শেখ রেহানাঃ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এগিয়ে চলার নেপথ্য প্রেরণাদায়ী

খুবই সাদাসিধে জীবন যাপন তাঁর। অবিকল মায়ের মতো। নেই কোনো অহংকার। নেই অহংবোধ। ক্ষমতার কাছাকাছি থেকেও নেই কোনো ক্ষমতার মোহ। একদিনে কী এভাবে গড়ে ওঠা যায়? ত্যাগ করা যায় মোহ ? ক'জন পারবে তাঁর মতো। শৈশব থেকেই এভাবেই গড়ে উঠেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
বাবা রাষ্ট্রপ্রধান কিন্তু তাঁর ছোট মেয়েকে দেখে তার বোঝার কোনো উপায় নেই। কখনো স্কুলে আসেনি বাবার পতাকাবাহী গাড়ীতে। মেয়ের মেট্রিক পরীক্ষা। পরীক্ষা কেন্দ্র ধানমন্ডির বয়েজ স্কুলে । বাবা বললেন আমার অফিসে যাবার পথেই পরীক্ষা কেন্দ্র। তোকে আমি নামিয়ে দেবো। মেয়ে নারাজ। সে বাবার গাড়ীতে করে পরীক্ষা দিতে গেলো না। সে বছর মেট্রিক পরীক্ষায় অষ্টম হলো মেয়েটি। এভাবেই ছোটকাল থেকেই ঠিক যেনো মায়ের আদলে গড়ে উঠতে থাকেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা। যার প্রভাব আজও বিদ্যমান তাঁর জীবনে।
শেখ রেহানার আশা ছিলো ইন্টারমিডিয়েটে ভালো করার । ভাগ্য যেনো সইলো না। ১৫ আগস্টের কালরাতে রাজনীতির ইতিহাসের জঘন্যতম নৃসংশতার শিকার হয়ে হারালেন বাবা-মা সহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে। বড় বোন শেখ হাসিনার সাথে বিদেশে থাকার কারণে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। আপদে-বিপদে, সংকটে-সংগ্রামে , আনন্দ-বেদনায় সেই থেকেই যেনো দুজন- দুজনার ছায়া সঙ্গী।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান শেখ রেহানা। যাঁর পিতা একটি দেশের জাতির পিতা। যাঁর বড় বোন চারবারের প্রধানমন্ত্রী অথচ ক্ষমতার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই তাঁর জীবনে। একাধিকবার তাঁর জীবনে সুযোগ আসে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশিদার হওয়ার । কিন্তু ক্ষমতার মোহ তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি, যেমনি পারেনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবকে। বরং বড় বোন শেখ হাসিনাকে দেশের মানুষের ভাগ্যে উন্নয়নের জন্য উৎসর্গ করে দিয়ে তিনি সময় দিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে আধুনিক হিসেবে গড়ে তুলতে। নিজের ও বড় বোনের ছেলে-মেয়েদের গড়ে তুলেছেন মাতৃস্নেহে। সজীব ওয়াজেদ জয় আর সায়মা ওয়াজেদ পুতুল মায়ের চেয়ে যেনো তাদের খালামনিকেই সুখে-দু:খে কাছে পেয়েছেন বেশি।
লক্ষকোটি নেতাকর্মীদের কাছে ছোট আপা বলে খ্যাত শেখ রেহানা নেই রাষ্ট্রের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে। দায়িত্বশীল কোনো পদে নেই দলেরও। তারপরেও দেশ ও দল পরিচালনায় সকল সংকট উত্তরণে বড় বোন শেখ হাসিনার ছায়া সঙ্গী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। তাঁর মা বঙ্গমাতা যেভাবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ সকল সংকট উত্তরণে পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেপথ্যে থেকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিতেন বঙ্গবন্ধুকে, ঠিক তেমনি শেখ হাসিনার জীবনেও শেখ রেহানার প্রভাব ততটা। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দু:সময়ে, ক্রান্তিকালে নেতাকর্মীদের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয় শেখ রেহানা। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগকে বিভক্তির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে শেখ রেহানাই রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহলে আওয়ামী লীগের অবস্থান আর গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারে শেখ হাসিনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শেখ হাসিনার মুক্তি নিশ্চিত করতে প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা রাখেন নেতাকর্মীদের প্রিয় ছোট আপা শেখ রেহানা। শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয় বড় বোন শেখ হাসিনার মানবিক কাজকে আরো উৎসাহিত করতে ও নেপথ্যে থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছেন শেখ রেহানা।
এইতো সেদিনের কথা। সিলেটের বিশ্বনাথের একটি ইউনিয়নে চার শতাধিক প্রতিবন্ধীর বাস। জুলাই মাসে প্রকাশিত এমন একটি সংবাদ গণমাধ্যমে দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা, বিষয়টি নজরে আনেন বড় বোন শেখ হাসিনার । কেঁদে উঠে মানবতার জননী। তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় ঈদের উপহার। মানবেতর জীবন থেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে তাদের ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে ঐ ইউনিয়নে নেয়া হয়েছে সব ধরনের উদ্যোগ। এমনি অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে বড় বোনের দৃষ্টিতে এনে মানবিক কাজে তাকে আরো উৎসাহিত করতে। জনকল্যাণমূলক সব কাজে শেখ হাসিনার প্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করছেন শেখ রেহানা। ধানমন্ডিতে নিজের নামে বরাদ্ধকৃত বাড়ি তিনি দান করেছেন দেশের কাজে।
আদর, ভালবাসা আর মমতার বন্ধনের পাশাপাশি পারিবারিক ও রাজনৈতিক জটিল সিন্ধান্ত গ্রহণে ছোট বোন তার কতটা সহায়ক তা ফুটে উঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন ঘরোয়া আলোচনা আর রাজনৈতিক বক্তব্যে। বাবা-মা হারিয়ে একে অপরের পরিপূরক হয়ে গড়ে উঠেছেন তারা।
পারিবারিক জীবনে অত্যন্ত সফল বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। স্বামী অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিকী । রত্নগর্ভা শেখ রেহানার বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একাধিকবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন ( সি আর আই) এর ট্রাস্টি। আর ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক লন্ডনে কন্ট্রোল রিস্কস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে গ্লোবাল রিস্ক এ্যনালাইসিস সম্পাদক।
মায়ের আদলে সেবার মানুসিকতায় বেড়ে ওঠা বড় বোন শেখ হাসিনার মতোই মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার জন্ম ১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। এ বছর ৬৬ বছরে পদার্পণ করলেন তিনি। সকল সংকট উত্তরণে বড় বোন শেখ হাসিনার ছায়াসঙ্গী হয়ে শেখ রেহানা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাতীয় জীবনে রাখবেন আরো ইতিবাচক ভূমিকা এমন প্রত্যাশা লক্ষকোটি নেতাকর্মীর। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নিরন্তর ছুটে চলার সকল সংকট দূর হোক। তাঁদের জন্য অন্তহীন শুভ কামনা।
মানিক লাল ঘোষ : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য।
এমএসএম / এমএসএম

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ : গল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠুক সচেতনতার বাঁধ

রাজনীতি আজ নিলামের হাট: কুষ্টিয়া-৪ এ হাইব্রিড দাপটের নির্মম প্রতিচ্ছবি

জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দিবে প্রবাসীরা, আনন্দে ভাসছে পরবাসে বাঙালীরা

বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা ও বাংলাদেশে তার প্রভাব

বাংলাদেশে ওয়াশিং প্ল্যান্টের বর্জ্য দ্বারা মিঠাপানির দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে

বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ

দলীয় পরিচয়ে পদোন্নতি ও বদলি: দুর্নীতির ভয়াল থাবায় বাংলাদেশ

ব্যবসায়ীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সমাধান: FBCCI-এর বিদ্যমান সেবার উৎকর্ষ সাধন

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিসরকে একীভূত করা: অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য বিসিক কেন অপরিহার্য

সবুজ অর্থায়নের কৌশলগত বিশ্লেষণ: বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ

মেধাবী হলেই ভালো চাকরি হয় না কেন?

ধৈর্য্য ও কর্মে অনন্য উচ্চতায় তারেক রহমান
