ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

কে এই ভিআইপি প্রতারক শাহীদ আলম!


মনিরুজ্জামান মনি photo মনিরুজ্জামান মনি
প্রকাশিত: ২০-৩-২০২৪ দুপুর ২:৩৩

২৭ তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া, এন এস আই ও পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এস,আই) পদে চাকরি দেওয়ার নামে,আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ও পিএসসির সদস্য ডঃ নুরুন্নবী ও প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের নামে কোটি টাকার প্রতারণা করেছে শাহীদ আলম নামে এক প্রতারক, ঘটনাটি ঘটেছে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর গ্রামে ।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোঃ আক্তারুজ্জামান মাননীয় সংসদ সদস্য যশোর-৬,পুলিশ কমিশনার খুলনা মেট্রোপলিটন , পুলিশ সুপার যশোর ও অধিনায়ক র‍্যাব-৬, লবণচরা, খুলনা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত  প্রতারক শাহীদ আলম (৫৫)  পিতা-আলহাজ ওমর আলী সরদার,গ্রাম- হাসানপুর,ডাকঘর -বুড়িহাটি, উপজেলা-কেশবপুর, জেলা-যশোর । বাদী আক্তারুজ্জামান এর বাড়ি একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ঝিকরা গ্রামে । কর্মসূত্রে বর্তমানে খুলনাতে বসবাসরত ।  অভিযুক্ত শাহীদ আলম ওরফে খোকন বাদীর দুলাভাইয়ের মামাতো ভাই হওয়ায় তার সাথে জানাশোনা ও সম্পর্কটা ভালো ছিল । পরবর্তীতে আক্তারুজ্জামান ২৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং সফলভাবে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।

এরই মধ্যে অভিযুক্ত প্রতারক শাহীদ আলম খবর পেয়ে বাদীর সাথে যোগাযোগ করে জানায়,সামান্য কিছু খরচ দিলে তাহার চাকরিটা কনফার্ম করে দিতে পারবে । শাহীদ আলম তখন তার স্যার পিএসসি এর সদস্য ডঃ নুরুন্নবীর সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দেয় এবং সে আক্তারুজ্জামান কে জানায় তার বোর্ডেই তাকে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে ।

বাদী তার প্রস্তাবে কোন কিছু না ভেবে তাৎক্ষণিক রাজি হয়ে যায় এবং মৌখিক পরীক্ষার এক মাস আগে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে । 
মৌখিক পরীক্ষা ডঃ নুরুন্নবী পিএসসি এর বোর্ডে অংশগ্রহণ করাই তার  বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয় , মৌখিক পরীক্ষার পরে প্রতারক শাহীদ আলম জানায়,তার কোন একটা কাগজে একটু সমস্যা থাকার কারণে তাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে । কেননা তার ফলাফল স্থগিত করে রাখা হয়েছে । টেনশনের কোন কারণ নাই,দেরিতে হলেও তাহার চাকরিটা কনফার্ম হবে ।

কিছুদিন পরে হঠাৎ বাদী আক্তারুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে +৮৮০১১১১১১১১১১ নং থেকে ফোন দিয়ে  পি,এস,সির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রথমে সামান্য কিছু টাকা চাই, তখন বাদী বিবাদীর সাথে যোগাযোগ করে । তখন প্রতারক শাহীদ আলম জানান, টাকা দিলে কোন সমস্যা হবে না, কেননা চাকরি না হলে বাদীর টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দিয়ে দিবে বলে জানায় ।তখন প্রতারক শাহীদ আলম, অগ্রণী ব্যাংক প্রতাপপুর শাখা, কেশবপুর যশোর এর অনুকূলে আনামুল হক নামের অ্যাকাউন্ট নং-০২০০০০৮৪৪২৯০৪ তে ৫০০০০ টাকা দিয়ে দিতে বলে ।

এভাবে সে প্রতারণার মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে, বিভিন্ন লোভ-লালসা দেখিয়ে ধাপে ধাপে জমি বিক্রয় করা টাকা ও লোনের টাকা সহ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এবং আরও টাকা ম্যানেজ করতে বলে ।তখন বাকী টাকা যোগাড় করতে না পারাই, এন,এস,আই ও পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকায়, বাদীর বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত জনদের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে, বাদীকে সাথে রেখে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় । যাহা ইসলামী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক খুলনা শাখা হতে এবং ক্যাশ টাকা বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে নেয়  । যা বিভিন্ন সময়,বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে কেশবপুর শাখা থেকে উত্তোলন করে নেয় এবং তাকে জানায় যে এসব টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে জমা হচ্ছে ।

যার প্রমাণ বাদীর মোবাইল নাম্বার ০১৭২৭-০৩৭৩৭০ এর সাথে ০১৫৩৩-০৯৬৬৯৮,০১৯১১-৪০৭৫৭৫ এবং ০১৭১১-২০৮৭১২ নম্বর এর কথোপকথন পর্যালোচনা করলে সত্যতা পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয় । পিএসসির কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী পরবর্তীতে ০১৫৩৩-০৯৬৬৯৮ থেকে বিভিন্ন সময় বাদীর সাথে যোগাযোগ করে ।

পরবর্তীতে অভিযোগকারী আক্তারুজ্জামানের চাকরির কোন ব্যবস্থা না হলে, প্রতারক শাহীদ আলমের কাছে টাকা ফেরত চাইলে, সে কোন টাকা ফেরত দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় । এমনকি সে বাদীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে এবং তার সাথে কোন প্রকার লেনদেন নাই বলছে বলে উল্লেখ করা হয় । কিন্তু প্রতারক শাহীদ আলম গত ২৭-২-২০২২ তারিখ থেকে ২৭-১২-২০২৩ তারিখ পর্যন্ত, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখার হিসাব নম্বর-১৩০১০৩১০০৮০৮২৩ এর মাধ্যমে ২১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন ।

কিছুদিন আগে ০১৭১৬-৫৬২৯৩৫ নং থেকে ফোন করে মুনতাসির নামের এক ব্যক্তি বর্তমানে গোয়েন্দা শাখার অফিসার পরিচয় দিয়ে বাদীকে উক্ত টাকা ফেরত চাইতে নিষেধ করে এবং তার কথা না শুনলে তাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে ।

গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার  পরিচয় প্রদানকারী মোবাইল নাম্বার ০১৭১৬-৫৬২৯৩৫   এবং আব্দুস সোবহান গোলাপ পরিচয়  দানকারীর মোবাইল নাম্বার-০১৬১৯-৯৯৪৫৯৮ নম্বর দুটি প্রতারক শাহীদ আলমের মৃত প্রথম স্ত্রীর নামে নিবন্ধন করা আছে । যা বাদী পরবর্তীতে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছে (কপি সংযুক্ত)। পি এস সির কর্মকর্তা পরিচয় দানকারীর মোবাইল নম্বর ০১৫৩৩-০৯৬৬৯৮ হতে প্রতারক শাহীদ আলম কণ্ঠ পরিবর্তন করে বাদীর সাথে প্রতারণা করেছে বলে তার ডিভোর্সী দ্বিতীয় স্ত্রী জানায় । প্রতারক শাহীদ আলম স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং প্রভাবশালী বলে উল্লেখ করা হয় ।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে  স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, শাহীদ আলম এলাকাতে খোকন নামে পরিচিত, দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক । এলাকার সবাই তাকে  প্রতারক হিসেবে চেনে ও জানে । তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের শেষ নাই ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার ডিভোর্সী দ্বিতীয় স্ত্রী জোছনা জানান, ঘটনা সত্য । তার নামে বেনামে ২০ থেকে ২২ টা সিম ও মোবাইল আছে । সে আমার সাথে ও প্রতারণা করেছে । এনজিও থেকে লোন নেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকার সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে, এখন সেটা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রতারণা করছে । সে যখন আল-বারাকা লাইফ ইন্সুরেন্স এ চাকরি করতো,সেখান থেকেও গরিবের লক্ষ লক্ষ টাকা মেরে দিয়েছে বলে জানান । আমিও তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি । তিনি আরো বলেন খোকন একটা ভিআইপি চিটার, তার নিজ মেয়েকে স্বামীর কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে ,চিটারি করে সে সব টাকা তার বড় ভাই এবং মেয়ের কাছে রেখেছে । সে সবকিছুতে পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নেয়,তাকে ধরা খুবই কষ্ট ।
 
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আক্তারুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে বলেন-আমার এখন বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে, সব কথা তো লিখে শেষ করা যায় না, পিএসসি কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী ব্যাক্তি পরবর্তিতে ০১৫৩৩০৯৬৬৯৮  এ নং থেকে ফোন করে   সে আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করেছে।  আমার চেহারা নাকি হুবহু তার ছেলের মতো। তার ছেলে কানাডায় থাকে। মেয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া। আমাকে সে  ছেলের মতো রাখবে। কেশবপুর বাজারে আমার একটা জমি ছিল সেটা বিক্রি করায়ে বলেছিল, ঢাকায় একটা জমি কিনে দিবে। এভাবে বিভিন্ন ভাবে  ফাদে ফেলে শাহীদ আলম ওরফে খোকনের এই চক্র আমাকে নিঃস্ব করে ফেলেছে, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপযুক্ত বিচার চাইছি এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাইছি ।

যশোর পুলিশ সুপার অফিসে দেওয়া অভিযোগের তদন্ত কারী কর্মকর্তা সার্কেল (কেশবপুর ও মনিরামপুর) এএসপি  কাজী দাউদ হোসেন এর নিকট এ বিষয়ে জানার জন্য একাধিক বার ফোন দিলে, তিনি ফোন না ধরাতে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি । শাহীদ আলমের বহুমুখী প্রতারণার খবর জানতে চোখ রাখুন পরবর্তী সংখ্যায়

এমএসএম / এমএসএম

বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্পের মাটি ভরাটের প্রিলেভেল সার্ভে কাজে প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতি

মাদারীপুরের আলোচিত মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধার কোটায় একই পরিবারের চারজন করছেন সরকারি চাকরি

নিষিদ্ধ হলেও হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে কর্মসূচী ঘোষণা

মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অফিসার তৌহিদুলের শাস্তি দাবি

বিসিকের প্রকল্প পরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসানের ঘুস-দুর্নীতি সমাচার

জমি ক্রয়ের নামে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রবাসি স্বামীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সাবেক পরিচালক সাইফুলের টাকার উৎস কি?

নার্গিসকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দেওয়া হোক

গাজীপুর গণপূর্তের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকের ঢাকায় ১৯ বছরের লুটপাটের রাজত্ব

মসজিদের নামে জমি দখলের চেষ্টা করছে মল্লিক বিল্ডার্স

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টেন্ডার বাতিল এর অভিযোগ

পিডব্লিউডি এর কয়েকজন স্টাফের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর অভিযোগ