ৮-৯-২০২২ দুপুর ৪:৫

বেঁচে থাকার আশায় জীবনের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন যেন নিয়মিতই। সারাদিনে একমুঠো খাবারের আশায় ছুটে বেড়ান বিভিন্ন প্রান্তে। কখনো খেয়ে কখনোবা না খেয়ে কেটে যায় দিন। গায়ে তেমন জোর নেই। তবুও জীবনের তাগিদে বেঁচে থাকার লড়াই। কিছু সাহায্য পাওয়ার আশায় তার এই রুগ্ন হাত পেতে দেন মানুষের মাঝে। কেউ দেয় আবার কেউ দেয় না। সংসার জীবনের অবসান ঘটিয়ে এখন প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন। এতক্ষণ যাকে নিয়ে লিখছি তিনি আর কেউ নন, সুরাইয়া বেগম। বয়স ষাটোর্ধ্ব।

থাকার জন্য নিজের হাতে নিজেই তৈরি করেছেন বসতঘর। টুকরা বাঁশ, কাঠ আর ছেঁড়া পলিথিনের সমন্বয়ে তৈরি করেছেন ঘর। রোদ, ঝড়-বৃষ্টিতে এখানেই দিনানিপাত করেন সুরাইয়া বেগম।

কয়েক দিনের অনুসন্ধানে জানা যায় সুরাইয়া বেগমের সম্পর্কে। তিনি সদরের কোর্টগাঁও এলাকার বাসিন্দা। স্বামী-সন্তান হারিয়ে প্রথমে ঘর বেঁধেছিলেন শহরের বিভিন্ন জায়গায়। শেষরক্ষা না হলেও পরবর্তীতে ঘর তৈরি করেন শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসংবলিত ফলক চত্বরের প্রধান গেটে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ওখানেই বসবাস তার।

সারাদিন কোনোকিছু কুড়িয়ে এবং মানুষের থেকে সাহায্য নিয়ে কোনোমতে কেটে যাচ্ছে তার দিন। আরো দেখা যায়, বর্তমানে তিনি শাক-সবজি তুলে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে নিজেই নিজের জীবিকা নির্বাহ করছেন।

সারাদিন নিজেই নিজের সাথে কথা বলেন অবিরাম। কখনোবা সুই-সুতা নিয়ে কাঁথা তৈরিতে ব্যস্ত তিনি। আবার কখনো নিজের তৈরি ঘরের ভেতর টুকটাক কাজে মনোনিবেশ।

সংসারে কে আছে জানতে চাইলে কিছু বলতে পারেননি সুরাইয়া বেগম। হঠাৎ চোখের কোণে জল। হয়তো স্বামী-সন্তান হারিয়ে নিঃস্ব। কোনো এক ঝড়ে ভেঙে যাওয়া সুরাইয়া বেগমের সংসার হয়তো আর জোড়াই লাগেনি। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তেমন কোনো কথা বলতে পারেন না।

পলিথিন আর কার্টনের সমন্বয়ে তৈরি করা ঘরে তার ৪ বছরের বেশি সময় পার হওয়া এখানেই। যেন অস্থায়ী ঘরে স্থায়ী বাসিন্দা। দিনের আলোয় ঘুম ভাঙলেও রাত যেন শেষ হয় না সুরাইয়ার জীবনে। রাত হলেই একা একা অনর্গল নিজের সাথে বিভিন্ন কথা বলে নিজেকে সান্ত্বনা দেন তিনি। দুঃখ-দৈন্যতায় হারিয়ে যাওয়া জীবনটা আর ফিরিয়ে আনতে পারছেন না তিনি। ঠিকানাবিহীন সুরাইয়া বেগম নিজের প্রিয়জনদের কাছে ফিরতেও অপারগ। প্রচণ্ড ঝড় কিংবা বৃষ্টিতে নিজের তৈরি অস্থায়ী ঘরে জীবনযাপন তার।

নিয়মিত খাবার পান না বলে দেহটাও শক্তি হারিয়ে ফেলেছে আজকাল। কেমন আছ জানতে চাইলে বলে ওঠেন, তোমাদের মতো না ভাই। আমি গরিব মানুষ, কেমনে থাকি। পৌর সমাজের বিত্তবানরা কেউই খোঁজ নেয় না আজকাল।

সঠিক চিকিৎসা আর বাসস্থান পেলে হয়তো তার পরিবর্তন হতে পারে। সেই সাথে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

অস্থায়ী ঘরের স্থায়ী বাসিন্দা সুরাইয়া বেগমের কাছে সংসার নিজের স্বপ্ন আর আগামীর কথা জানতে চাইলে হেসে দিয়ে বলে ওঠেন, একটু সকাল হোক, রোদ উঠুক।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুসাইন মো. আল জুনায়েদের সাথে। তিনি জানান, স্মৃতি ফলকের ওখানে থাকতে পারে না। পবিত্রতার কিছু বিষয় রয়েছে। তাছাড়া উনি সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করলে আমরা দেখব।

এমএসএম / জামান

বাসের ধাক্কায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, চট্টগ্রামে মহাসড়ক অবরোধ

কুয়াকাটায় পরিচ্ছন্নতা ও পর্যটকবান্ধব সেবা নিশ্চিতকরণে রেস্তোরাঁ কর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

রামুর বাঁকখালী নদীতে ভাসলো ঐতিহ্যবাহী কল্পজাহাজ

দোহারে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নওগাঁয় গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ; ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

ক্ষুদে ক্রিকেটার ঈসার পাশে কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া অফিস

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন

কোনাবাড়ী থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ নাটোর থেকে উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে অসহায় দরিদ্র উদ্যোক্তা মহিলাদের সেলাই বিষয়ক প্রশিক্ষনের শুভ উদ্বোধন

ডাকসুর এজিএস মহিউদ্দীন খানকে জয়পুরহাটে সংবর্ধনা

নরসিংদীতে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬ জন, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮ জন

মেহেরপুরে ৩৫তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

টঙ্গীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট, মৈত্রী শিল্পে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পরিদর্শন