বারহাট্টায় পরিত্যক্ত হাজত খানায় ৫ পরিবারের বসবাস
নেত্রকোনার বারহাট্টায় পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ কোর্ট ভবনের হাজত খানায় দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছে ভূমি ও গৃহহীন পাঁচটি পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ১৯৮৫ সালে বারহাট্টা উপজেলা সদরের বৃ-কালিকা এলাকায় নির্মিত কোর্ট ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও নিজেদের বসতভিটা না থাকায় জীবনের মায়া ত্যাগ করেই ভবনের কয়েদি রাখার রুম গুলোতে (হাজত খানা) বসবাস করছে ৫টি পরিবার।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে বসবাস করা পরিবার গুলোর মধ্যে একটি পরিবারের সদস্য সমলা আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি সকালের সময়কে বলেন, তিনি উপজেলার গুমুরিয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী। আশ্রয়নের ঘরের জন্য ৩ বার আবেদন করেও কোন ঘর বরাদ্দ পাননি। নিজের কোন জমি না থাকায় বাধ্য হয়ে ছোট্ট একটি মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে জীবনের ভয়কে উপেক্ষা করে ঝুকিপূর্ণ ভবনটিতে কষ্ট করে দিনাতিপাত করছেন।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এই পরিবার গুলোর মতো আরও ভুমিহীন রেখেই ২০২৩ সালের ২২ মার্চ বারহাট্টা উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। তৎকালীন সময়ে বারহাট্টা উপজেলায় মোট ১৮০টি পরিবারকে দলিলসহ ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয় অথচ এখন এই ১৮০টি ঘরের মধ্যে নিজেদের বাড়ি-ঘর থাকায় এখন অনেক ঘরই খালি পড়ে আছে। তারা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শখের বশে ঘর নিয়ে এখন খালি ফেলে রেখেছে। কিন্তু এই পরিবারগুলো প্রকৃত গৃহহীন হয়েও ঘর না পেয়ে পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ কোর্ট ভবনের হাজত খানায় বসবাস করছে।
এ বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের মুখে অনেক সমালোচনা শোনা যায়। তারা বলেন, কর্তৃপক্ষ টাকার বিনিময়ে ও প্রভাবশালীদের দাপটে প্রকৃত গৃহহীনদের বঞ্চিত রেখে যাদের ঘরের কোন প্রয়োজন নেই বেশিরভাগ ঘরই তাদের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য তারা বারবার আবেদন করেও কোন ফল পাননি। বিষয়টি বার বার প্রশাসনের নজরে আনতে চাইলেও তারা এড়িয়ে যান।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান বলেন, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঐ কোর্ট ভবনটিতে কয়েকটি পরিবার বসবাস করার কথা শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখবো, 'তাদের যদি নিজের কোন জমি না থাকে তাহলে ঐ পরিবার গুলোকে আশ্রয়নের কোন জায়গা ফাঁকা থাকলে সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো। তাছাড়া নতুন কোন প্রকল্প আসলে বা সরকারি কোন খাস জায়গা থাকলে সেখানে তাদের থাকার বন্দোবস্ত দেয়ার চেষ্টা করবো।
এমএসএম / এমএসএম