বসুন্ধরার এমডির পক্ষে মামলা আপোসের চাপ

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকার পর হঠাৎ করেই জনসমক্ষে এলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। গত ২৯ মে শনিবার শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের (২০২১-২৪) নির্বাচন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা জমা দেয়নি। আর এই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে না পারার কারণেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। আর প্রধান কারণ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া। এজন্যই আদালতের কাছে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ সূত্র জানায়, পোস্ট মর্টেমের প্রাথমিক রিপোর্ট এক মাসেই হয়ে গেছে। আর নিহতের লাশের ভিসেরা রিপোর্ট, ড্রাগ রিপোর্ট, নেক টিসু ও জরায়ূ রিপোর্ট করবে মহাখালীতে। আর মাইক্রোবায়োলজি রিপোর্ট করা হবে। এছাড়া, ডিএনএ রিপোর্ট দেবেন সিআইডি। এসব পরীক্ষার রিপোর্টের সমন্বয়ে একটি রিপোর্ট হবে। কিন্তু পরিপূর্ণ প্রতিবেদন তৈরি এখনও শেষ হয়নি। তবে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার জন্য দেড় থেকে দু’মাস সময় লাগতে পারে।’
গত ২৬ এপ্রিল সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কলেজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে গুলশান থানা পুলিশ। তার দুই পা বিছানার সঙ্গে লেগে ছিল এবং উভয় হাঁটু কিছুটা বাঁকা অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে। এঘটনায় নিহতের বোন আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত রোববার কলেজ শিক্ষার্থী মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান সকালের সময়কে বলেন, ‘আমরা এখনও হুমকি পাচ্ছি। আমাদের পরিচিত মানুষ ও আত্মীয়-স্বজনরাও আমাদেরকে বলছেন মামলা আপোস করতে। শুধু তাই নয়, আমাদের পরিচিত এক মুনিয়ার মামলার বিষয়ে কথা না বলার শর্তে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। যিনি টাকা নেওয়ার পরিবর্তে চুপ থাকার প্রস্তাব দিয়েছেন তার পরিচয় দিতে রাজী হননি।
মামলার বাদি নুসরাত জাহান জানান, এখনো আমাকে ও আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয় ব্যাংকের চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত করারও হুমকি দিয়েছেন। আর তাদের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তাদেরকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখন ভয়ে আছি। যে কোনো ধরণের ক্ষতি আমাদের করতে পারে। আর হুমকির বিষয়ে গত পহেলা মে কুমিল্লার কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছি।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ অর্থের বিনিময়ে মামলাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তার প্রমাণ পাচ্ছি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কথায় আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। পুলিশের পরামর্শে থানায় বসে মামলা লেখা হলেও এখন সেই পুলিশই অভিযোগ করছেন মামলা বাসায় থেকে লিখে এনেছিলাম। আর ৩০৬ ধারায় মামলা করেছি কেন? আর ধর্ষণের মামলা করি নাই কেন? তার প্রশ্ন করা হচ্ছে। অথচ আমরা কোন ধারা টারা জানি না। পুলিশ মামলা নিয়েছে, তারাই তো মামলার ধারা বসিয়েছে। এখন আমাদের দায়ী করা হচ্ছে। এতেই বুঝতে পারছি পুলিশও ম্যানেজ হচ্ছে।
অপরদিকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান এবং কলেজ ছাত্রী নুসরাত জাহান মুনিয়ার মধ্যে কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট ইয়াদিয়া জাহান নামে এক আইনজীবী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সচিব এর কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ওই নোটিশের কোন উত্তর তিনি পাননি। এজন্য আগামি ১০ থেকে ১২ দিন পর পুনরায় আরো একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করবেন বলে গতকাল সকালের সময়কে তিনি জানিয়েছেন।
এদিক গতকাল গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান সকালের সময়কে বলেন, ৩০ এপ্রিল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা নির্ধারিত সময়ে আদালতে জমা দিতে পারি নাই। এজন্য আদালতে পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ভার্চুয়াল কোর্ট তো। এজন্য সোমবার পর্যন্ত আদালত সময় নির্ধারণ করে দেননি বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন বাদি হয়ে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে।
এমএসএম / এমএসএম

গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইউসুফের দুর্নীতির রাজত্ব

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীগন

‘এনবিআর’এ স্বৈরাচার সরকারের পালিয়ে থাকা চক্রের চক্রান্ত

প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ

বিসিএসআইআরের ৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনায় ভাগ বাটোয়ারা

কোতোয়ালীতে অপহৃত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

রেজিস্ট্রি অফিসের প্রভাবশালী নকলনবিশের কাণ্ডঃ মন্ত্রীদের প্রভাবে চাঁদাবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বিসিক এর নীরিক্ষা কর্মকর্তা সাবধান আলী হতে সাবধান!

কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজাবাড়ী রোডে অবৈধ এলপিজি বটলিং প্লান্ট এর সন্ধান

গডফাদার মুরাদ জং-এর বোন পরিচয়ে দলিল দাতা-গ্রহীতাদের জিম্মি করার অভিযোগ

গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে

বগুড়ায় সাবেক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে 'ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেটের' মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
