ভালবাসা মানে কি?
ভালোবাসা এমন এক জিনিস যা শুধু অনুভব করা যায়। আর ভালোবাসা নাকি আসে স্বর্গ থেকে। একজন মানুষ শুধু ভালোবাসার জোরেই বিশ্ব জয় করে নিতে পারে। ভালোবাসা না থাকলে পৃথিবীতে কেউ কোনোদিন সুখি হতে পারত না। ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভালোবাসার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন পরিবারের প্রতি ভালোবাসা, প্রিয় সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা। ভালোবাসা দিয়ে প্রিয় মানুষটির মন সহজেই জয় করে নেয়া যায়। দেখা গেছে, ভালোবাসার জন্য পৃথিবীতে অনেক মহৎ ব্যক্তিরা আমাদের ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছে।
ধরা যাক সেকালের লাইলি-মজনু, শিরিন-ফরহাদ ইউসুফ-জুলেখাসহ সম্রাট শাহজাহানের মতো ব্যক্তিরা ভালোবাসার অনেক নিদর্শন রেখে গেছেন। তাই জীবনে সঠিক সঙ্গী নির্বাচনের জন্য ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে বেছে নিতে হবে। ভালোবাসা দিয়ে একজন খারাপ মানুষকে ভালো পথে আনা যায়। ভালোবাসার মানুষটি হয়তো ভুল বুঝবে তারপরেও ভালোবাসা দিয়েই তার মন রক্ষা করতে হবে। সে জন্য আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে মাঝেমধ্যে তার পছন্দের জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন অথবা তার পছন্দের কোনো বস্তু তাকে উপহার দিতে পারেন তাতে হয়তো আপনার প্রতি তার ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি পাবে। আর একটি বিষয় মনে রাখতে হবে ভালোবাসার মানুষকে কখনো কষ্ট দেয়া যাবে না।
তবে ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট কোনো জাত, ধর্ম, গোত্র হিসেবে হয় না। ভালোবাসা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা, ভাইবোনের প্রতি ভালোবাসা, প্রিয় সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা প্রভৃতি। সুতরাং ভালোবাসাই পারে আমাদের একটি সুন্দর সমাজ এবং জাতি উপহার দিতে। ভালোবাসার মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ্য করা উচিত। একদিন কথা বলে ৫-৬ দিন খোঁজই রাখলেন না, এমন কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করবেন না। যিনি আপনাকে পছন্দ করেন তিনি প্রতিদিনই আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন। আপনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের চেষ্টা করে যাবেন। যদি সারাদিনে খুব বেশি সময় না পান তবে অন্তত রাতে একটিবার যোগাযোগ করে জানতে চাইবেন আপনি পুরো দিনে কী কী করেছেন। তিনি আপনার প্রতিদিনের রুটিনের সঙ্গে পরিচিত হতে চাইবেন। তিনি আপনার সব পছন্দ-অপছন্দের কথা মাথায় মাথায় রাখবেন আপনি কী পছন্দ করেন কী পছন্দ করেন না, আপনার কোন কোন জিনিসের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে এসবই তার বলতে গেলে মুখস্থ থাকবে। এবং তিনি চাইবেন তা আপনার কাছে প্রকাশ পাক এবং আপনি তার পছন্দ সম্পর্কে জানুন।
তিনি তার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে আপনাকে পরিচয় করাতে চাইবেন তিনি সব সময়েই কোনো না কোনো বাহানায় তার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আপনার পরিচয় করিয়ে দিতে চাইবেন। তিনি চাইবেন আপনি তাদের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে থাকুন, যাতে করে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়। আপনি যদি কোনো সময় তার ফোন ধরতে না পারেন বা তার সঙ্গে দেখা করতে না পারেন তাহলে তিনি ইগো ধরে নিয়ে বসে থাকবেন না। বরং তিনি আপনার সময়ের সঙ্গে নিজের সময়ে মিলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন। এবং আপনার অনুযায়ী কথা বলা বা দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করবে তিনি আপনার কাছে নিজেকে একজন ভালো শ্রোতা হিসেবে উপস্থাপন করবেন। তিনি সবসময় চাইবেন আপনি তাকে আপনার কথাগুলো বলুন।
আপনি সবকিছু তার সঙ্গে শেয়ার করলে তিনি আপনার সম্পর্কে ভালোমতো বুঝে উঠতে পারবেন। তিনি আপনার কাছে খুব ভালো একজন মানুষ হিসেবে উপস্থিত থাকতে চাইবেন যারা চাইবেন নিজেদের সম্পর্কটিকে পরিপূর্ণতা দিতে তাদের কথাবার্তায় ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা থাকবে, একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা এবং একই সঙ্গে শ্রদ্ধা প্রদর্শন। অবশ্যই বলছি না যে সবসময়েই ভবিষ্যৎ এবং সম্পর্ক নিয়ে সিরিয়াস কথা বলবেন। কিন্তু কিছুটা হলেও বাস্তবতা থাকবে এ সম্পর্কের কথাবার্তায়। যদি দেখেন আপনাদের মধ্যে শুধুই ফ্লার্টিং ধরনের কথা হয় এবং বাস্তবধর্মী কোনো কথাই হয় না তাহলে বুঝবেন আপনাদের সম্পর্কে শুধুই কামনার ছোঁয়া রয়েছে। একটি সম্পর্কে যেমন সমঝোতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান থাকা জরুরি তেমনই জরুরি একটু বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব। আপনাদের মধ্যে যদি শুধু লাভ বার্ড এবং ফ্লার্টিং ধরণের সম্পর্ক থেকে থাকে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অভাব হয় তাহলে ধরে নেবেন আপনাদের সম্পর্কটি আসলেই ভালোবাসার নয়। এটি আপনাদের দুজনের কামনার মাধ্যমেই তৈরি। কারণ যে সম্পর্কে ভালোবাসা রয়েছে সে সম্পর্কে একে অন্যকে বোঝার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও থাকবে।
যে সম্পর্ক কামনা থেকে তৈরি হয় সে সম্পর্কে শারীরিকভাবে আকর্ষণবোধ করা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এ একটি মাত্র লক্ষণ থেকে সম্পর্ক এবং সম্পর্কে থাকা মানুষ সম্বন্ধে বুঝে নেয়া যায়। আপনাদের দুজনের মধ্যেই এ ধরনের চিন্তা বেশি কাজ করলে এটি সম্পূর্ণই কামনার সম্পর্ক। আর যদি এক পক্ষ থেকে এ ধরনের আগ্রহ বেশি দেখতে পান তবে বুঝে নেবেন আপনার প্রতি শুধুই তার কামনার দৃষ্টি রয়েছে। দুজন মানুষ যখন একটি ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ান তখন সেখানে চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্নের অবকাশ থাকে না। সম্পর্ক থেকে কী পাওয়া হলো, সঙ্গীর কাছ থেকে কী পেলেন তা শুধু তখনই মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যখন সম্পর্কটি কামনার দ্বারা তৈরি হয়।
এমএসএম / এমএসএম