ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

ইটভাটার আগুনে পুঁড়ছে শ্রমিকের জীবন


সৈয়দ আককাস উদদীন, সাতকানিয়া  photo সৈয়দ আককাস উদদীন, সাতকানিয়া
প্রকাশিত: ১২-৩-২০২৩ দুপুর ১:১২

ইটের দাম হাজারে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা। প্রতিদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে এমন হাজার হাজার ইটের যারা যোগানদাতা তাদের পেটে জুটে দৈনিক মাত্র ৫ থেকে ৭শ টাকা।নিম্নমানের আবাসন ব্যবস্থা, নেই টয়লেটের কোন সুযোগ সুবিধা! তবুও পরিবারকে ভালো রাখতে শত শত কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে অন্নের জন্য পুঁজিতে লাগায় তাদের জীবন।

কেউ তৈরি করে মাটি, কেউ ইট, কেউবা ইট পুড়িয়ে ভাঁজ দেওয়ার কাজে। এভাবে তাদের তৈরি ইটে মালিকরা বছরে বছরে কোটিপতি হলেও বছরঘুরে এভাবেই কাজ করতে হয় তাদের।সাতকানিয়া-লোহাগাড়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় সব ইটভাটাতেই এমন চিত্র। নড়াইল থেকে আসা শ্রমিক আব্দুর রহিম বলেন, আমরা ইটভাটায় মাঝির মাধ্যমে কাজে আসি। মাঝির কাছ থেকে দৈনিক ৫ থেকে ৭শ’ টাকা বেতন পাই। সেখান থেকে খাওয়া দাওয়া বাদে বাকিটা ঘরে পাঠাই।

অন্যদিকে প্রশাসনকে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়ানোর অভিযান চালাতে দেখা গেলেও বৈধ ইটভাটাগুলোতে বাসস্থান, টয়লেট ব্যবস্থাসহ শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে দেখভাল করতে দেখা যায়নি কখনো। সব ইটভাটাতেই বানানো হয়েছে খোলা টয়লেট। কারো টয়লেটের সংযোগ খালে কারওবা অন্যের কৃষি জমিতে। অথচ খোলা টয়লেট ব্যবহার নিষিদ্ধ।

ইটভাটাগুলির শ্রমিকদের খাওয়ার জন্য নেই কোন বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, খোলা টয়লেটের পাশাপাশি মানববর্জ্যগুলি আসলে কোথায় গিয়ে ঠেকছে তা দেখার বালাই পড়েনি সাতকানিয়ার স্যানিটেশন ইতিহাসে। অথচ নিরাপদ খাবার পানি এবং মানববর্জ্য ও ব্যবহৃত পানি যথাযথ নিষ্কাশন সংক্রান্ত গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থাই হল স্যানিটেশন। মলমূত্রের সাথে মানুষের সংস্পর্শ রোধও স্যানিটেশনের একটি অংশ। স্যানিটেশন ব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্যই হল একটি পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করা যাতে জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়।

উদাহরণস্বরূপ, ডায়রিয়া শিশুর অপুষ্টি ও শারীরিক বিকাশে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার একটি প্রধান কারণ যা উন্নত স্যানিটেশনের মাধ্যমে কমানো সম্ভব। যেসব ইটভাটায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা দুর্বল সেসব স্থানে ডায়রিয়া বাদেও আরো রোগ-জীবাণু সহজে ছড়ায় যেমন, কলেরা, হেপাটাইটিস, পোলিও, কৃমিজনিত রোগ প্রভৃতি। অর্থাৎ একটি ইটভাটার স্বাস্থ্য অব্যবস্থাপনায় শুধু ওই ভাটার শ্রমিকরা আক্রান্ত হয়না আক্রান্ত হওয়ার কবল থেকে বাঁচতে পারেনা কেরানীহাট কেঁওচিয়ার ঢেমশার কালয়াইশ,নলুয়ার,এবং এওচিয়া চূড়ামনিও ছনখোলা এলাকার জনগন,কারণ এই এলাকার জনগোষ্ঠী ব্রিকফিল্ড জোনেই করে বসবাস।

সচেতন মহলের দাবি, এসব এলাকায় স্যানিটেশন প্রযুক্তি ও এর পদক্ষেপসমূহের বিস্তৃত পরিসর বিদ্যমান। এই পরিসরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন, টেকসই স্যানিটেশন, জরুরি স্যানিটারি ল্যাট্রিন, কন্টেইনার ভিত্তিক স্যানিটেশন, বাস্তুতান্ত্রিক স্যানিটেশন প্রভৃতি পদক্ষেপ এর উজ্জ্বল উদাহরণ। কিন্তু সাতকানিয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থায় এই সেক্টরে সরকারি কিংবা বেসরকারি ভাবে কারো নজর ছিলোনা এখনও অবধি নেই।

এই বিষয়ে সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক  জাহেদ বলেন, মানববর্জ্য এবং ব্যবহৃত পানিকে যে প্রক্রিয়ায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে কাজে লাগানো হয় তাকে ‘স্যানিটেশন ভ্যাল্যু চেইন’ বা ‘স্যানিটেশন ইকোনমি’ বলা হয়, কিন্তু গ্রামীন জবপদে এই প্রক্রিয়াটার দরকার না হওয়ায় ইটভাটা মালিকদের খরচও কমছে তবুও তারা শ্রমিকের জীবন নিয়ে না ভাবা মানে গুরতর মানবাধিকার লংঘন বলে ধরে নেয়া যায়।

এদিকে সাতকানিয়ায় অবস্থিত ইটভাটাগুলিতে ছদ্মবেশে ঘুরে ঘুরে দেখা মিলেছে শিশুশ্রমিকেরও- বিশেষ করে উপজেলার ছনখোলার চকিদারপুত্র নজরুল ইসলাম মানিকের মালিকানাধীন কেবিএম ব্রিকফিল্ডে।

এই ব্রিকফিল্ডে কাজ করা এক শিশুশ্রমিকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, মজুরি কম দেওয়া এবং নিয়মের বাইরেও ধমক দিয়ে অতিরিক্ত কাজ আদায় করার লোভেই মূলত শিশুদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। শিশুটি আরো বলেন, অথচ এখানে আমাদের মালিকের তেমন কোন খরচ না থাকলেও আমাদের মজুরি ঠিক ভাবে দেয়না, এখানে খরচ নেই বলতে সে তার ভাষায় বলে ‘মুড়ার মেডি মুড়ার লাহড়ি’ অর্থাৎ পাহাড়ের মাটি আর পাহাড়ের কাঠ দিয়েই চলে কেবিএম তবুও ঠিকমত দেয়না মজুরি।

অপরদিকে দেশের প্রচলিত আইনে শিশুশ্রম সরাসরি নিষিদ্ধইতো বটে কিশোরশ্রম আইনে বলা আছে, কিশোর শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কাজে নিয়োগ করতে হলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছ থেকে ফিটনেস সনদ নিতে হবে, যেটার খরচ বহন করতে হবে মালিককে। কিশোর শ্রমিকদের স্বাভাবিক কাজের সময় হবে ৫ ঘণ্টা। আর সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৭টা পর্যন্ত তাদের দিয়ে কোনো কাজ করানো যাবে না।

সেনিটারি ইন্সপেক্টর গোলাম সরোয়ারকে কল করা হলে তিনি বলেন অবশ্যই এসব ইটভাটার মালিকদের আইনের আওতায় আনা হবে।সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মাথায় দিয়েছেন। তার জন্য ধন্যবাদ। এই বিষয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এমএসএম / এমএসএম

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সেকাল-একাল বই এর মোড়ক উন্মোচন

বড়লেখায় ইজ্জত বাঁচাতে চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে কলেজছাত্রী আহত, চালক আটক

মানবিক সাহায্যের আবেদন-‘বাঁচতে চায় শিশু ফরহাদ আলী’

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাজশাহীতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

কমলগঞ্জে দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য প্রকল্প পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ

মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়াসহ মারধরের অভিযোগ

বাঘা থানার অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত ও নিয়মিত মামলার ৬ আসামি গ্রেফতার

নবীনগরে কাঁঠালের ছড়াছড়ি: বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক ও ভোক্তা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে অবরোধ

সন্দ্বীপ থানার অভিযানে ১২ মামলার আসামী গাঁজা ব্যবসায়ী আটক

নোয়াখালীতে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ যুবদল সভাপতি গ্রেফতার

কাউনিয়ার মেহরাব নৌপ্রধান স্বর্ণপদক পাওয়ায় এলাকায় অভিনন্দনের ঝড়