ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ আবু তাহেরকে সাতকানিয়ায় অবাঞ্চিত ঘোষণা


সৈয়দ আককাস উদদীন, সাতকানিয়া  photo সৈয়দ আককাস উদদীন, সাতকানিয়া
প্রকাশিত: ৭-৬-২০২৩ দুপুর ১২:৫৭

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহেরকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ। বুধবার সাতকানিয়ার কালিয়াইশ রাজমহল ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের ফিরিস্তি তুলে ধরে এ ঘোষণা দেন তারা। কালিয়াইশের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজ আহমদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরাট একটি অংশ এ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ছদাহার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ও ভারতীয়া তালিকা ব্যবহার করে ২০০৫ সালে বিএনপির আমলে কর্নেল অলিকে হাত করে মুক্তিযোদ্ধা বনে যান আবু তাহের। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে সরকার থেকে জায়গা লিজ নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ যায় জেলা প্রশাসকের কাছে। জেলা প্রশাসক অভিযোগটি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তভার দিলে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পান। পরে তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে প্রমাণসহ প্রতিবেদন দিলে জেলা প্রশাসক বিষয়টি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ৩ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে তার ভাতা বন্ধ করে আগের নেয়া ভাতার সব অর্থ ফেরত নিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চরতীর বদর ডাকাতের সোর্স তাহেরের এলএমজি নিয়ে পলায়ন

দেশ স্বাধীনের আগে তিনি চরতী বদর ডাকাতের সোর্স ছিল দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশ স্বাধীনের পরে নলুয়ায় বদর ডাকাতকে মেরে বদর ডাকাতের এলএমজি নিয়ে পালিয়ে যান আবু তাহের। পরবর্তী সময়ে সে আজিজনগরে ডাকাতিতে ধরা পড়ে। তাকে এমএলএ আবু ছালেহ টেলিফোনের মাধ্যেমে নিয়ে আসে। তার পরবর্তী সময়ে খুলনা পলিয়ে যায়। ওখান থেকে ফিরে এসে ডাকাত মোহাম্মদ আবু তাহের মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু তাহের বনে যান।

তারা বলেন, তিনি যদি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে থাকেন তাহলে তার এলএমজিটা কোন থানায় জমা দিয়েছে তা উল্লেখ করার দাবি জানান। এই বিষয়টি উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বরাবর অভিযোগ করলে সাতকানিয়া নিবার্হী অফিসারকে  ঘটনাটি তদন্ত করে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। নিবার্হী অফিসার কমিটি গঠন করে কৃষি অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি যাচাই-বাছাই করে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম মহোদয় বরাবর একটি রির্পোট দেন। এই রির্পোট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দপ্তর থেকে ১০ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। ২২ জানুয়ারি ডেচপাস শাখায় চিঠিটি গ্রহণ করে। কিন্তু রহস্য জনক ঘটনা এই যে আজ পর্যন্ত ও এই রির্পোট ডেচপাস শাখা হতে কাউকে দেওয়া হয়নি।

টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অভিযোগ

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পদ বগলে নিয়ে টাকার বিনিময়ে অনেককে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অভিযোগ উঠেছে। তারা বলেন, টাকার বিনিময়ে যাদেরকে ‍মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাদের কারও কারও বয়স ৪-৫ বছর। আরও আশ্চর্য জনক ঘটনা ৫-৬ লাখ টাকা দিয়ে রাজাকাররা পর্যন্ত গেজেট ধারী মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদের বিরুদ্ধে দুনীর্তি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হয়। দূর্নীতি দমন কমিশন কতৃক তদন্ত করা হয়।  বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদ একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে হিসেবে দুনীর্তি দমন কমিশন  প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদকে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে

মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে টাকা বাগিয়ে নেন তাহের

নামে বেনামে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে ভাতা বন্ধ করার অভিযোগ তুলে তারা বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু তাহের ৪১ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ
দাখিল করেন। অভিযোগটির তদন্তভার দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। তিনি অভিযোগ তদন্ত করে অভিযুক্ত ৪১ জন কে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। পরে আবারও মোহাম্মদ আবু তাহের ২৪ জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ করে দেন। যারা টাকা দেন তাদের ভাতা চালু করেন। যারা দেননা তাদের ভাতা আটকে রাখেন। তার এ কাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে কিস্তিতে পর্যন্ত টাকা দিয়েছে।

প্রথমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা, পরে মুক্তিযোদ্ধার সনদ

প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে আখ্যা দিয়ে পরে আবার টাকা নিয়ে সঠিক মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। তারা বলেন, প্রথমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে আখ্যা দিয়ে অনেককে পরে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি। নুরুল ইসলাম, নুরুল আলম এবং হাফেজ আহমদের নাম উল্লেখ করে তারা বলেন, আবু তাহের এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মিলন কুমার ভট্টাচার্য্য সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে নুরুল ইসলাম ও হাফেজ আহমদ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে সভার মাধ্যমে তাদের ভাতা পুনরায় চালু করার। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজ আহমদ যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয় তাহলে ২০১৪ সালে কমান্ডার পদে কি করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু তাহের মুক্তিযোদ্ধা নির্বাচন করেন? প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, মোহাম্মদ আবু তাহেরের দুনীর্তি বিরুদ্ধে হাফেজ আহমদ প্রতিবাদ করায় মোহাম্মদ আবু তাহের হাফেজ আহমদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ
বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের হাজির হওয়ার জন্য জামুকা থেকে হাফেজ আহমদকে ৬ জানুয়ারি একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়। হাজির হওয়ার তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২২। তখন হাফেজ আহমদ দলীয় নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ১১নং কালিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচনী প্রচারে কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ওদিন ছিল নির্বাচনের যাচাই বাচাইয়ের তারিখ। তদন্ত কার্য্যে হাজির না হওয়ার কারণে ১৩ জানুয়ারী রেজিষ্টার্ড করে সময়ের জন্য আবেদন করা হয়। এখানে একটি বিষয়ে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ হাফেজ আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবুল কান্তি দাশ প্রতিজন ৩ লাখ টাকা করে দিলে জামুকা সহ প্রত্যেক দপ্তরে অভিযোগ সমাধা করে দিবে এবং
যথা নিয়মে ভাতা উত্তোলন করতে পারবে। আর যদি তারা টাকা দিতে অস্বীকার করে তাহলে গেজেট বাতিল হবে। উল্লেখিত তিন জনের মধ্যে টাকা না দেওয়ার কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবুল কান্তি দাশের গেজেট বাতিল করা হয়। অভিযুক্ত নুরুল আলম এর আবেদন পূর্ণবিবেচনা করার জন্য নিবার্হী অফিসার সাতকানিয়া বরাবর প্রেরণ করা হয়। এখানে একটি বিষয়ে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদ দু’ বারের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান এবং তিনি সাতকানিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জাতীয় শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা। এসব ঘটনা থেকে পরিষ্কারভাবে প্রতিয়মান হয় যে, মোহাম্মদ আবু তাহের একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এই বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে যেই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু তাহেরের সার্বিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু তাহের কে সাতকানিয়া উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়

এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজল কান্তি দাশ, সাবেক কমান্ডার মাষ্টার রমিজ উদদীন, একেএম সিরাজুল ইসলাম বলেন-খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ সিকদারের সহযোগী ছিলো আবু তাহের, পরে এরশাদ সিকদারের ফাঁসি হলে আবু তাহের সাতকানিয়ায় পালিয়ে এসে তৎকালীন ক্ষমতাবান ব্যক্তি কর্নেল অলির আশীর্বাদেই মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠেন এই আবু তাহের। তারা আরো অভিযোগ করেন কাজল কান্তি দাশ থেকেসহ অন্তত ২৪জন থেকে ২লাখ টাকা করে আদায় করেন যাচাই-বাছাই কমিটির দোহায় দিয়ে। তারা আরো বলেন-  জামুকার যাচাই-বাছাই কমিটিকে নাস্তা খাওয়ার বাবদও প্রতি মুক্তিযোদ্ধা থেকে ৫হাজার করে টাকা নেন।

শুধু তাই নয় - ২০২১সালের জামুইকার যাচাই-বাছাই কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পর আবু তাহের উপজেলায় এসে বলেছেন এটা ৭কোটি টাকার প্রকল্প,আবু তাহেরকে ৭কোটি টাকা আদায় করে ঢাকা জামুকা অফিসকে দিতে হবে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে -বীর মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদ বলেন আমাকে একবার সে প্রত্যয়ন দেয় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে আবার কিছুদিন পর কাংখিত টাকা না দিলে আমি হয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল মুক্তিযোদ্ধারা বলেন-তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা রুখে দাঁড়ালে তিনি ইউএনও সাহেবের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেন।

এমএসএম / এমএসএম

লাকসাম পৌরসভার ১৯৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা

মাগুরা পৌরসভার ২০২৫ - ২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা

নিরাপদ সড়কের দাবিতে চৌগাছায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মানববন্ধন

নাচোলে বিনামূল্যে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ

কাপ্তাই ১০ আরই ব্যাটালিয়ন কতৃক সহায়তা প্রদান

পটুয়াখালীর বাউফলে কেটে কেটে আ.লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

বাঁশখালীতে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণী উদ্বোধন

বাকেরগঞ্জ গৃহবধূ আসমার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিবকে কুপিয়ে জখম

গোপালগঞ্জে পলিথিন বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

টাঙ্গাইলে অর্ধকোটি টাকার লুন্ঠিত ৭৫ ড্রাম তেল'সহ ২ ডা/কা'ত গ্রেফতার

দাউদকান্দিতে মাইথারকান্দি খালের আবর্জনা অপসারণ উদ্বোধন

সীতাকুণ্ডে সরকারী জায়গা দখলকৃত শিপইয়ার্ড উচ্ছেদ করলো প্রশাসন