সাতকানিয়া কেরানীহাটের ক্লিনিকগুলিতে ভূয়া নার্সে স্বাস্থ্যসেবা তলানিতে

সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাটে ক্লিনিক সিন্ডিকেট’এর মাধ্যমে একটি প্রভাবশালী মহল আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সকল ক্লিনিকের অধিকাংশরই নেই সরকারি কোন যথাযথ অনুমোদন। অতি মুনাফালোভী এ মহলটি সিন্ডিকেট গড়ে তাদের খেয়াল খুশি মত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সব ক্লিনিকে রয়েছে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র।
যারা বিভিন্ন স্থান ও সাতকানিয়া উপজেলা সরকারী হাসপাতাল থেকে রোগী ফুঁসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যায়। তাদের দেয়া হয় দালালীর অংশ।ক্লিনিকগুলোতে একের পর এক রোগী মারা গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভুমিকা নিরব রয়েছে। শুধু তাই নয় এ সংক্রান্ত একাধিক মর্মান্তিক সংবাদ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কেরানীহাট সাতকানিয়া মৌলভীর দোকান, ফুলতলা জোটপুকুরিয়া বাজালিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাহারী নামের মোট ১৪টি ক্লিনিক ও ৩০টির মত প্যাথলজি সেন্টার রয়েছে।উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় গজিয়ে উঠেছে এ সব ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টার। এখানে সেবার নামে যারা চিকিৎসা দিচ্ছে তাদের ৯০ ভাগই অদক্ষ। ক্লিনিকের ম্যানেজার অর্থপেডিক ও সার্জন, এখানে নার্স গাইনি বিশেষজ্ঞ, আয়া হচ্ছে সিনিয়র স্টাফ নার্স আর ব্রাদার এনেস্থেসিয়া। এভাবেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নাকে ডগায় চলছে তুঘলকি কারবার।
যে কারণে একের পর এক রোগি মারা যাচ্ছে। কোন কোন ঘটনা টাকা পয়সা দিয়েই ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে। কোনটা প্রভাব খাটিয়ে, আবার কোন কোনটা ভয়ভীতি দেখিয়ে চাপা দেয়া হচ্ছে।যারা এসব ঘটনার শিকার তাদের অধিকাংশই ক্ষেত মজুর, দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের লোক। গত দুই বছরে বেশ কয়েকটি ক্লিনিকে কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই ম্যানেজ হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের নাম ঠিকানা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
অনেক সময় ডাক্তারের অবহেলার কারণে রোগী মারা যায় বলে চাউর হলেও নেপথ্যে অদক্ষ ও ডিপ্লোমা কোর্স বিহীন নার্স নিয়োগের কারনেও যে রোগী মারা যায় তা গোপন থেকে যায় বার বার।
এমনকি সাতকানিয়ার ইতিহাসে উপজেলা প্রশাসন কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এসব ক্লিনিকের উপর কখনো নজর দেয়নি। কারণ তাদের মদদতেই এবং মাসিক মাসোহারায় নিয়ন্ত্রণ হয় এসব।অথচ!বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল অর্ডিনেন্স অনুযায়ী নার্সিং শিক্ষায় ন্যূনতম ডিপ্লোমা ডিগ্রি না থাকলে কাউকে হাসপাতাল-ক্লিনিকে নার্স হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায় না। কিন্তু চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো যেন এ আইনের বাইরে।
সনদবিহীন বা ভুয়া নার্সে চলছে প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক।কয়েকটি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে দু-একজন সনদধারী, প্রশিক্ষিত বা অভিজ্ঞ নার্স থাকলেও বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিতেও সনদধারী, প্রশিক্ষিত বা অভিজ্ঞ নার্স নেই। এর খেসারত দিতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।
এমনকি এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে। যন্ত্রণা, দুর্ভোগ ও ব্যয় বাড়ছে রোগী এবং স্বজনদের।সাতকানিয়া উপজেলা পর্যায়ের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে খোঁজখবর নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ মিলেছে, অধিকাংশ হাসপাতালেই কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না, বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত রোগীদের বহন করতে হচ্ছে ২০- ২৫ শতাংশ হারে সাভিস চার্জ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেবার বিপরীতে ফি ঠিক আছে। কিন্তু মোট ফির ওপর আবার ২০-২৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ আদায় অন্যায়। এটি রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা।
অভিযোগ উঠেছে, এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকরা প্রভাবশালী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল (অধিকাংশই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, মফস্বল সাংবাদিক) স্থানীয় নেতা হওয়ায় দিনের পর দিন এমন অনিয়ম চললেও প্রশাসন তেমন ব্যবস্থা নেয় না। মাঝেমধ্যে প্রশাসন কিছু অভিযান চালালেও অধিকাংশের মতে প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই নগণ্য এবং যেখানে বেশি অনিয়ম, যে মালিকরা বেশি প্রভাবশালী- সেখানে অজ্ঞাত কারণে অভিযান চালানো হয় না। ফলে দিন দিন রোগীদের দুর্ভোগ, হয়রানি ও ঝুঁকি বাড়ছে।
সাতকানিয়া উপজেলার কেরানীহাটের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো হাসপাতালে একজন সনদধারী/অভিজ্ঞ নার্সের বিপরীতে সহকারী নার্স (সনদধারী নার্সের সহযোগী) হিসেবে নামেমাত্র বেতনে আরও ৫-৬ জন নিয়োগ দেয়া হয়েছে- যাদের নার্সিং বিষয়ে কোনো শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ নেই।
কেরানীহাট এলাকার অলকেয়ার হাসপাতালে প্রতিবেদকের জানামতে কোন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কিংবা ডিপ্লোমাধারী নার্স নেই বল্লেই চলে,অপরদিকে কেরানীহাট এলাইট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে একজন জানান -তাদের ১০বেডের অনুমোদন আছে তবে ৬জন ডিপ্লোমাধারী নার্স আছে,এর চেয়েও বেশী আছে যা প্রয়োজনসাপেক্ষ।এদিকে কেরানীহাটের বহুল আলোচিত আশশেফা হাসপাতালের ৬০জন নার্সের মধ্যে মাত্র ২০জন আঠার মাসের কোর্সধারী এবং ২৪মাসের কোর্সধারী ও চন্দ্রঘোনা থেকে নার্সিং ডিগ্রীধারীদের রাখা হয়েছে বলে জানান, প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো:জাহেদুল ইসলাম।
তবে আশশেফা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ডেলিভারি রোগীদের সাথে অদক্ষ নার্স দেয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।তাদের অদক্ষ নার্সদের কারণে একাধিক নবজাতক ও রোগীর মৃত্যু হওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এখনো তাদের নার্সিং বিষয়টা তলব করেনি।
এদিকে অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে,চলতি বছরের ২রা এপ্রিল ডাক্তার জমিলা খোর্শেদের অধীনে একজন ডেলিভারি রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করলে তার সহযোগী হিসেবে থাকেন অশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণবিহীন প্রতিষ্ঠানটির পুরাতন ভূয়া নার্স রোকেয়া বেগম(৪৫)।পরে নার্সের অদক্ষতার কারণে রোগীর মৃত্যু হলে রোগীর স্বজনরা নার্স রোকেয়া বেগমের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও অজানা কারণে তা আর তেমন ভাবে প্রকাশিত হয়নি।
এদিকে রোকেয়া বেগমদের মত অদক্ষ নার্সের সেবার ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে পুরো উপজেলার চিকিৎসা সেবা। শুধু তাই নয়,বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, সব হাসপাতালের নার্সদের ব্যবহার একই রকম- টাকা দিলে সেবা দেয়, না পেলে খারাপ আচরণ করে।
তাদের কাছে রোগী ও চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে কিছুই বলতে পারে না। কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এমনকি ডাক্তারদের বিভিন্ন নির্দেশনাও তারা (নার্স) বুঝতে পারেন না। ফলে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবনসহ অন্যান্য বিষয়ে মারাত্মক ভুল হতে পারে যে কোনো সময়। তারা বলেন, কষ্টার্জিত অর্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েও আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে উল্টো আমাদের নাজেহাল হতে হয়।
এদিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন,এই বিষয়টা কেউ নজরে আনেনি এটা সত্য তবে বিষয়টা তদন্তপূর্বক অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং অননুমোদিত হাসপাতালের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ খুব কঠোর।
এমএসএম / এমএসএম

বালু খেকোরা যত বড় হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে নাঃ ইউএনও তরিকুল ইসলাম

বন্দরবান জেলা পরিষদের প্রকল্প বাতিল, পিছিয়ে পরার ভয় ১৩ জনগোষ্ঠীর

পারিবারিক কলহের জেরে পিতার হাতে পুত্র খুন

চিলমারীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

কুড়িগ্রামে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে জেলা পরিষদের শিক্ষাবৃত্তির চেক প্রদান

ডায়াগণস্টিকে স্বাক্ষর জালিয়াতি : খাবারে নেই মেয়াদ, দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা, অভিযোগের তীর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে

সাঘাটা খাদ্য বান্ধব ডিলার এসোসিয়েশনের কার্য্যনির্বাহী কমিটি গঠন

পঞ্চগড়ে প্রাঃ শিক্ষা অফিসারের অর্থ কেলেঙ্কারি ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি কতৃপক্ষের

সাতক্ষীরা শহরের ৯নং ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলারের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ

গোদাগাড়ীতে উন্নত জাতের মাসকলাই বীজ ও সার বিতরণ
