সাতকানিয়ায় মোটা অংকের কাছে ধরাশায়ী হত্যা মামলা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এখন হত্যা মামলারও আপস করে দেয়ার কন্ট্রাক্ট নেয়া হচ্ছে! তবে তা সম্পূর্ণ নিরীহ ও অসহায় নিহতের স্ত্রীর অগোচরে। এতে জড়িত সমাজের এক শ্রেণির হাইপ্রোফাইলের নাগরিক এবং অসাধু গুটিকয়েক আইনজীবী। বলা হচ্ছে, সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা এলাকার ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ছবুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কথা।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, জমিজমার পূর্ববিরোধে ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাজালিয়ার বড়দুয়ারা এলাকার সিএনজিচালক সবুরকে হত্যা করা হলে ওই ঘটনায় সবুরের আপন ছোট ভাই আবুল খায়ের বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর ওই হত্যা মামলায় বেশ কয়েকজন জামিনে আছেন এবং আর দুজন কারাবন্দি। ওই মামলা দেখভাল করেন নিহতের আপন ছোট ভাই ।
জানা যায়, মামলা তদারকির সুবাদে নিহতের ছোট ভাই বাদী তার আইনজীবী শোয়েব আলীকে নিয়ে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে আসামিদের সাথে আপসে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে বাদীর আইনজীবী শোয়েব আলীর কাছে আসামিরা ৪ লাখ টাকা জমাও করেছেন বলে জানান স্বয়ং বাদীর স্ত্রী। আইনজীবী শোয়েব আলীর হাতে মামলা আপসের জন্য যে ৪ লোখ টাকা আছে তা হত্যাকাণ্ডের আসামি সেলিম, রহিমরাও বলেছেন গণমাধ্যমে।
সেলিমরা জানান, হত্যা মামলা আপসের জন্য বাদীর আইনজীবী শোয়েব আলীকে টাকা দেন ৪ লাখ, তাও আবার চেকের মাধ্যমে। তিনি আরো জানান, আমরা এখনো চেক পাস করিনি। কাজ কিছুটা এগোলেই চেক পাস হবে।
কিন্তু মূল বিষয় হচ্ছে, এসবের কিছুই জানে না নিহতের স্ত্রী! তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আসলেই আমি কোনোদিকেই বলতে চাচ্ছি না। যেহেতু মামলা চালাচ্ছে আমার দেবর এবং বাদীও সে; সুতরাং আমাকে তারা যা বলে আমি তাই শুনি।
স্বামী হত্যাকাণ্ডের পর কেউ কোনো সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে নিহতের স্ত্রী অশ্রুসজল নয়নে বলেন, একমাত্র বাজালিয়ার চেয়ারম্যান তাপস দত্ত আমাকে একটি বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন। আর কেউ কিছু করেনি।
এদিকে হত্যা মামলার আপসের বিষয়ে এবং টাকা লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় আরেক আসামি রহিম উদদীনের কাচে। তিনিও অপরাপর আসামিদের মতো অকপটে স্বীকার করে বলেন, আপসের বিষয়ে কিছু টাকা দেয়া হয়েছে আইনজীবী শোয়েব আলীকে। তবে এখনো টাকা আমানত আছে তার কাছে। প্রক্রিয়া শেষ হলেই আইনজীবী তার বাদীকে টাকাগুলো দেবেন।
সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এপিপি মেজবাহ উদদীন আহমদ চৌধুরী কচি বলেন, হত্যা মামলা হলো দণ্ডবিধি ৩০২ ধারার মামলা। সুতরাং এটাতে বাদী আপস করতে চাইলেও আইনত আপস অযোগ্য মামলা। এটা কিছুতেই আপস করা যাবে না। তবে আদালতে হয়তো সাক্ষীদের সাথে আপস কো পর তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে পারে। তবে তা আদালত ঠিকই বুঝে যাবে। অতএব এখানে কারো সাথে আপস করে লাভ হবে না।
এমএসএম / এমএসএম