ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

ইয়াসের প্রভাবে বাঁধ ভেঙে কয়রার ৪০ গ্রাম প্লাবিত


সম্রাট, কয়রা photo সম্রাট, কয়রা
প্রকাশিত: ২৬-৫-২০২১ বিকাল ৫:৫৮
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর প্রভাবে খুলনার কয়রার কপোতাক্ষ-শাকবাড়িয়া নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বেঁড়িবাধ ভেঙে ও বেঁড়িবাধ উপচে উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, কয়রা সদর, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর ও বাগালী ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ও বেঁড়িবাধ উপচে পানি ঢুকে বাড়ির আঙ্গিনা তলিয়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ও ফসলের মাঠ। গ্রামবাসী বহনযোগ্য জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন। এতে আতংকে রয়েছেন বাঁধ ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।
 
 
বিশেষ করে কয়রা উপজেলার আংটিহারা, মটবাড়ী, গোবরা ঘাটাখালী, কয়রা সদরের তহসিল অফিসসংলগ্ন বেড়িবাঁধ, দশহালিয়া, কাটকাটা, কাশির হাটখোলা, কাটমারচর, ২ নং কয়রা, ৪নং কয়রা, পবনা, তেঁতুলতোলার চর, মডবাড়ী, কাশির খালের গোড়া, হোগলা, উত্তর বেদকাশী গাতির ঘেরী, শাকবাড়িয়া, সুতির অফিস, নয়ানি, খোড়ল কাটি, জোড়শিংসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীতীরবর্তী প্রায় ৪০টির অধিক গ্রামে। জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে নদীতীরের একাধিক স্থাপনা ও বসতঘর। স্থানীয় মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বস্তা এবং মাটি দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আক্তারুজ্জামান বাবু কয়রায় অবস্থান করে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ভাঙনকবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। সাথে সাথে পানি উপচে পড়া স্থানগুলোতে তাৎক্ষণিক জিওব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগের ব্যবস্থা করে পানি আটকাতে ও জনগণের উৎসাহ জোগান।
 
সকাল থেকেই থেমে থেমে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাস বাড়ার সাথে সাথে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের (বাঁধ ভাঙন) বাসিন্দা আবু সাইদ খান জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ‍এলে আমারা খুবই আতংকে থাকি। বিশেষ করে রাতে। এলাকার মানুষ ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকে। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। আজ দুপুরে হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙে যেভাবে পানি উঠছে এতে খুবই বিপদে আছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ।
 
কলেজছাত্র মহসিন  জানান, মহারাজপুর ইউনিয়নের পবনা ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙছে। আজ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরো বাড়বে। আমারা সবাই আতংকে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামত করা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
 
 
উত্তর বেদকাশী ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নূরুল ইসলাম কোম্পানী জানান, মঙ্গলবার রাতে জোয়ারে তার ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ উপচে পানি গ্রামে ঢোকা শুরু করলে গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে তা আটকানো হয়। কিন্তু বুধবার দুপুরে শাকবাড়িয়া  নদীতে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের কাটকাটা, কাটমারচর, কাশির হাটখোলা, হরিয়ারপুর গাতির ঘেরী এলাকা দিয়ে নদীর পানি উপচে চিংড়ি ঘেরে প্রবেশ করছে। স্থানীয়দের সাথে নিয়ে আমরা পানি আটকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু জোয়ারের পানি অস্বাভিক বৃদ্ধি পাওয়ায় গাতির ঘেরী নামক স্থান থেকে পানি লোকালয় প্রবেশ করে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়। ‍এতে মাছের ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। 
 
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম বাহারুল ইসলাম জানান, গত বছরের ২০ মে আম্পানের আঘাতে কয়রা সদর  ইউনিয়নের ২নং কয়রা, গোবরা ঘাটাখালী, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে যায়। অম্পানের সে ক্ষতি মানুষ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরপর অবার প্লাবিত হলে কয়রা ইউনিয়ন মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। তিনি কয়রাবাসীকে রক্ষা করতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
 
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান জানান, দক্ষিণ অঞ্চলের নদ-নদীতে পানির স্বাভাবিক মাত্রা থাকে ৩ মিটারের কাছাকাছি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে আরো ২ থেকে ৩ ফুট বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। উপজেলার কয়রা সদর, দক্ষিণ বেদকাশি, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ৪টি পয়েন্ট ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা জিওব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, আগামী দুদিনে পানির উচ্চতা আরো বাড়তে পারে। এর সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হলে পানি আটকানো সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা ২০ হাজার জিওব্যাগ ও ৩০ হাজার  সিনটেথিক ব্যাগ মজুদ রেখেছি। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় জিওব্যাগ দিয়ে বাঁধ রক্ষার কাজ করানো হচ্ছে৷
 
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আক্তারুজ্জামান বাবু ভেঙে যাওয়া বেঁড়িবাধের স্থানগুলো পরির্দশনকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সার্বিক সহযোগিতায় আশ্বাস এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দ্রুত বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের কথা ভাবেন। এ অঞ্চলে টেকসই বেঁড়িবাধ হবে, তবে তা সময়ের ব্যাপার। মেরামতের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
 
তিনি আরো বলেন, দুর্যোগের খবর পাওয়ার সাথে সাথে দুদিন যাবৎ আমি কয়রায় অবস্থান করছি। ২৫ মে থেকে আমি নিজেই কয়রার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাউবোর স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে গিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছি। আজও কয়রায় অবস্থান করছি, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কয়রাবাসীর সাথে আছি। ভেঙে যাওয়া স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতির পরিমাণ যাতে কম হয় সেজন্য জিওব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগসহ বেড়িবাঁধ টেকানো এবং জনসাধারণের জানমাল রক্ষার্থে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। 
 
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

এমএসএম / জামান

ঈশ্বরদীতে ট্রেনে কেটে এক ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যু

মসজিদের খতিব–ইমাম–মুয়াজ্জিনদের সুরক্ষায় নীতিমালা চূড়ান্তঃ কুমিল্লায় ধর্ম উপদেষ্টা

মেহেরপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনঃবিবেচনার দাবিতে গণজমায়েত

চর ওয়াশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর করেন জাতীয় বীর আমান উল্লাহ আমান

গাজীপুরের রাজনীতিতে ঝড় তুললেন ইরাদ সিদ্দিকী

ধুনটে বালুবাহী দুই ট্রাকের চাপে অটোরিকশাচালক নিহত

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের হীরক জয়ন্তী পালন

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিলমারী মডেল থানার এসআই আসাদুজ্জামানের আকস্মিক মৃত্যু

কোম্পানীগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও সহায়তা প্রদান

দুমকিতে সশস্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দুমকিতে গাভী লুটপাটের অভিযোগ 'মিথ্যা', দাবি করে সংবাদ সম্মেলন

ভূমিকম্পকে আল্লাহর সতর্কবার্তা হিসেবে দেখার আহ্বান – মাওলানা আব্দুল ওয়াহাব (বড় হুজুর, কাছাইট)

সিংগাইরে জমি নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা