ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারি চক্র সক্রিয়


সম্রাট, কয়রা photo সম্রাট, কয়রা
প্রকাশিত: ২৬-৮-২০২১ দুপুর ১:৪২

কোম্পানি নামধারী জেলে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় নৌকা ও ট্রলার নিয়ে বনের ভেতরে ঢুকে বিষ প্রয়োগে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে মাছ শিকারে সক্রিয় একটি প্রভাবশালী চক্র। তারা বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে পাস-পারমিট বন্ধের সময় ও সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করছে চক্রটি। এতে শুধু মাছ নয়, প্রায় সব জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। বিষ দিয়ে মাছ শিকার করায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ধ্বংস হবে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

অসাধু  চক্রটি মরা গোনে নদীতে স্রোতের বেগ কম থাকার সুযোগে বনের ভেতরের খালগুলোয় তরল রিপকর্ড রাসায়নিক বিষ প্রয়োগ করে চিংড়ি মাছ ধরা অব্যাহত রেখেছে। জোয়ার পরিপূর্ণ হওয়ার পর খালের নিচের অংশে ছোট ফাঁসযুক্ত ভেসাল জাল পেতে দেয়া হয়। এরপর ডিঙ্গি নৌকা বেয়ে দ্রুত খালের অগ্রভাগে পৌঁছে রিপকর্ড বিষ ঢেলে দেয় প্রভাবশালী কোম্পানির ছত্রছায়ায় থাকা ধুরন্ধর এই জেলেরা। ভাটা শুরু হলে খালের অগ্রভাগের পানি নিচের দিকে চলে আসতে শুরু করে। তখন বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত খালের ভেতরের ছোট-বড় সমুদয় চিংড়ি মাছ মরে খালের নিচের অংশে পাতানো ভেসাল জালে জড়ো হতে থাকে। ভাটা শেষ হলে প্রতিটি ভেসাল জালে স্থানভেদে ৩০ থেকে শুরু করে ২০০ কেজি পর্যন্ত মরা চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত চিংড়ি কিছুক্ষণ পর লালচে বর্ণ ধারণ করে। 

অসাধু জেলেরা পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের টানা ভারানি, চালকি খাল, কালির খাল, খড় কুড়িয়া, আন্ধার মানিক, ধানসাগর, জয়মনি, সুপতি, আদাচাকি, মার্কি, মান্দারবাড়ি, গেড়া, চালকি, মোল্লাখালী, টেংরাখালী, জামতলা, ছেড়া, হংসরাজ, গেওয়াখালী, পাথকষ্টা বজা খাসিটানা পাত কোস্টার বড় খাল, ছোট খাল, গেওয়াখালী, নীলকমল, নোটাবেকি, পুষ্পকাঠি, টেংরাখালী, গমসার খাল, গোল ভোগসা, খেতা ছেড়া, ছোট খচখুচি, বড় খচখুচি, ছোটো কাচিকাটা, বড় কাচিকাটা, হোগল দারু, ছোট বাঘনা, বড় বাঘনা, কুনচি, চরের খাল, দুম্বুখালী, ভায়লা, ছোট পুকুর, বড় পুকুর, বড় মাদুরখালী, পোচলা, কালির চর, সাপখালী, আগুন জ্বালাসহ বনের ভেতরের অসংখ্য নদী-খালে সারাবছর বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে আর্থিক ফায়দা লুটে সক্রিয় বিষ দিয়ে মাছ শিকারের এই চক্রটি। এতে বিলুপ্ত হচ্ছে ছোট প্রজাতির সমুদয় মাছ। ক্ষতি হচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদের।

কোম্পানির দাদনভুক্ত জেলেদের সুন্দরবনের বিপুল পরিমাণ চিংড়ি ও সাদা মাছ লোকালয়ে কয়রার আংটিহারা, ঘড়িলাল, কাশির হাটখোলা, পাথরখালী,  কাটকাটা, ৬নং কয়রা লঞ্চঘাট, ৪নং কয়রা, ৫নং কয়রা, সুতিবাজার, পবনা, মহেশ্বরীপুর, তেতুলতলা চর, নয়ানী দিয়ে কয়রা এলাকার শুঁটকির খটি, ফুলতলা মৎস আড়ত, দেউলিয়া বাজার মৎস আড়ত, চাদালি মৎস আড়ত, পাইকগাছা মৎস আড়তে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হয়। এছাড়া দাকোপ, শ্যামনগর, আশাশুনিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মাছ ব্যবসায়ী একই ভাবে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে সুন্দরবন থেকে ধরা মাছ খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। 

বিষ প্রয়োগ রোধে বন বিভাগ পরিচালিত স্মার্ট পেট্র্র্রোলিং টিম, কোস্টগার্ড, পুলিশ, বন বিভাগ বিষ ঢেলে মাছ শিকারের অপরাধে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই মাসে হাতেনাতে ৪০ জেলেকে ৩০টি নৌকাসহ আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করাসহ কয়েক মণ বিষ প্রয়োগকৃত মাছ বিনষ্ট করে। কিছুদিন পর জামিনে মুক্ত হয়ে তারা পুরনায় সুন্দরবনে প্রবেশ করে আগের মতো করে মাছ শিকার করে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কথিত কোম্পানিগুলোর ছত্রছায়ায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়রা উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় গড়ে ওঠা অবৈধ শুঁটকি ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের টাকার সঙ্গে জেলে নামধারী দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে দেয় কীটনাশক। এই কীটনাশক প্রয়োগের ফলে সুন্দরবনের জলজ প্রাণী সমূলে ধ্বংস হচ্ছে। বিষাক্ত পানি পান করলে বাঘ, হরিণ, শূকরসহ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের অন্যান্য প্রাণীর ওপর এর প্রভাব পড়ছে। আর এভাবেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। অপরদিকে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই এই বিষাক্ত মাছ খেয়ে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ।

খুলনার দক্ষিণ বেদকাশি এলাকার বেলায়েত আলী জানান, সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে এবং খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এক শ্রেণির অর্থলোভী মৎস্য ব্যবসায়ী (কোম্পানি) দুর্বৃত্তদের হাতে বিষ দিয়ে এসব খালে মাছ শিকারে পাঠাচ্ছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে ও বাওয়ালি বলেন, বিষ দিয়ে মাছ ধরা ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে গোটা সুন্দরবন নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তারা বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসায় নামেন। তাদের সাথে যোগাযোগ থাকলে সুন্দরবনের ব্যবসায় (মাছ ধরা) কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না।

বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধে বন বিভাগ কার্যকর কী পদক্ষেপ নিয়েছে- এ প্রশ্নের উত্তরে সুন্দরবন খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, বিষ দিয়ে মাছ শিকারসহ নানা অনিয়ম রোধে বনে স্মার্ট পেট্রোলিং অব্যাহত আছে। কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরায় ক্ষতি হচ্ছে অনেক বেশি। কারণ, কীটনাশকে সব প্রজাতির রেনু পোনা মরে সুন্দরবনের খাল-বিল মাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, সুন্দরবনে যে কোনো ধরনের দুর্বৃত্তায়ন রোধ করা হবে। 

এমএসএম / জামান

ঈশ্বরদীতে ট্রেনে কেটে এক ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যু

মসজিদের খতিব–ইমাম–মুয়াজ্জিনদের সুরক্ষায় নীতিমালা চূড়ান্তঃ কুমিল্লায় ধর্ম উপদেষ্টা

মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনঃবিবেচনার দাবিতে গণজমায়েত

চর ওয়াশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর করেন জাতীয় বীর আমান উল্লাহ আমান

গাজীপুরের রাজনীতিতে ঝড় তুললেন ইরাদ সিদ্দিকী

ধুনটে বালুবাহী দুই ট্রাকের চাপে অটোরিকশাচালক নিহত

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের হীরক জয়ন্তী পালন

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিলমারী মডেল থানার এসআই আসাদুজ্জামানের আকস্মিক মৃত্যু

কোম্পানীগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও সহায়তা প্রদান

দুমকিতে সশস্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দুমকিতে গাভী লুটপাটের অভিযোগ 'মিথ্যা', দাবি করে সংবাদ সম্মেলন

ভূমিকম্পকে আল্লাহর সতর্কবার্তা হিসেবে দেখার আহ্বান – মাওলানা আব্দুল ওয়াহাব (বড় হুজুর, কাছাইট)

সিংগাইরে জমি নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা