বারহাট্টায় শীতের কাপড় কিনতে ক্রেতাদের ভিড়
বাংলা ঋতু চক্রে হেমন্তের শেষের দিকে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। হিমেল হাওয়া আর তার সঙ্গে যোগ হওয়া ঘন কুয়াশার কারণে বারহাট্টা উপজেলা জুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম কাপড়ের চাহিদা। শীত নিবারণের জন্য মানুষজন ভিড় করছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। তবে বরাবরের তুলনায় এবার কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় শীতকে কেন্দ্র করে পুরোনো ও তুলনামূলক একটু কমদামি কাপড়ের দোকানে ক্রেতারা বেশি ঝুঁকছেন।
উজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা সদর ও বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারে শীতের পোশাক আমদানি ও বেচা-কেনা ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। উপজেলা সদরের ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় তৈরি পোশাকের দোকানে শীতবস্ত্র কেনা-বেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে অন্যান্য জিনিসের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পোশাকের দামও। নতুন কাপড়ের এতই দাম যা নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। ফলে শীত নিবারণের জন্য নিম্ন আয়ের এসব মানুষগুলো কম মূল্যের শীতবস্ত্র কিনতে ছুটছেন ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে।
এছাড়াও উপজেলার অন্যান্য এলাকার স্থানীয় সাপ্তাহিক হাটেগুলোতেও দেখাগেছে, শীতবস্ত্র বেচা-কেনার ব্যস্ততা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ছোট বড় সব বয়সীদের স্যুয়েটার, জ্যাকেট, কোর্ট, গেঞ্জি, বেবিস্যুট, মাংকিটুপি, মোজা সহ নানা রংয়ের শীতের পোশাক সাজিয়ে রেখেছে বিক্রেতারা। এসব দোকানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। ফুটপাতে কম দামে ভালো পোশাক পাওয়া যায় তাই নিম্নবিত্তদের সাথে সাথে মধ্যবিত্তের ক্রেতারাও পছন্দের পোশাকটি কিনে নিচ্ছেন।
উপজেলা সদরের গরুহাট্টা ফুটপাতে পুরাতন কাপড়ের দোকান সাজিয়ে বসা সুরুজ মিঞা সকালের সময়কে বলেন, ধীরে ধীরে বাড়ছে শীত। তাই আমরা বিভিন্ন ধরনের ও বাহারি রঙের শীতের কাপড় সাজিয়ে রাখছি। আমাদের এখানে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের শীতের পোশাক রয়েছে। বেচাকেনাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। শীতের তীব্রতা যেমন অনেকের কষ্টের কারণ তেমনি আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ ধার কর্জ করে ব্যবসা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে কম দামে গরম পোশাক কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষরা ফুটপাতে বসা আমাদের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। আমাদের এসব দোকান থেকে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০/৭০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শীতের পোশাক কিনতে পারছেন বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ।
বারহাট্টা উপজেলা সদরের গোপালপুর বাজারের পোশাক বিক্রেতা পলাশ মৌল্লা বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে শীতের পোশাক ভালোই বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দোকানে নানা ধরনের নতুন নতুন পোশাক তুলেছি। ক্রেতারাও তাই ভিড় করছেন তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে।
বেচাবিক্রি কেমন জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে পোশাকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেচা-কেনা গত বছরের তুলনায় কম হচ্ছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। তবে শীতের তীব্রতা আরো বাড়লে ক্রেতা বাড়বে।
উপজেলা সদরের গরুহাট্টা ফুটপাত থেকে শীতের কাপড় কিনতে আসা অটোরিক্সা চালক ইদ্রিস আলী বলেন, আমাদের মত দিনমজুর থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন এসব পোশাকের ক্রেতা। এখানে স্বল্প আয়ের লোকজন নিজেদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পোশাক কিনতে পারছি। তাই কেনাকাটাও বেশি হচ্ছে। আমিও নিজেরসহ বৌ, ছেলে-মেয়ের জন্য কয়েকটা পোশাক কিনেছি।
বাউসী বাজারে ফুটপাতে কাপড় কিনতে আসা রাহেলা বেগম নামের এক ক্রেতা জানান, বাজারে অনেক দোকান ঘুরেছি কিন্তু গতবারের তুলনায় এবার দাম বেশি। তাই এখন বাজারের ফুটপাত থেকে তুলনামূলক কম দামে কিনতে আসলাম। পছন্দ করে তিনটা শীতের পোশাক কিনেছি।
T.A.S / T.A.S