ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বারহাট্টায় মানহীন ও ভেজাল শিশুখাদ্য বিক্রির সয়লাব


বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি photo বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২-১২-২০২৪ দুপুর ৩:৩৯

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে অনিরাপদ বিষাক্ত শিশুখাদ্য। ফেরিওয়ালা থেকে দোকান সব জায়গায়ই শিশুদের আকৃষ্ট করতে নানা রঙের চিপস, চানাচুর, আঁচার, জুস, হাওয়াইমিঠাই, চুইনগাম, চকোলেটসহ বিভিন্ন বিষাক্ত খাদ্যপণ্য দেদার বিক্রি হচ্ছে। রঙিন মোড়কে মোড়ানো এসব পণ্যের বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কর্তৃক নেই কোন অনুমোদন। অনুমোদনহীন এসব পণ্য নিয়মিত খাচ্ছে শিশুরা। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রাম্য বাজার ও গ্রামের ছোট ছোট দোকানে এসব অনিরাপদ শিশুখাদ্যের রমরমা ব্যবসা চলছে। ২-৩ বছর বয়সী শিশু থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা এসব খাবারের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। সরকারি অনুমোদনহীন উৎপাদনকারী ছোট ছোট কোম্পানি দোকানদারদের বেশি লাভ দিয়ে এসব খাবার বিক্রি করে চলেছে।

সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন ছোট-বড় দোকান ঘুরে দেখাগেছে, প্রায় সব দোকানেই সরকারি অনুমোদন থাকা কোম্পানিগুলোর চেয়ে অনুমোদনহীন স্থানীয় কোম্পানির চকচকে মোরকে মোড়ানো বিষাক্ত শিশুখাদ্যের চাহিদাই বেশি। শিশুদের আকর্ষণ বাড়ানোর কৌশল হিসাবে সরকারি অনুমোদনহীন স্থানীয় ছোট ছোট কোম্পানিগুলো রঙবেরঙের মোড়ক ব্যবহার করছে। ‘লাইকি কোম্পানি’ নামক স্থানীয় কোম্পানি যার সরকারি অনুমোদন কোন নেই। তারা ছোট প্লাস্টিকের মোড়কের ভেতর বরইয়ের বিচি গুড়া করে বিট লবন ও মরিচের গুড়া মিশিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে চলেছে। এসব পণ্যের প্রতি শিশুসহ বয়ষ্করাও আগ্রহী।

অনিরাপদ অনুমোদনহীন খাবার বিক্রি করার আরেক কৌশল লটারি। শিশুদের আকর্ষণ বাড়াতে খাবারের সাথে লটারি রাখা হয়। ‘শেফা ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে এক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আকর্ষণীয় প্লাস্টিকের প্যাকেটে মানহীন স্ট্রবেরি জুসসহ অন্যান্য আকর্ষণীয় খাবার জিনিস বিক্রি করে। লটারির লোভে শিশুরা এসব অনুমোদনবিহীন জিনিস ক্রয় করে থাকে। লটারি হিসেবে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা, বেলুন, নগদ (৫-১০) টাকাসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় সামগ্রী রাখা হয়। এ ছাড়াও বিক্রি হচ্ছে অনেক রকমের শিশুদের আকৃষ্ট করার মত অনুমোদনহীন ক্ষতিকর পন্য। গ্রামের বাজারে ভোক্তা অধিকারের নজর কম থাকায় এসব খাবার সহজেই উৎপাদনকারীরা বিক্রি করতে পারছে। তা ছাড়া এসব খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে অতিরিক্ত চিনি, সেগারিন, টেস্টিং সল্ট ও শুকনা মরিছের গুড়া ইত্যাদি।

অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা সকালের সময়কে জানান, বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে বের হলেই রঙবেরঙের এসব বিষাক্ত খাদ্যপণ্য তাদের নজর আকৃষ্ট করে। ফলে ক্ষতির আশঙ্কা জেনেও বাচ্চাদের মন রক্ষার্থে ওইসব বিষাক্ত খাদ্যপণ্য কিনে না দিয়ে পারা যায় না। এরপরও যতটুকু সম্ভব ওইসব খাবার থেকে তাদের দূরে রাখি।

স্কুল শিক্ষিকা পপি সরকার নামের একজন অভিভাবক জানান, শিশুদের আকৃষ্ট করতে ওইসব খাদ্যপণ্য এমনভাবে মোড়কজাত ও প্যাকেটজাত করা হয়, আমরা বড়রাও অনেক সময় আকৃষ্ট হয়ে যাই। ফলে তাদের পণ্য বাজারে শিশুসহ বড়দের কাছেও সাড়া ফেলে। কারণ এসব বিষাক্ত খাদ্যপণ্যের যেমন মোড়কজাত ও প্যাকেটজাত রয়েছে তেমনি বিএসটিআইয়ের লোগো রয়েছে। ফলে বিএসটিআইয়ের লোগো আসল নাকি নকল সেটা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ আমাদের নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন কোম্পানির লোকেরা কম দামে আমাদের কাছে এসব জিনিস দিয়ে থাকে। এসব খাবারের প্রতি শিশুদের চাহিদা বেশি থাকে। এসব জিনিসের চাহিদা বেশি থাকায় কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। ফলে লাভও বেশি হয়।

খাবার উৎপাদনকারী এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করার কথা জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘রাইসা আচার কোম্পানির ম্যানেজার জানান, আমাদের শুধু ট্রেড লাইসেন্স আছে। তা দিয়ে আমারা ব্যবসা পরিচালনা করছি। এসব খাবার বাজারজাতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বেশিরভাগ শিশুই ক্যানসার, কিডনি রোগসহ বড় বড় রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত খাবার শুধু শিশুদেরই না বড়দেরও অনেক রোগ সৃষ্টি করে। তাই শিশুদের মেধা বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব বিষযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। তা না হলে শিশুরা অল্প বয়সেই কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিসহ বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হবে। তাই শিশুদের যত্নে অভিভাবকদেরও সজাগ থাকতে হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নেত্রকোনার সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, 'ভোক্তাদের অভিযোগের বাইরেও আমরা প্রায়ই ছোট-বড় বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়ে থাকি। অভিযানে বিষাক্ত খাদ্যপণ্য কিংবা কাঁচামাল পেলে জেল-জরিমানা ও কারখানা সিলগালাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া পরও বন্ধ করা যাচ্ছে না। সিন্ডেকেটের সহযোগিতায় অসাধুরা ওত পেতে থাকার কারণে অভিযান থেকে অনেক সময় পার পেয়ে যায়।

T.A.S / T.A.S

চৌদ্দগ্রামে মুন্সীরহাট ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা

মিরসরাইয়ে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ভর্তি প্রাইভেটকারসহ একজন আটক

নগরকান্দায় নবজাতকের লাশ উদ্ধার

লোহাগড়ায় শরিফুল মোল্লার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, বিএনপির প্রতিবাদ

কোনাবাড়ীতে ইমরান বেকারিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা

কুতুবদিয়ায় আগাম তরমুজ ও খিরা চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক

ধামইরহাটে এতিমখানা ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌদি সরকারের দুম্বার মাংস বিতরণ

বাঁশখালীতে একাধিক মামলার আসামি বৈলছড়ীর মিজান গ্রেফতার

সাগর পথে মায়ানমারে সিমেন্ট পাচার; বোট ডুবে সাগরে ভসছিল রোহিঙ্গাসহ ৬ জন

গুইমারা রিজিয়নের আওতাধীন সিন্দুকছড়ি জোনের মাসিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

রাজশাহীতে আইডায়াস্পোরা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

জামলা বহুমুখী তা'লিমুল কুরআন ও নুরানি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

শাহজাদপুরে কৃষকদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন