ঢাকা শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে ডিজির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

রেলের “র” এর ষড়যন্তকারীরা আবারো সক্রিয়


আব্দুল লতিফ রানা photo আব্দুল লতিফ রানা
প্রকাশিত: ২০-৯-২০২৫ বিকাল ৫:১৭

বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম ট্রেনিং একাডেমিতে প্রশিক্ষনের নামে সনদ বাণিজ্যের ঘটনার তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় রেলের মহাপরিচালকের (ডিজি) বিরুদ্ধে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অবৈধ অর্থের যোগানদাতারা ষড়যন্ত্রে মেতেছেন। সূত্র জানায়, রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) আফজাল হোসেনকে তার পদ থেকে অপসারণের জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী তিনজন কর্মকর্তা তাকে সরিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার একজন প্রভাবশালী দোসরকে রেলওয়ের ডিজি পদে বসাতে জোড় লবিং চালাচ্ছেন। আর যাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগের তীর ছোঁড়া হচ্ছে তারা হলেন,সাবেক রেক্টর পার্থ সরকার বর্তমানে তিনি রেলভবনে মার্কেটিং এন্ড কর্পোরেট প্লানিং বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, ট্রেনিং একাডেমির প্রধান কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ ওরফে বাহার এবং সাবেক রেক্টর ও বর্তমানে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রালিং স্টক) আহমেদ মাহবুব চৌধুরী।

মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তিনজন কর্মকর্তা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রেড-২পদায়নের জন্য। গ্রেড-২ এবং সহকারী পরিচালকসহ ৬থেকে ৭জন কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লবিং করে ব্যর্থ হয়েছেন। আর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদেরকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এখন তাদের কোন পদোন্নতি  হবে না। পার্থ সরকার এর আগামী ডিসেম্বর অবসের যাওয়ার কথা রয়েছে। তার পরও তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) হতে বর্তমান ডিজিকে সরাতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছেন। 

সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি আর এস) এর পদ থেকে পার্থ সরকারকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমিতে গত বছরের ৫ নভেম্বর বদলি করে মন্ত্রণালয়। আর সেখানে তিনি ১৭ নভেম্বর যোগদান করেন। তার যোগদানের তিন মাস পর গত ১৬ মার্চ রেক্টরের পদ থেকে অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বদলি অর্ডার নিয়ে রেলভবনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক মার্কেটিং এন্ড কর্পোরেট প্লানিং বিভাগের গত ২ মার্চ যোগদান করেন। কিন্তু ট্রেনিং একাডেমিতে গত ১৬ মার্চ দায়িত্ব পালন শেষ করেন। আবার অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে যোগদান দেখানো হয়েছে ২ মার্চ। ফলে কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

একাডেমির একাধিক সূত্র জানায়, পার্থ সরকার তিন মাস দায়িত্ব পালনে কাজের প্রতি অমনোযোগী ছিলেন। তিনি কোন কিছু মনে রাখতে পারে না। যে কোন বিষয় তাকে মনে করে দিতে হতো। চট্টগ্রাম রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমিতে আহমেদ মাহবুব চৌধুরী ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। আর ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর প্রায় দশ মাস প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর তাকে রেলভবনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক রোলিং স্টক (এডিজি আরএস) হিসেবে বদলি করে মন্ত্রণালয়। 

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন চট্টগ্রাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রোকে শাস্তিমূলক বিবেচনা না করে যুগোপযোগী করে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের টিএ-ডিএ এবং ভাতাদিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হলে ট্রেনিং শেষে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের প্রদান করা সনদ-বাণিজ্যের যে অভিযোগ ওঠে তা বিলুপ্ত হবে। আর বর্তমান রেক্টর এস এম সলিমুল্লাহ বাহার সিনিয়র এবং যথেষ্ঠ অভিজ্ঞ। তবে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়া শর্তেও যোগ্যতা বলে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে ভুষিত হয়েছেন। এর চেয়ে বেশি আশা করা তার পক্ষে ঠিক হবে না। তার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব বিশাল এবং তার উপর পুরো রেলওয়ের দায়ভার। এতো বড় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম কাভার করার মতো ক্ষমতা তার নেই। রেক্টর এস এম সলিমুল্লাহ ওরফে বাহার চলতি বছরের গত ১৬ মার্চ তিনি রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। 

অপর সুত্র জানায়, রেলভবনে, ভারতীয় ‘র’ এর এজেন্ট এবং ফ্যাস্টি শেখ হাসিনা সরকারের অন্যতম দুর্নীতিবাজ হিসাবে পরিচিত বাবুল পালসহ দুই সদস্য এস এম সলিমুল্লাহ বাহারের দপ্তরে মাঝে মধ্যেই লান্সের টেবিলে দুপুরের খাবার খেয়ে থাকেন। আর তার বিরুদ্ধে রেলের গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ উঠেছে। ট্রেনিং সনদ বাণিজ্যের হিসাব পরিসংখ্যান মতে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৪ পদে ৬৮৪ জন এবং ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১৫টি পদে মোট ৩৮২ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আর প্রশিক্ষণ শেষে তারা সকলেই সনদ গ্রহন করেছেন। ট্রেনিং একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ ফেল করেনি। 

অভিযোগে জানা গেছে, রেলের গ্রেড-২ পদবি সনদে ১০ হাজার,এইএন পদের সনদ গ্রহনে সমপরিমাণ,সহকারী সার্জনসহ অন্যান্য পদে সনদপত্র নিতে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা গুনতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উৎকোচ না নিয়ে সনদ না দেওয়ার অভিযোগও রেক্টরদের বিরুদ্ধে রয়েছে। 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের অতি গোপনীয় স্পর্শকাতর তথ্য পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন রেলভবনের এক কর্মচারী ও তার সহযোগী। আর তথ্য পাচারের অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে সরকারি গোপন আইন, ১৯২৩-এর ৩ ও ৯ ধারায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় গত ১১ ফ্রেরুয়ারী একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর-১১। এডিজি আর এস মাহবুব গণমাধ্যমে বলেছেন, স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সূজন এবং সাবেক ডিজি সরদার শাহাদতকে সুপারিশ করা হয়েছিল পার্থ সরকারকে সার্সপেন্ট করার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ রেলকর্তৃপক্ষ তা না করে বিভিন্ন কৌশলে তাকে সেফ করেন। রেলকর্তৃপক্ষের করুনায় তিনি এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কারও সাথে তার সম্পর্ক নেই এবং ডিজি অপসারণের ষড়যন্ত্রের সাথে তিনি জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন,উপদেষ্টা মহোদয় যাচাই-বাছাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিজি নিয়োগ দিয়েছেন। ডিজি অপসারণের বিষয়ে রেল উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান গণমাধ্যমে বলেছেন, রেলের ডিজি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের নেই।

এমএসএম / এমএসএম

ক্রীড়া পরিদপ্তরে ভয়াবহ লুটপাট

ভিন্ন মতের শিকার: জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যানের দীর্ঘ প্রশাসনিক দুর্ভোগ

রেলের “র” এর ষড়যন্তকারীরা আবারো সক্রিয়

ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত

দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিআরটিএ’র ৪ কর্মকর্তার সাজা মওকুফে তৎপরতা

নির্বাচন সামনে রেখে সীমান্তে বেড়েছে অবৈধ অস্ত্রের চালান

ক্রীড়া পরিদপ্তরে ভয়াবহ লুটপাট!

৯২৬ টন পণ্যের হদিস নেই কাস্টমসে

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের পাহাড় সমান দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না কেন?

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পে অনিয়মের পাহাড়

সরকার উৎখাতে জড়িত এনবিআর কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি

সড়ক, জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে মোটরযান পরিদর্শক রাকিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা হরিলুট