বহু ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়েছেন রুবি খাতুন
ওজিফা খাতুন রুবি ওরফে রুবি খাতুন প্রতারণার অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। একাধিক বিয়ে, মামলা দিয়ে হয়রানি করে টাকা আদায়, বিদেশে পাঠানোর নামে অর্থ আত্মসাৎ, ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিকানা দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ, ব্যবসার নামে প্রতারণা, টাকা ধার নিয়ে ফেরত না দিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানিসহ শত শত অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
প্রতারণার জন্য রুবি খাতুন একাধিক নাম ব্যবহার করেন। তার প্রকৃত নাম মোছাম্মদ রুবি খাতুন। তবে তিনি কখনো রুবি খাতুন আবার কখনো ওজিফা খাতুন কখনো তিনি রুবি আলম (রুবি) নাম ব্যবহার করেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায়। পিতার আনোয়ার হোসেন। রুবি খাতুনকে নিয়ে সকালের সময়ের এই প্রতিবেদক দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করছেন। আজ থাকছে রুবি খাতুনের প্রতারণা নিয়ে তৃতীয় পর্ব।
রুবি খাতুন বিএ পাশও করেননি। অথচ তিনি নিজেকে একজন অ্যাডভোকেট হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনও করেছেন। সেখানে তিনি মনোয়নপত্রে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখান এলএলবি। আইনজীবী হতে হলে বাংলাদেশের একজন নাগরিককে এলএলবি পাশ করতে হয়। এরপর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করার পর যে কেউ নিজেকে অ্যাডভোকেট হিসেবে দাবি করতে পারেন। অথচ রুবি খাতুন এসএসসি পাশও করেননি।
তার নামে বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্যাডে তিনি ‘অ্যাডভোকেট অজিফা খাতুন রুবি’ নামটি ব্যবহার করেছেন। মেসার্স রুবি এন্টারপ্রাইজ, রুবি কনস্ট্রাকশন ফার্ম নামে দুইটি প্যাডে তিনি নামের আগে ‘অ্যাডভোকেট’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। নিজেকে সবার কাছে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। এই পরিচয় দিয়ে তিনি অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
এ বিষয়ে তার সাবেক স্বামী নুরুল ইসলাম মৃধা সকালের সময়কে বলেন, ‘রুবি খাতুন একজন ভয়ানক প্রতারক। তিনি লেখাপড়া জানেন না। কিন্তু পরিচয় দেন অ্যাডভোকেট রুবি খাতুন হিসেবে। রুবি মানুষকে প্রথমে লোভনীয় প্রস্তাব দেন। তারপর তাকে নিঃস্ব করে চলে যান। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অনেকেই কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। এই রুবি খাতুন একজন আন্তর্জাতিক মানের প্রতারক। তার বিচার হওয়া দরকার।’
নুরুল ইসলাম মৃধা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিনের কাজ থেকে এলএলবি পড়া ও বাড়ি করার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ এখন মিথ্যা মামলার ভয় দেখাচ্ছে রুবি।’
এছাড়াও রুবি খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্রটিও ভুয়া। সেখানে তার নাম মোছা: ওজিফা খাতুন (রুবি), পিতা- মো. হোছন আলী (আনোয়ার), মাতা- মোছা: লাইলী বেগম, জন্ম তারিখ দেয়া আছে ০৫/০১/১৯৭৭। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর- ০৩১৭৩৭৬৩৪৭৯৫৪। অথচ যাচাই করে সব তথ্য ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।
‘রুবি ফুডস এন্ড বেভারেজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রুবি খাতুনের বিরুদ্ধে। তার প্রতিষ্ঠানে এজেন্ট নিয়োগ এবং টাকা নিয়ে মালামাল সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাসের ব্যবধানে রুবি খাতুন এই প্রতিষ্ঠানের নামে জনগণের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণার জন্য রুবি খাতুন ০১৮২০৫৫৬৪৫৪ নম্বরটি ব্যবহার করেছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছে কোহিনূর এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মালিককে ডিলারশিপ এবং মাল সরবরাহের জন্য ৯ লাখ টাকা রুবি খাতুনকে প্রদান করেন। পরে আরও ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হইলে ব্যবসায়িক শর্ত পরিবর্তন করে ওজিফা খাতুন রুবি পুরো টাকা ঋণ হিসাবে মাসে ৩৩ হাজার টাকা লভ্যাংশ প্রদান করবেন বলে চুক্তি করেন।
রুবি কোহিনূর এন্টারপ্রাইজকে ৯ লাখ টাকার ২টি চেক প্রদান করেন। তা ব্যাংক নিয়ে গেলে ডিজঅনার হয়। রুবি খাতুনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম কোর্টে মামলা করেন কোহিনূর এন্টারপ্রাইজের মালিক। মামলা নম্বর সিআর ৪৩৯/২২। মামলাটি বিচারাধীন আছে। মেসার্স আইভি এন্টারপ্রাইজ নামে এক প্রতিষ্ঠানের কাছে রুবি খাতুন পণ্য দেয়ার কথা বলে সাড়ে ১২ লাখ টাকা নেন। পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন রুবি। মেসার্স আইভি এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার রুবি খাতুনের বিরুদ্ধে সিএমএম কোর্টে মামলা করেন। মামলা নম্বর সিআর ১৪৯১/২২। মারিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে আরেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তমিজ উদ্দিনের কাছ থেকে পণ্য দেয়ার কথা বলে ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৭০৬ টাকা নেন রুবি খাতুন। যা রুবির প্রতিষ্ঠানের প্যাডে লিখিত আছে। তিনিও রুবি খাতুনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছেন। উকিল নোটিশও পাঠিয়েছেন।
মেসার্স রুবি কনস্ট্রাকশন নামেও আরও একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন রুবি খাতুন। কক্সবাজারের খুরুশকুলে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতার একটি ভবনের নির্মাণের কাজ পায় আফতাব উদ্দীন নামে এক ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান। রুবি খাতুন তার সঙ্গে অংশীদারি চুক্তিপত্র করে। চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে ৭৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন রুবি খাতুন।
এ বিষয়ে আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমার মত অনেকের সঙ্গেই রুবি খাতুন একের পর এক প্রতারণা করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমি এর বিচার চাই।’রুবি খাতুন চৌধুরী কনস্ট্র্রাকশন এর মালিক খালেক চৌধুরীর সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করেন। খালেক চৌধুরীর কাছ থেকে ৭৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন রুবি খাতুন। পরে তাকেও চেক প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে।
আলিফার্স এন্টাপ্রাইজ স্বত্বাধিকারী মুহাম্মদ আলীর কাছ থেকে তিন কোটি বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রুবি খাতুন। এ কারণে কক্সবাজার জেলা জজ কোর্টে রুবি খাতুনের নামে মামলা করেছেন মোহাম্মদ আলী। প্রতারণা, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও পাহাড় কাটার দায়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মহিলা লীগ থেকে রুবি খাতুনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এত অনিয়ম করার পরও রুবি খাতুনকে আইনের আওতায় কেন আনা হচ্ছে না তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
প্রীতি / এমএসএম
তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সিবিএ এর অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার আয়োজিত
ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ছয় দফা দাবি
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার অনুষ্ঠিত
কামরাঙ্গীরচর থানার মোঃ আমিরুল ডিএমপি লালবাগ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে নির্বাচিত
পেশাদারিত্ব ও মানবিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন ডিসি মহিদুল ইসলাম
ঝিনাইদহ অফিসার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শিখাচ্ছে পাথওয়ে
উত্তরায় SEDA ফাউন্ডেশনের ১৭তম মেধা যাচাইয়ে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় নকশা দাখিল ও অপসারণের নির্দেশ
হাতপাখা নির্বাচিত হলে ঢাকা-১৮ কে একটি মডেল সিটি হিসেবে গড়ে তুলা হবেঃ আলহাজ্ব আনোয়ার