ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ঈমান ও কুফর নির্ণয় হয় নামাজে


ডেস্ক রিপোর্ট  photo ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১২-১০-২০২৫ সকাল ৯:২৭

ঈমানের পরই বান্দার ওপর সর্বপ্রথম দায়িত্ব হলো নামাজ। ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজ ছাড়া কোনো ব্যক্তি প্রকৃত মুমিন হতে পারে না। কুরআন-হাদিসে সবচেয়ে বেশি নামাজের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কুরআনের প্রায় বিরাশিটি স্থানে নামাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকেও বোঝা যায় নামাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামত দিবসে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যার নামাজ ঠিক থাকবে তার বাকি আমলগুলোও সঠিক বলে গণ্য হবে’ (মেশকাত)। পবিত্র কুরআনে নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে বলা হয়েছে, ‘হে নবী, আপনি আপনার পরিবারের লোকদের নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না, আমিই তো আপনাকে রিজিক দিই। আর আল্লাহভীরুতার পরিণাম শুভ।’ (সুরা তাহা : ১৩২)
নামাজে মহান আল্লাহর নাম উচ্চকিত হয়, মুসল্লিরা আল্লাহর নাম স্মরণ করে। পৃথিবীতে মানুষকে পাঠানোর বড় উদ্দেশ্যও হচ্ছে আল্লাহর নাম স্মরণ হওয়া। ইসলামের পাঁচ বুনিয়াদের অন্যতম হচ্ছে নামাজ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ইসলামের ভিত্তি হচ্ছে পাঁচটি এক. আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া। দুই. নামাজ কায়েম করা। তিন. জাকাত প্রদান করা। চার. হজ পালন করা। পাঁচ. রমজানের রোজা রাখা’ (বুখারি : ৮; তিরমিজি : ২৬০৯)। 
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নামাজের মাধ্যমে ঈমান ও কুফরের মধ্যকার পার্থক্য দৃশ্যমান হয়। যে নামাজ পড়ে, সে ঈমানের পরিচয় বহন করে। যে নামাজ ত্যাগ করে, সে কুফরের পরিচয় প্রকাশ করে। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন এবং কুফরের মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা’ (তিরমিজি : ২৬২০; আবু দাউদ : ৪৬৭৮)। আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত নামাজ ত্যাগ করে তার সব আমল বাতিল বলে গণ্য হবে।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ)
পবিত্র কুরআন-হাদিসে নামাজের গুরুত্ব বর্ণনার পাশাপাশি নামাজ না পড়ার কঠিন শাস্তিও বর্ণনা করা হয়েছে। বিচার দিবসে আল্লাহ তায়ালা জান্নাত-জাহান্নামের ফায়সালা করার পর তাদের মাঝে কিছু কথোপকথন হবে। সেখানে তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, কেন তারা জাহান্নামে প্রবেশ করল? অথচ দুনিয়াতে তো একসঙ্গে চলাফেরা, ওঠাবসা করত। তখন তারা নিজেদের দোষগুলো স্বীকার করবে আর বলবে, আমরা দুনিয়াতে নামাজ পড়তাম না। 
কুরআনে তার বিবরণ এসেছে, ‘তোমাদের কীসে জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায় করতাম না’ (সুরা মুদ্দাসসির : ৪২-৪৩)। এ থেকে একথাই প্রতীয়মান হয়, ঈমানের পর একজন মুমিনের সর্বপ্রথম দায়িত্ব হলো নামাজ আদায় করা। কেননা নামাজ ব্যতিত কোনো ব্যক্তি প্রকৃত মুমিন হতে পারে না। তাই আসুন, দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ খুব গুরুত্বসহকারে আদায় করি এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর দেখানো পথে নিজেদের পরিচালিত করি। তবেই সফল হবে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বীনের প্রতিটি নির্দেশনা গুরুত্বের সঙ্গে মেনে চলার তওফিক দান করুন।

Aminur / Aminur