ঢাকা বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বেনাপোল বন্দরে থামছেনা শুল্ক ফাঁকির মচ্ছব


সুমন হোসাইন, শার্শা photo সুমন হোসাইন, শার্শা
প্রকাশিত: ২৪-৯-২০২৫ বিকাল ৫:৩৪

বেনাপোল বন্দরে থামছেনা শুল্ক ফাঁকির মচ্ছব। একের পর এক পণ্য চালান আটক হলেও হোতারা থাকছে অধরা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়া সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারনে শুল্ক ফাঁকির উৎসব অব্যহত রয়েছে। এমনই কয়েকটি শুল্ক ফাঁকি ও কাগজপত্রবিহীন পণ্য চালান আটকের পর্যালোচনা করে ভংয়কর তথ্য মিলেছে। বন্দর ও কাস্টম কর্মকর্তাদের যোগসাজসে লাগামহীন বন্দরে পরিনত হয়েছে। 
ঘটনা-১, গত ৩ সেপ্টেম্বর বেনাপোলের ওভারসীস ট্রেডিং করর্পোরেশন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাস্টমসে বি/ই নং-সি-৬৮৬১৯ দাখিল করেন। ঐ দিনই (আইআরএম) কর্তৃক পণ্যের চালান পরীক্ষণ হয় এবং পণ্য চালনটি খালাশ পর্যায়ে গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক নতুনকরে পরীক্ষণে শুল্ক ফাঁকির উৎঘটন ঘটে। শুল্ক ফাঁকির ঘটনায় মটরসাইকেল পার্টসের এ চালানে ৩ মামলায় ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৯১৮ টাকা জরিমানা আদায় করে পণ্য খালাশ দেয় কাস্টমস। ঐ চালানে নিট এবং গ্রস ওজন থেকে টি-আর (ট্যাক্স রেগুলেশনস) ৮ হাজার ১৩ কেজি ছাড় নিয়েছে। যা থেকে জরিমানা আদায় হলেও আমদানি কারকের গায়ে বাতাশ লাগেনি। এছাড়া লাইসেন্সিং বিধিমালায় কোন শাস্তি না হওয়াতে অব্যহত রয়েছে শুল্ক ফাঁকি। 
ঘটনা-২, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে বেনাপোল বন্দর হতে ঢাকা অভিমূখী কাগজপত্রবিহীন ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৫৬৬ কাভার্ডভ্যান ট্রাকসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিস, ঔষধ, মোটরসাইকেলের টায়ার এবং কসমেটিকস পণ্য আটক করে (বিজিবি)। আটককৃত এসব পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কাগজপত্রবিহীন শুল্ক ফাঁকির এই চালান বন্দর হতে কিভাবে বাইরে বের হলো আর এই চালান বন্দরেও কিভাবে প্রবেশ করলো সব ধাঁধায় থেকে যাচ্ছে। অথচ ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে সিসি ক্যামেরার আওতায় বন্দরের জড়িত কর্মকর্তারা থেকে যাচ্ছে অধরা। 
ঘটনা-৩, ২৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের ২২ নং শেডের সামনে থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাগজপত্রবিহীন ভারতীয় পণ্য বোঝায় কাভার্ডভ্যান ট্রাক আটক করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময়ে আটককৃত পণ্য বোঝায় ভারতীয় ট্রাকটি বন্দরহতে কাস্টমসে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এবং ট্রাকে কসমেটিক্স,শাড়ি,থ্রিপিস সহ বিভিন্ন মালামাল রয়েছে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। তবে একইসাথে আরও কাগজপত্রবিহীন ট্রাকের সন্ধান অভিযান অব্যহত রয়েছে। এদিকে কাগজপত্রবিহীন পণ্যর চালান আটকের ঘটনায় দুদেশেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেনাপোলে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে ভারত থেকে বৈধ পণ্যর সাথে ও কাগজপত্রবিহীন পণ্য চালান প্রবেশ অব্যহত রয়েছে। বন্দর ও কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে আমদানি নিশিদ্ধ ও অবৈধ পণ্য চালানে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। আর এসব শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অসাধু আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ রাতারাতি আংগুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে। আর এদের মধ্যে অধিকাংশ ভাড়াকৃত লাইসেন্স ব্যবহার করে বলে জানা গেছে। বর্তমান কমিশনার যোগদান করার পরপরই কাস্টমসের দুর্নীতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। কিন্তু অভ্যান্তরিন পরিবর্তন না করার কারনে পূর্বের অবস্থানের স্ব স্ব জায়গায় বিগত সময়ের শুল্ক ফাঁকির সেটআপে কর্মকর্তারা বহাল থাকায় নিশ্চিন্তে অবৈধ সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক কাজ করে যাচ্ছে।
শুল্ক ফাঁকি অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসের কয়েকজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তার যোগসাজসে গড়ে উঠা শুল্ক ফাঁকির সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদকে অভিযুক্ত বিদায়ী সাবেক কমিশনার মোঃ কামরুজ্জামানসহ কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে সখ্যতা গড়ে ভাড়া সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সে গড়ে উঠা এসব চক্র বন্দর দিয়ে দেদারসে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। সাবেক সহকারি কমিশনারের আনুগত রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমানকে দিয়ে আইআরএম শাখায় দায়িত্বে সিঅ্যান্ডএফের সাথে পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যে করেছে। আইআরএম পরীক্ষণের নামে ‘আইওয়াশে’ ও সর্বচ্চ “টি-আর (ট্যাক্স রেগুলেশনস) নামে কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি হয়েছে। এসব কনসাইনমেন্ট প্রতি লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ে নিয়োজিত তার ব্যাক্তিগত এনজিও কর্মী আক্তার। যা গোয়েন্দা সংস্থাদ্বারা রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমান ও এনজিও কর্মী আক্তারের মোবাইল ট্যাগ ও কললিষ্ট বের করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। 
স্থানীয়রা জানায়, এদের মধ্যে শীর্ষে থাকা বেনাপোলের ভাই ভাই সিন্ডিকের মাস্টর হাদিউজ্জামান, হাসানুজ্জামান,তৌহিদুজ্জামান,আজিম,শান্তি সহ এদের সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্র। এদেরকে আটক করলেই বেরিয়ে আসবে শুল্ক ফাঁকি চক্রের আসল চিত্র। তাছাড়া এদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এদের নামে বেনামে সম্পদ ও সম্পত্তি গোয়েন্দা সংস্থা ও দুদক দ্বারা জব্দ করলে উদঘটন হবে শুল্ক ফাঁকির পরিমান। সূত্র মতে, চিহ্নিত এইচক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে ভিন্নভিন্ন সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স ব্যবহার করে। অধিকাংশ পড়ে থাকা এসব ভাড়াকৃত লাইসেন্স ওমর এন্ড সন্স এবং নিরা এন্টাপ্রাইজ, ওভারসীস ট্রেডিং করর্পোরেশন, ব্রাদার্স এক্সিম লিমিটেড,সোনালি সিঅ্যান্ডএফ লি:, আজিম এন্টারপ্রাইজ,জারিন এন্টারপ্রাইজ,আলী কদর এন্ড সন্স, রিমু এন্টারপ্রাইজ, করিম এন্ড সন্স, সার্ভিস লাইন, মেসার্স আলতাফ এন্ড সন্স, পেরেন্টস ইন্টারন্যাশনাল বিসনেস সেন্টার নামীয় পড়ে থাকা লাইসেন্স গুলোর পারফমেন্স দেখলেই বোঝা যাবে শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা। বিস্তর অনুসন্ধান ও কাস্টমস নথি পর্যালোচনা করলে মিলবে কারা এসব লাইসেন্স গুলো ভাড়া করে চালাচ্ছে এবং কি কি কাজ করেছে। 
এদিকে বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমানকে (আইআরএম) শাখায় বলবৎ রাখতে শুল্ক ফাঁকি চক্রের হোতারা এ পতিবেদককে ফোন করে দেখা করা সহ নিউজ না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। মনিউর রহমানকে বাঁচাতে এবং তার অপকর্ম ঢাকতে বিভিন্ন জায়গায় দেনদরবারও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতি মধ্যেই মনিউরের ব্যাক্তিগত এনজিও কর্মী আক্তারের মোবাইল বন্ধ সহ বেনাপোল থেকে লাপাতা হয়েছে। কুমিল্লায় এনজিও আক্তার বিপুল সম্পদের তথ্য মিলেছে।   
এ বিষয়ে জানতে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের ব্যবহৃত ফোনে কল দিলেও রিসিভি না করায় বক্তব্য জানা যাইনী।

 

এমএসএম / এমএসএম

ধামইরহাটে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন

জয়পুরহাটে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ইউডিআরটি প্রশিক্ষণের সমাপনী

বেনাপোল বন্দরে থামছেনা শুল্ক ফাঁকির মচ্ছব

ইতালিতে মাদারীপুরের প্রবাসী অভির খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার

ঠাকুরগাঁওয়ে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরকে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ জেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবেঃ নবাগত পুলিশ সুপার সিদ্দীকী

জলাবদ্ধতা নিরসনে সোনারগাঁয়ে পাঁচ গ্রামবাসীর মানববন্ধন

দোহারে বর্ণিল আয়োজনে আজকের দর্পণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

শিক্ষক সংকট ও হোস্টেলের অভাবে নবীনগর সরকারি কলেজের শিক্ষার মানে ধস

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বর্ণপদক জয়ী বাক প্রতিবন্ধী স্মরণের পাশে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক

গলাচিপায় শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রস্তুতি মূলক সভা

সম্প্রীতির বাঁশখালীতে ভোলানাথ ধামকে ঘিরে ফেইসবুক গুজব, আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক