হাইমচরে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূর্নীতীসহ অনিয়মের অভিযোগ
চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার গন্ডামারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নতুন কমিটির তফসিলসহ সভাপতির চেকে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরে বিভিন্ন বাউসার মিল করে টাকা আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির অবিভাবক সদস্য মোঃ খোরশেদ আলম পাটওয়ারী বিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা কমিটির অনিয়ম ও তদন্ত সাপেক্ষে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন- ২০২৩ বাতিল করার প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ ছাড়া ঐ অভিযোগপত্র উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অনুলিপি প্রধান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য মোঃ ফারুক হাওলাদার বলেন, বিগত ২৮ বছর আমি কমিটির দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক যেকোনো মিটিং তার ক্ষমতার বলে করে আসছে। আমাদেরকে কোনো দিন মিটিংএ ডাকেনা। কোনো কাজেই আমাদের সাথে কোনো পরার্মশ করেননা। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ তসলিম শেখ দেশের বাহিরে আছেন,কিন্তু তার চেক ও বাউসারে কিভাবে সাইন হয় আমরা জানিনা। শুনতেছি কিছুদিন আগে বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের একান্ত সিদ্ধান্তে নতুন কমিটির তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল ঘোষণার পর প্রতিষ্ঠান প্রধান তার স্বার্থে একটি পকেট কমিটি করার জন্য এই অপব্যবহার করে আসছেন। আমরা চাই এই ম্যানেজিং কমিটিতে প্রভাসী সভাপতি না রেখে, বিদ্যালয়ের সার্থে এলাকার একজন গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ দিয়ে কমিটি করা হউক। এ বিষয়ে আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদককেও জানাই ।এই কমিটি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যেও কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। তাই আমরা এলাকার মানুষ সবাই চাই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মান উন্নয়নের জন্য একটা সঠিক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হউক।
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আবুল হোসেন বলেন,আমরা পূর্বের যে কমিটিতে ছিলাম সঠিক ভাবে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছি।কোনোরকম দূর্নীতী হয়না। বর্তমানে আমরা শুনতে পাচ্ছি, যারা কমিটির দায়িত্বে আছেন তাদের বেশি সংখ্যকের নামে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফয়সাল আহম্মেদ পাটওয়ারী বলেন, কমিটি হচ্ছে জনসার্থে করা,বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে করা এবং এলাকার সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করা। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হচ্ছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। আমাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি যেমন বিদেশ থাকেন তাই এলাকার সকলে মিলে একটা ভালো কমিটি উপহার দেওয়ার আহবান জানাই।
এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ বলেন,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিল করে সব কিছু করে পেলেন। মিটিং না করেও তারা রেজুলেশন জালিয়াতি করে বাউসার মিল করে টাকা উত্তোলন করেন।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন বর্তমানে কমিটির অনিয়ম নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে যে গুনজন রয়েছে তা সঠিক না। আমাদের সকল শিক্ষকদের ঐক্য রয়েছে। তবে একজন শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন বিগত ২৫ দিন প্রতিষ্ঠানে আসেননাই। কোনো ছুটিও কাটাননাই।তার জন্য ঐ বিষয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমরা তাকে শোকজ করেছি।ম্যানেজিং কমিটির জন্য আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে ৩ জন কমিটির নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে চান, আমরা সবাইকে নিয়ে বসে তাদের থেকে ১ জন দেওয়ার চেষ্টা করব।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি বিদ্যালয়ের সকল কিছু নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করে থাকি।আমার বিদ্যালয়ের নামে যে অভিযোগ উঠছে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি নিয়ম অনুসারে তফসিল ঘোষণা করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তফা কামাল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ অভিযোগটি আমাদের জেলা শিক্ষা অফিস বরাবর করা হয়েছিল।আমি এই অভিযোগের অনুলিপিটি পেয়েছি। যেহেতু আমি এ উপজেলায় দায়িত্বরত রয়েছি,সেহেতু আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।
এমএসএম / এমএসএম