শার্শার ইজারাবিহীন সাতমাইল পশুর হাটের মিথ্যা বিজ্ঞাপন
দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ বাগআঁচড়ার সাতমাইল পশুর হাটের আদায়কারীদের একটি চক্র অবৈধ অর্থ আয়ের জন্য বেপরোয়া হয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। এই চক্রের সাথে যোগ দিয়েছেন তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও। সব মিলিয়ে এই হাটে শনি এবং মঙ্গলবার লুটেরাদের রাজেত্ব কায়েম হয়েছে। প্রতি হাটে এই হাট থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ৬-৭ লাখ টাকা।
৮-১০ লাখ টাকা আয় হলেও সামান্য কিছুু টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা লোপাট করছে চক্রটি। নিজেদের অবৈধ আয় জায়েজ করতে এবং নিজেদের পকেট ভর্তির জন্য এই হাটের আয় বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছে লুটেরা চক্রটি। তারা অনৈতিকভাবে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে, যার প্রতিবাদ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান।
তাদের অবৈধ আয় জায়েজ করতে এই প্রতারণা এবং মিথ্যাচারে লিপ্ত অলিখিত হাট মালিক এবং তার তল্পিবাহকরা। এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন স্বঘোষিত হাট মালিক আলোচিত জাহাঙ্গীর মেম্বার গং। শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হাটের পরিচালক সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন তৈরি করে বিভিন্ন পত্রিকায় সরবরাহ করা হয়। এমন বিজ্ঞাপন যশোরের স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায়ও পাঠানো হয়। যশোর জেলার শার্শা উপজেলার সাতমাইল ‘হাট পরিচালনা এবং প্রচারে যশোর জেলার শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’ লেখা বিজ্ঞাপনের বিষয়টি উপজেলা কর্তৃক না হওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয় বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করলে তিন হাজার টাকা করে দেয়া হবে। পরে দাম তোলে ১০ হাজার টাকা।
বহিরাগতরা কিভাবে সরকারি বিজ্ঞাপন দিচ্ছে- জানতে চাইলে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। তখন বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি প্রথমে বিজ্ঞাপনটি দেখতে চান। পরে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, বিজ্ঞাপনটি তার নয়। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবাদলিপি দেয়া হয়েছে, যার স্মারক নং ০৫.৪৪.৪১৯০.০১৮.০৮.০২৩.২৪-৯৫২, তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২৪।
এতে বলা হয়েছে, বিষয় :পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে। উপযুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, অদ্য ০৫- ১০-২০২৪ খ্রিঃ তারিখ শনিবার দৈনিক যশোর, দৈনিক রানারসহ স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শার্শা, যশোরের নাম দিয়ে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে মর্মে নিম্নস্বাক্ষরকারীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উপজেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শার্শা, যশোরের পক্ষ হতে বিজ্ঞাপনটি দেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শার্শা, যশোর এ বিজ্ঞাপনের কোনো দায়-দায়িত্ব বহন করবে না। ভবিষ্যতে শার্শা উপজেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নামে কোনো বিজ্ঞাপন প্রকাশের পূর্বে যাচাইপূর্বক পত্রিকায় ছাপানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রতিবাদের কপি জেলা প্রশাসক যশোর, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার, যশোর, অফিসার ইনচার্জ, শার্শা থানা যশোরসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই প্রতারণায় জড়িত কাউকে আটকের সংবাদও মেলেনি। এমনকি অলিখিত ইজরাদারকে বাদ দেয়ারও কোনো খবরও মেলেনি। শুধু ইউএনওর নামে বিজ্ঞাপন প্রতারণা নয়, এই হাট নিয়ে অভিযোগ রয়েছে সর্বত্রই।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং হাটের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল বাগআঁচড়ার সাতমাইল পশুর হাটের ইজারা শেষ হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে সম্পূর্ণ ইজারাবিহীনভাবে সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দীনের নির্দেশে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশেষ ব্যবস্থায় হাটটি চালাতেন বাগআঁচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকু। উক্ত সময়ে হাটে আসা ব্যাপারীরা ৩ হাজার টাকা দিয়ে কার্ড গ্রহণ করলেও গরুপ্রতি তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করা হতো এবং সাধারণ ক্রেতাদের কাছে থেকে গরুপ্রতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা আদায় করা হতো। অথচ গরু হাট ইজারা না হওয়ায় সরকারি পাস মূল্য ছিল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। আ.লীগ সরকারের পতনের পরে হাটটি পরিচালনায় ওইসব নেতা গা ঢাকা দিলে ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে হাটটি দুদিন পরিচালনা করছিল উপজেলা প্রশাসন।
কিন্তু আ.লীগের ইউনিয়ন সভাপতি বকুল ও টিংকুর কাছ থেকে করা ব্যাপারী কার্ডের কোনো সুবিধা পাননি কার্ডধারী ব্যাপারীরা। হাটে কার্ডধারী ব্যাপারী ও সাধারণ ক্রেতাদের একই মূল্যে প্রতিটি গরুর পাস শুরু হলে ক্ষুব্ধ হন কার্ডধারী ব্যাপারীরা। তারা আন্দোলন শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় গত ২০ আগস্ট হাটটি বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর মাসখানেক পর গত ২০ সেপ্টেম্বর ফের চালু হয় হাটটি।
সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হাটের অলিখিত দায়িত্ব পান স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর অন্তত ৫টি হাট পেয়েছেন। এখানে সপ্তাহে দুদিন মঙ্গল ও শনিবার হাট বসে। অথচ বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে শনি ও রবিবার হাট বসে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতি হাটে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আয় হয়। কিন্তু সরকারি খাতে জমা হয় যৎসামান্য। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কঠোর এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
T.A.S / জামান
ম্যানগ্রোভ ইকো-ট্যুরিজম মডেল বাস্তবায়নে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষর
মোহনগঞ্জে গাঁজাসহ তিন মাদককারবারি গ্রেফতার
প্রতারণার বিচার চাওয়ায় কুয়েত প্রবাসীকে প্রাণনাশের হুমকি, সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ
রেল শ্রমিকদের ৫ দফা দাবি মানতে হবে: লুৎফর রহমান
ছারছীনা দরবার শরীফে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ১৩৫তম ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল
চারঘাট-বাঘায় উন্নয়ন অঙ্গীকার ও নির্বাচন বার্তা দিলেন আবু সাঈদ চাঁদ
কল্যাণ বোর্ডকে আয়বর্ধক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে': মহাপরিচালক তাসলিমা কানিজ নাহিদা
হাইল হাওরের ‘লাল শাপলা বিল’ দেখতে শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের ভিড়
ভোলার গ্যাস আপনারা নেন, ভোলা-বরিশাল সেতু দেন" দাবিতে কোনাবাড়ীতে ভোলাবাসির মানববন্ধন
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় হাতিয়ায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
শালিস বৈঠকের পর সকালে অটোরিকশা চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ
পাবনা-৩ আসনে স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে চাটমোহরে মশাল মিছিল ও হুঁশিয়ারি