কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় জিওটিউবের প্রতিরক্ষা বাঁধে স্বস্তি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের

সমুদ্রের অব্যাহত ভাঙন আর বালুক্ষয় থেকে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় জিওটিউব দিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্ষা মৌসুমের আগেই এ কাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিগত বছরে একই রকম কাজে সফলতা আসায় এ বছর কাজটি আরো বেশি টেকসই করার লক্ষ্যে জিওটিউব ও ব্যাগে মোটা দানার বালু ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় অস্থায়ী এ ব্যবস্থার বদলে স্থায়ী ও টেকসই প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও পৌর মেয়র। ‘সৈকত রক্ষায় পরীক্ষামূলক প্রতিরক্ষাকাজের’ আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কলাপাড়া অফিস এ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
পাউবোর কলাপাড়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে আধাকিলোমিটার এবং পূর্ব দিকে দেড় কিলোমিটার এলাকায় জিওটিউব ও জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য ১৪ হাজার ৩৮৪টি জিওব্যাগ এবং ১২৯টি জিওটিউব তৈরি করা হয়েছে। ঢাকার বিজে টে·টাইল থেকে উন্নতমানের জিওটিউব ও ব্যাগ এনে তাতে বালু ভর্তি করা হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অনুন্নয়ন রাজস্ব খাতের অর্থ ব্যয় করে এ বাঁধ নির্মাণ করা হবে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বাঁধ নির্মাণের কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে কে এন্টারপ্রাইজ।
সরেজমিন পরির্দশনকালে দেখা যায়, কুয়াকাটা সৈকতে জিওটিউব ও জিওব্যাগ প্রস্তুত করার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। সৈকতের তীরভূমি থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে ইতোমধ্যে তৈরি করা জিওটিউব ও জিওব্যাগগুলো ফেলা হয়েছে। গত বছর লোকাল বালু দিয়ে কাজ করা হলেও এবার কাজটি আরো বেশি টেকসই করার জন্য চাঁদপুর থেকে মোটা দানার আস্তর বালু এনে জিওটিউব ও ব্যাগে ভর্তি করা হচ্ছে। এসব যাতে কেউ নষ্ট করে না ফেলে সেজন্য শ্রমিকসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নজরদারি রয়েছে।
এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পাউবোর সৈয়দ তারিকুর রহমান জানান, কাজ যাতে যথাযথভাবে হয় এবং এর গুণগত মান বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করতে আমরা কঠোরভাবে তদারকি করছি। আমিসহ আরও একজন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছি। তিনি জানান, ঠিকাদার চাঁদপুর থেকে বালু এনে প্রথমে আলীপুরে আনলোড করে। সেখান থেকে ট্রলিতে কুয়াকাটা সৈকত নিয়ে এসে ট্রিপল বিছানো একটি জায়গায় রাখে। বীচের বালু যাতে ঐ বালুর সাথে মিশে না যায় তাই এ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কার্গো বালু আসার পর পরই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় মানোত্তীর্ন হলেই কেবল সে বালু কাজে ব্যবহার করতে দেয়া হয়।
পাউবো কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন দৈনিক সকালের সময়কে জানান, গত দুই বছর আগে ২০১৯ সালে কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন দুই দিকে ১ হাজার ৫৬০ মিটার তীরভূমির ভাঙন রোধ করার জন্য একইভাবে বালুভর্তি জিও টিউব ও জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তখন পূর্ব দিকে ৫৬০ মিটার ও পশ্চিম দিকে ১ হাজার মিটার এলাকা সুরক্ষা করা হয়। ওই সময় ৬৪টি জিও টিউব ও ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়। এ কাজে তখন ব্যয় হয় ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। একই পদ্ধতিতে এবার কাজটি করা হচ্ছে। ওই সময়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের বাঁধটি যাতে আরো টেকসই হয় সেই চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, ২০১৯ সালে কাজটি করা হয়েছিল বর্ষার সময়। যার কারণে কাজটি টেকসই হয়নি। এ ছাড়া আগেরবার স্থানীয়ভাবে বালু সংগ্রহ করা হয়েছিল। এবার কাজের জন্য চাঁদপুর থেকে কার্গোতে করে বালু এনে ব্যবহার করা হচ্ছে। আরও একটি কৌশলগত ব্যাপার হলো, এবার কাজটি বর্ষা মৌসুমের বেশ আগেই শুরু করা হয়েছে এবং এ কারনে স্বস্তি প্রকাশ করেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা সৈকত রক্ষা প্রকল্পের বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লাসহ একাধীক স্থানীয় রাজনীতিবীদ দৈনিক সকালের সময়কে জানান, প্রতি বছর কুয়াকাটা সৈকত বর্ষা মৌসুমে ভেঙ্গে যায়। এ বছর যাতে সে ভাঙ্গন থেকে এলাকাবাসী রক্ষা পায় তার জন্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর কাছে তারা দলীয় ভাবে আবেদন জানান। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পানি সম্পদ প্রতি মন্ত্রী জাহিদ ফারুক কুয়াকাটা পরির্দশনে এসে জরুরী রক্ষনাবেক্ষনের আওতায় এ কাজের নির্দেশ দেন। তারা জানান, স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আগে এই কাজ টুকু না হলে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকার পুরোটাই সাগরের বুকে বিলীন হয়ে যেতো। এবার দ্রুত সময়ে বাঁধ নির্মানে খুশি ব্যবসায়ীসহ সাধারন মানুষ।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো.আনোয়ার হাওলাদার দৈনিক সকালের সময়কে জানান, সাময়িকভাবে জিওটিউব ও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন কিছুটা প্রতিরোধ করা গেলেও স্থায়ী ভাঙ্গনরোধে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহন করা দরকার। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহনের দাবী জানান।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালী অঞ্চলের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কাইছার আলম দৈনিক সকালের সময়কে জানান, কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় প্রকোশনারী এ প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে টেকসই বেরীবাধ নির্মানের জন্য একটি প্রকল্প ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। একনেকে পাস হলে খুব দ্রুত এটির কাজ শুরু হবে। কুয়াকাটা যেহেতু সরকারের সুনজরে আছে তাই অল্প সময়ের মধ্যেই এ প্রকল্প অনুমোদন হয়ে কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এমএসএম / জামান

বোদার নিবন্ধন ছাড়া সহকারী শিক্ষক কাওছার আলীকে মাওশির শোকজ

জামায়াত-এনসিপি ও আ.লীগের এজেন্টরা পূজা মণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করবে' বললেন বিএনপি নেতা

রাজারহাট বিএনপির আহ্বায়ককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩'শ আসনে প্রার্থী দিবে জাকের পার্টি

দুর্গোৎসবের শেষ দিন পর্যন্ত প্রতিটি পূজামণ্ডপে পাহারায় বিএনপি: আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন

বাঘার খোর্দ্দ বাউসায় অতিথি পাখি নিধনের হিড়িক

দীর্ঘ এক যুগের পর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মুকসুদপুরে জলিরপাড়ের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মেলা উদযাপন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা

ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা মহিলা দলের কর্মী সম্মেলন ও আংশিক কমিটি ঘোষণা

তানোরে আমন ধানে কারেন্ট পোকার হানা, দিশেহারা কৃষকরা

গোপালগঞ্জে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি

খালিয়াজুরীতে দুই ট্রলারে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ডাকাতি, হামলায় আহত ৩

মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত
Link Copied