ঢাকা শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কাগজে নয়, বাস্তবে চাই


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ১৯-১২-২০২৫ দুপুর ১:২২

কাগজে-কলমে বাংলাদেশে গণমাধ্যম স্বাধীন। সংবিধানে লেখা আছে বাকস্বাধীনতার কথা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা, মতপ্রকাশের অধিকারের কথা। আন্তর্জাতিক সূচকেও বারবার বলা হয়, বাংলাদেশে নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্র আছে, সংবাদপত্র আছে, টেলিভিশন চ্যানেল আছে, অনলাইন পোর্টাল আছে। কাগজে দেখলে মনে হয়, এ এক স্বাধীন ও উন্মুক্ত মতপ্রকাশের দেশ। কিন্তু বাস্তবতায় সেই স্বাধীন গণমাধ্যম আজ আতঙ্কে বন্দী, নীরব, ভীত, আত্মসংযমে অভ্যস্ত, আর অনেক সময় বাধ্য হয়ে আপসকামী। এই বৈপরীত্যই আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি, কাগজে স্বাধীনতা, বাস্তবে ভয়। 
স্বাধীন গণমাধ্যম কোনো বিলাসিতা নয়; এটি একটি রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড। বিচারব্যবস্থা যেমন রাষ্ট্রকে ন্যায়ের পথে রাখে, গণমাধ্যম তেমনি রাষ্ট্রকে সত্যের সামনে দাঁড় করায়। কিন্তু যখন সেই গণমাধ্যমই সত্য বলার কারণে আক্রমণের শিকার হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে, রাষ্ট্র আসলে কাকে রক্ষা করছে? সত্যকে, না ক্ষমতাকে? 

বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে গণমাধ্যমের পরিসর বেড়েছে। পত্রিকার সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে টিভি চ্যানেল ও অনলাইন মিডিয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই বিস্তারের সঙ্গে কি স্বাধীনতাও বেড়েছে? নাকি শুধু সংখ্যা বেড়েছে, স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে?

একটি সংবাদ প্রকাশের আগে আজ একজন সাংবাদিককে বহু প্রশ্ন করতে হয়, এই খবর ছাপলে কারা ক্ষুব্ধ হবে? ফোন আসবে কি না? অফিসে হামলা হবে কি না? মামলা হবে কি না? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা কোনটা প্রযোজ্য হতে পারে? পরিবার নিরাপদ থাকবে তো? চাকরি থাকবে তো?

এই প্রশ্নগুলো কোনো আদর্শ রাষ্ট্রে সাংবাদিকের মাথায় থাকার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে এগুলোই এখন সংবাদকক্ষের নিত্যসঙ্গী।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার, এই দুটি পত্রিকা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে শুধু নাম নয়, প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে তারা ক্ষমতার সমালোচনা করেছে, অনিয়ম তুলে ধরেছে, প্রশ্ন করেছে। আর ঠিক সে কারণেই বারবার তারা আক্রমণের মুখে পড়েছে। কখনো অফিস ঘেরাও, কখনো বিক্ষোভ, কখনো ভাঙচুর, কখনো হুমকি। এই হামলাগুলো শুধু দুটি পত্রিকার ওপর নয়, এগুলো আসলে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত। 
যখন একটি গণমাধ্যম অফিসে হামলা হয়, তখন শুধু কাঁচ ভাঙে না, চেয়ার টেবিল উল্টে যায় না, ভেঙে পড়ে সাংবাদিকদের সাহস, কেঁপে ওঠে সত্য বলার মনোবল। আর সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো, এই হামলাগুলোর বিচার খুব কমই হয়। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি হামলাকারীদের আরও সাহসী করে তোলে।

একটি রাষ্ট্রে যদি সংবাদপত্র অফিসে হামলা হয় এবং রাষ্ট্র নীরব থাকে, তাহলে সেটি কেবল ব্যর্থতা নয়, তা এক ধরনের সম্মতি। নীরবতা অনেক সময় অপরাধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার শামিল।

শুধু প্রথম আলো বা ডেইলি স্টার নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কেউ খুন হয়েছেন, কেউ গুম হয়েছেন, কেউ পঙ্গু হয়েছেন, কেউ পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতি, ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে লিখলেই সাংবাদিক হয়ে ওঠেন “টার্গেট”। এই বাস্তবতায় সাংবাদিকতা এখন আর শুধু পেশা নয়, একটি ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সাইবার আইন, মানহানি মামলা,এই সবকিছু মিলিয়ে গণমাধ্যমের ওপর তৈরি হয়েছে এক অদৃশ্য শেকল। আইন কাগজে লেখা হয় সুশৃঙ্খল ভাষায়, কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ হয় ভয়ের ভাষায়। অনেক সময় এসব আইন অপরাধ দমনের জন্য নয়, বরং সমালোচনা দমনের অস্ত্র হয়ে ওঠে।

একজন সাংবাদিক আজ জানেন, একটি শব্দ, একটি শিরোনাম, একটি ফেসবুক পোস্ট তাঁকে জেলে পাঠাতে পারে। ফলে জন্ম নেয় আত্মনিয়ন্ত্রণ বা সেলফ সেন্সরশিপ। এই সেলফ সেন্সরশিপই সবচেয়ে ভয়ংকর, কারণ এখানে রাষ্ট্রকে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দিতে হয় না, সাংবাদিক নিজেই নিজেকে থামিয়ে দেন। এই নীরবতা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক।

কারণ গণতন্ত্র কেবল ভোটের মাধ্যমে টিকে থাকে না; গণতন্ত্র টিকে থাকে প্রশ্নের মাধ্যমে। আর সেই প্রশ্ন যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে নির্বাচন থাকলেও গণতন্ত্র থাকে না, থাকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা।

গণমাধ্যমের ওপর আতঙ্ক শুধু রাজনৈতিক নয়; এটি অর্থনৈতিকও। অনেক গণমাধ্যম আজ বিজ্ঞাপননির্ভর। রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপন বা প্রভাবশালী করপোরেট বিজ্ঞাপন হারানোর ভয়ও সংবাদ প্রকাশে প্রভাব ফেলে। ফলে সত্য অনেক সময় পাতার কোণে ঠাঁই পায়, আর প্রশংসা চলে আসে প্রথম পাতায়।

এই অবস্থায় সাংবাদিকতার নৈতিকতা এক অসম লড়াইয়ে পড়ে যায়,একদিকে পেটের দায়, অন্যদিকে পেশার দায়।

সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, এই পরিস্থিতিতে সমাজের একটি অংশ গণমাধ্যমের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো তাকে আক্রমণ করে। “ওরা দালাল”, “ওরা বিক্রি হয়ে গেছে”, “ওরা বিদেশি এজেন্ট”, এমন তকমা লাগিয়ে সাংবাদিকদের সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এতে ক্ষমতাবানরা আরও সুবিধা পায়, আর সাংবাদিক আরও একা হয়ে পড়ে।

অথচ ইতিহাস বলে, যখনই কোনো দেশে গণমাধ্যম দুর্বল হয়েছে, তখনই স্বৈরাচার শক্তিশালী হয়েছে। হিটলারের জার্মানি, মুসোলিনির ইতালি, সামরিক শাসনের বাংলাদেশ, সবখানেই প্রথম আঘাত এসেছে গণমাধ্যমের ওপর।

স্বাধীন গণমাধ্যম মানে সরকারবিরোধিতা নয়; স্বাধীন গণমাধ্যম মানে জবাবদিহিতা। যে সরকার প্রশ্ন সহ্য করতে পারে না, সে সরকার শক্তিশালী নয়, সে সরকার ভীত।

আজ বাংলাদেশে যে আতঙ্কের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, তা কেবল সাংবাদিকদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও বিপজ্জনক। কারণ গণমাধ্যম দুর্বল হলে দুর্নীতি বাড়ে, অন্যায় বাড়ে, ক্ষমতার অপব্যবহার বাড়ে। তখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ।

কাগজে বন্দী স্বাধীনতা তাই এক ধরনের ভণ্ডামি। সংবিধানে লিখে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায় না; স্বাধীনতা বাঁচে চর্চায়, সুরক্ষায়, সহনশীলতায়।

একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকায় সমালোচনামূলক লেখা প্রকাশ হলে সরকারকে ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা নয়; বরং ভাবার কথা, কোথায় ভুল হচ্ছে? কিন্তু যখন সমালোচনার জবাব আসে হামলা দিয়ে, তখন বোঝা যায় সমস্যাটা গভীরে। তবে সংবাদপত্রে হামলার বিষয়টি নিয়ে তৃতীয় কোন পক্ষ ফায়দা নিতে চাইছে কিনা তা বের করার দায়িত্ব সরকরকেই নিতে হবে। 
এই প্রবন্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সাংবাদিকদের একক লড়াই নয়। এটি নাগরিকদের লড়াই। আজ যদি একজন সাংবাদিক কথা বলতে না পারেন, কাল সাধারণ মানুষও পারবেন না। 
এই আতঙ্কের সংস্কৃতি হঠাৎ তৈরি হয়নি। এটি ধীরে ধীরে, পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে, যেখানে আইন, প্রশাসন, রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে মিলে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের বলয়ে এনেছে। প্রথমে বলা হলো, “দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা দরকার।” এরপর বলা হলো, “ভুল তথ্য ছড়ানো যাবে না।” তারপর এল কঠোর আইন। আর সবশেষে এল ভয়, খোলাখুলি, নিঃশব্দ, কিন্তু সর্বগ্রাসী।
একসময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেন, “কেন?”
এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন,“লিখব তো?”
এই পরিবর্তনই সবচেয়ে ভয়ংকর।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার অফিসে হামলার ঘটনা শুধু বিচ্ছিন্ন কোনো উত্তেজনা নয়; এটি একটি বার্তার মতো “সীমা অতিক্রম কোরো না।” যারা হামলা চালায়, তারা জানে এই কাজের রাজনৈতিক মূল্য আছে, সামাজিক প্রশ্রয় আছে, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, শাস্তির সম্ভাবনা খুবই কম। ফলে হামলা হয়ে ওঠে কৌশল, আর ভয় হয়ে ওঠে নীতি।

এই দেশে বহুবার দেখা গেছে, যখন কোনো গণমাধ্যম রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর প্রকাশ করেছে, তখন তার বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিক্রিয়া এসেছে। কখনো বিক্ষোভের নামে হুমকি, কখনো মামলা, কখনো বিজ্ঞাপন বন্ধ, কখনো সামাজিক মাধ্যমে চরিত্রহনন। এই বহুমুখী চাপ এক ধরনের “মনস্তাত্ত্বিক অবরোধ” তৈরি করে।

একজন সাংবাদিক তখন শুধু রাষ্ট্রের মুখোমুখি নন, তিনি রাজনীতি, প্রশাসন, ব্যবসা, সামাজিক ট্রল বাহিনী, সবকিছুর সম্মিলিত চাপে পড়েন।

গ্রাম বা মফস্বলের সাংবাদিকদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। জাতীয় পত্রিকার নাম, আন্তর্জাতিক নজর, এই সুরক্ষা তাদের নেই। ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, মাদক সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক ক্যাডারদের বিরুদ্ধে লিখলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। অনেক ক্ষেত্রে থানায় জিডি করেও সুরক্ষা মেলে না; বরং উল্টো “সমঝোতার” পরামর্শ আসে। এখানেই রাষ্ট্রের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

রাষ্ট্র যদি সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারে, তবে সে রাষ্ট্র আসলে কাদের রাষ্ট্র? যেখানে সাংবাদিকের মাথার ওপর সবসময় ঝুলে থাকে অনিশ্চয়তার খড়গ।

একজন রিপোর্টার জানেন না, আজ যে সংবাদটি তিনি লিখছেন, কাল সেটি “রাষ্ট্রবিরোধী”, “গুজব”, বা “ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী” হিসেবে চিহ্নিত হবে কি না। এই অনিশ্চয়তা সাহস ভেঙে দেয়।

ফলে জন্ম নেয় আপসের সাংবাদিকতা, যেখানে সত্য পুরোটা বলা হয় না, কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়, ভাষা নরম করা হয়, শিরোনাম বদলানো হয়। এটিই কাগজে বন্দী স্বাধীনতার বাস্তব রূপ।

এদিকে টেলিভিশন টকশোগুলোতে ক্রমশ কমছে ভিন্নমত। একই মুখ, একই বক্তব্য, একই বয়ান। প্রশ্ন নেই, আছে বক্তব্য। বিতর্ক নেই, আছে সমর্থন। এতে দর্শক হয়তো বিনোদন পায়, কিন্তু তথ্য পায় না। আর গণমাধ্যম যখন তথ্যের বদলে কেবল মতামতের মঞ্চ হয়ে ওঠে, তখন তার মূল দায়িত্ব ব্যর্থ হয়।

অনলাইন মিডিয়ার ক্ষেত্রেও স্বাধীনতার চিত্র খুব আশাব্যঞ্জক নয়। অসংখ্য পোর্টাল থাকলেও তাদের অনেকগুলোই দলীয় বা ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালিত। প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এখানে ব্যতিক্রম। কারণ অনুসন্ধান মানেই ঝুঁকি, আইনি ঝুঁকি, শারীরিক ঝুঁকি, অর্থনৈতিক ঝুঁকি।

এখানে একটি প্রশ্ন ওঠে, জনগণ কোথায়?
দুঃখজনকভাবে, গণমাধ্যমের ওপর আঘাত এলে সমাজের বড় অংশ নীরব থাকে। কেউ কেউ উল্টো তালি দেয়। কারণ আমাদের সমাজে সমালোচনাকে শত্রুতা হিসেবে দেখা হয়। সরকার সমালোচনা মানেই দেশবিরোধিতা, এই ধারণা ইচ্ছাকৃতভাবে লালন করা হয়েছে। এই মানসিকতাই স্বাধীন গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শত্রু।

একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের কাজ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলা। সেই অস্বস্তিই উন্নতির শর্ত। কিন্তু যখন অস্বস্তিকে বিদ্রোহ হিসেবে দেখা হয়, তখন ক্ষমতা আর সত্য মুখোমুখি দাঁড়াতে পারে না।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় দুর্নীতিবাজরা। কারণ আলো কমলে আঁধার বাড়ে। প্রশ্ন না থাকলে অনিয়ম স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। আর এই অনিয়মের খেসারত দেয় সাধারণ মানুষ, চাকরি না পেয়ে, ন্যায্য সেবা না পেয়ে, ন্যায়বিচার না পেয়ে।

এই কারণে স্বাধীন গণমাধ্যম কেবল সাংবাদিকদের দাবি নয়, এটি কৃষকের দাবি, শ্রমিকের দাবি, শিক্ষার্থীর দাবি, বেকারের দাবি।

আজ যদি একজন সাংবাদিক নিরাপদ না হন, কাল একজন নাগরিকও নিরাপদ থাকবেন না।

এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য কোনো নির্দিষ্ট দল বা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা নয়। উদ্দেশ্য একটি বাস্তবতা তুলে ধরা, স্বাধীন গণমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয় না, বরং দুর্বল হয়।

ইতিহাস আমাদের শেখায়, ভয় দিয়ে চুপ করানো যায়, কিন্তু সত্য মেরে ফেলা যায় না। সত্য হয়তো দেরিতে আসে, কিন্তু আসে।

প্রশ্ন হলো, আমরা কি সেই সত্যের পক্ষে দাঁড়াব? নাকি নীরব থেকে আতঙ্কের সংস্কৃতিকে স্বাভাবিক করে তুলব?

কাগজে বন্দী স্বাধীনতা দিয়ে কোনো জাতি এগোতে পারে না। স্বাধীনতা চাই বাস্তবে, সাংবাদিকের কলমে, রিপোর্টারের ক্যামেরায়, সম্পাদকীয় পাতায়, নাগরিকের কণ্ঠে।

গণমাধ্যমকে শত্রু ভাবা বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমকে প্রশ্ন করতে দিতে হবে। কারণ যে রাষ্ট্র প্রশ্ন সহ্য করতে শেখে, সেই রাষ্ট্রই টিকে থাকে।

নইলে একদিন দেখা যাবে, কাগজে স্বাধীনতা আছে, পত্রিকা আছে, টিভি আছে, কিন্তু সত্য নেই। আর সত্যহীন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। স্বাধীন গণমাধ্যম কোনো দলের শত্রু নয়, কোনো সরকারের শত্রু নয়, স্বাধীন গণমাধ্যম অন্যায়ের শত্রু।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কাগজে নয়, বাস্তবে চাই। আতঙ্ক নয়, নিরাপত্তা চাই। হামলা নয়, সংলাপ চাই। বিচারহীনতা নয়, জবাবদিহিতা চাই। নইলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক, সভাপতি, রেলওয়ে জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন।

এমএসএম / এমএসএম

ওসমান হাদির বিদায় ও তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কাগজে নয়, বাস্তবে চাই

ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়া

রক্তে কেনা বিজয়ের চেতনায় উদ্ভাসিত হোক হৃদয়

গণতান্ত্রিক যাত্রার ওপর সচেতন আঘাত

গুলির শব্দের মধ্যে তফসিল ঘোষণা,এ কোন গণতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি?

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা, যখন লড়াই হয় অহিংস ও গণতান্ত্রিক!

দলবদলের রাজনীতিতে আদর্শ প্রশ্নবিদ্ধ

গাজায় যুদ্ধ বিরতি নাকি পশ্চিমাদের যুদ্ধের কৌশল

পুতিনের ভারত সফরে কী বার্তা পেল বিশ্ব

নৈতিক ও অস্তিত্বগত সংকটে বিশ্ব

পরিশুদ্ধ রাজনীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি

তারেক রহমানের প্রতিশ্রুতি ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা