মাদারীপুরে একটি সেতুর জন্য দুর্ভোগে দুই জেলার মানুষ
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার একটি গ্রামে পাকা সেতু না থাকায় মাদারীপুর ও ফরিদপুর জেলার কয়েক হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দ মাদবরেরকান্দি গ্রামে ১৫ মিটার দৈর্ঘের একটি কালভার্ট ছিল। সেটি দিয়ে দুই জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করত। কিন্তু ২০১৮ সালের বন্যায় রাস্তাটির কিছু অংশসহ কালভার্টটি ভেঙে যায়। এরপর থেকে এলাকাবাসী একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি পারাপার হয়ে আসছিল।
ভুক্তভোগীরা জানান, পাকা সেতু না থাকায় শিবচরের পাঁচ্চর বাসস্ট্যান্ড থেকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার শিমুলতলী পর্যন্ত ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চালিয়ে পার হওয়া যায় না। এতে এই অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের শিমুলতলী গ্রামের বাসিন্দা জালাল বেপারী বলেন, এত বছর এখানে শুধু একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। কিন্তু গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন উপলক্ষে সেটিতে কাঠের তক্তা বিছিয়ে মেরামত করা হয়েছে যাতে অফিসাররা আসতে পারেন। কিন্তু আমাদের কথা চিন্তা করে নয়। কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়ার জাবি জানাই।
একই উপজেলার চরনাসিরপুর ইউনিয়ন থেকে আসা হালিম হাওলাদার বলেন, ফরিদপুরের বাসিন্দা হলেও ঢাকা যাওয়ার জন্য শিবচরের সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু গত দুই বছর ধরে গোবিন্দমাদবরের কান্দি গ্রামের সেতুটি ভাঙা অবস্থায় আছে। তাই সরাসরি গাড়িতে চলাচল করতে পারি না। ভেঙে ভেঙে যেতে হয়। এতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
একই ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা ইউনুস বেপারী বলেন, ঢাকা থেকে পাঁচ্চর নেমে সন্নাসীরচর ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে সদরপুরে যাই। কিন্তু দুই বছর ধরে গোবিন্দ মাদবরেরকান্দি গ্রামে পাকা সেতু না থাকায় মালামাল নিয়ে পার হতে কষ্ট হয়। সেতুটি নির্মাণ হলে সবার জন্য ভাল হতো।
চরমানাইর ইউনিয়নের শিমুলতলী গ্রাম থেকে আসা তাহমিনা আক্তার বলেন, এই রাস্তাটি দিয়ে দুই জেলার মানুষ চলাচল করি। পাকা সেতু তৈরি হলে আমাদের অনেক উপকার হতো।
সন্নাসীরচর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক বলেন, সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। সেতুটি দুই জেলার মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম উল্লেখ করে তিনি দ্রুত এটি নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাটি আমাদের হলেও গোবিন্দমাদবরের কান্দি গ্রামের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের কালভার্ট সেতুটি নির্মাণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জেনেছি। বিষয়টি তারা ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ওই এলাকার রাস্তাটি উপজেলা এলজিইডি নির্মাণ করে। তাই ওই সেতুটিও তাদের করার কথা। তবে উপজেলা এলজিইডি যদি সেতুটি নির্মাণ না করে তাহলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে। সম্ভব হলে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
জামান / জামান